|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা
ডোবার আশঙ্কা |
রুদ্ধ নিকাশি |
কাজল গুপ্ত |
জল থাকবে কতক্ষণ? প্রশ্ন নিত্যযাত্রী ও কর্মচারীদের। জল কোথায় ফেলা হবে? প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। এর মাঝেই আটকে রয়েছে পাঁচ নম্বর সেক্টরের নিকাশির ভবিষ্যৎ। এ বার জল নামলেও, আবার বৃষ্টি হলে জলবন্দি হওয়ার আশঙ্কায় দিন গুনছেন এখানকার কর্মচারী ও নিত্যযাত্রীরা।
এলাকার দায়িত্বে থাকা নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, জল নামার জন্য এক দিকে ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল ও অন্য দিকে ভেড়িগুলি রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল বন্ধ। ফলে জল সরানোর ব্যবস্থা থাকলেও সে ভাবে কার্যকরী হচ্ছে না। যদিও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, একটি প্রকল্পের কাজের জন্য খাল বন্ধ আছে। বর্ষার কথা মাথায় রেখে দ্রুত তা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। |
|
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জেরে আটকে আছে এই খালের একটি অংশ। যদিও এর আগে দীর্ঘ দিন দু’টি বক্সব্রিজ তৈরির জন্যও খাল বন্ধ ছিল। পাম্প বসিয়ে জল সরানোর কথা ছিল। কিন্তু সময় মতো তা হয়নি বলে অভিযোগ নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষের।
এ বার বর্ষার শুরুতেই সেক্টর ফাইভের কলেজ মোড়, ইনফিনিটি, এসডিএফ, উইপ্রো, টেকনোপলিস মোড়-সহ নানা জায়গায় জল জমে যায়। চরম দুর্ভোগে পড়েন তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কর্মীরা। গড়িয়া থেকে এখানে কাজ করতে আসেন শৌভিক রায়। তিনি বলেন, “এই এলাকায় জল জমার সমস্যা আছে। তবে এ বার যেন ভোগান্তি বেশি হল।” অশোকনগর থেকে কর্মসূত্রে পাঁচ নম্বর সেক্টরে যাতায়াত করেন গৌতম বসু।
তিনি বলেন, “বৃষ্টি হলে বিধাননগরে অটোর ভাড়া বাড়তে থাকে। দীর্ঘ ক্ষণ জল জমে থাকলে ভীষণ সমস্যা।” পাঁচ নম্বর সেক্টরের এক প্রান্তের জমা জল ১ নম্বর ওয়ার্ড ও সংলগ্ন ভেড়িতে ফেলা হয়। বর্ষায় এমনিতেই ভেড়িগুলি ভরে গিয়েছে। সেক্টর ফাইভের জমা জল সেখানে ফেলায় ভেড়ি এলাকার বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জল ঢুকে মাছ ভেসে যাচ্ছে। বিধাননগর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের চামেলি নস্কর বলেন, “এ ভাবে জল ভেড়িতে ফেলতে থাকলে ভেড়ির পাশের গ্রামের বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েন। অনেক বার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।” |
|
এ দিকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রে খবর, এ মাসেই বন্ধ খাল খুলে দেওয়া হবে। এর মধ্যে বৃষ্টি হলে জমা জল সরানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটি শক্তিশালী পাম্প খারাপ হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। পরে তা মেরামত করা হয়েছিল। নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের মতে, স্থায়ী সমাধানের জন্য পরিকল্পনা প্রয়োজন। ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল ও কেষ্টপুর খালের সংস্কার না করলে সমস্যা মিটবে না। এই নিয়ে একটি প্রস্তাবও নগরোন্নয়ন দফতরকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন মেট্রোর কাজ চলায় সে পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা বিশেষ এগোয়নি। নবদিগন্তের এগজিকিউটিভ অফিসার বদ্রিনারায়ণ কর বলেন, “পাঁচ নম্বর সেক্টরের জল এক দিকে ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল অন্য দিকে ভেড়িতে ফেলা হয়। খাল বন্ধ থাকায় জল সরাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ অবশ্য ব্যবস্থা নিয়েছেন। খুব বেশি বৃষ্টি হলে তবেই ভেড়িতে ফেলা হয়। স্থায়ী সমাধানের জন্য অবিলম্বে খাল সংস্কার করা প্রয়োজন।”
নগরোন্নয়ন দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস রায় বলেন, “বাইপাস কানেক্টর থেকে নয়াপট্টি পর্যন্ত ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলের সংস্কারের পরিকল্পনা আছে। কিন্তু দু’বছর বক্সব্রিজ ও এখন মেট্রোর কাজের জেরে খাল বন্ধ আছে। তবে জমা জল সরাতে আপৎকালীন ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাজ শেষ হলেই সংস্কারের কাজ করা হবে।”
|
ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ |
|
|
|
|
|