|
|
|
|
নাজেহাল বাসিন্দারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা• ফালাকাটা |
দাঁতালের তাণ্ডবে নাজেহাল হয়ে পড়েছেন দলগাঁ এবং সোনাখালি জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। গত দু’দিনে দুটি দাঁতাল দলবল নিয়ে দলগাঁ জঙ্গল লাগোয়া তাসাটি চা বাগানের ৩০টি শ্রমিক আবাসন ভেঙে চাল-গম খেয়েছে। সোনাখালি জঙ্গল লাগোয়া একটি প্রাথমিক স্কুলে টানা ৩ দিন হামলা চালায় দুটি হাতি। পর পর বুনো হাতির হামলার ঘটনায় ওই এলাকার গ্রামগুলিতে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। হাতির হামলা রোধে ব্যবস্থা এবং ভাঙা ঘর মেরামতির দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না-হলে আন্দোলনে নামার হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গের বনপাল মণীন্দ্রচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “হাতির হামলা রোধ করতে নিয়মিত নজরদারি চলছে। তবে চা বাগানের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোনও নিয়ম নেই।” বন দফতর সূত্রে জানা গেছে, তাসাটি চা বাগান সংলগ্ন দলগাঁ জঙ্গলের একটি দাঁতাল সঙ্গিনী নিয়ে বুধবার ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যের পর বাড়িলাইন, মিশন লাইন, হাটখোলা লাইনে খাবারের খোঁজে হানা দেয়। ওই সমস্ত শ্রমিক বস্তিতে বিদ্যুৎ নেই। অন্ধকারে বর্ষার রাতে হাতি বার হলে দিশাহারা শ্রমিকেরা পরিবার নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালান। বেশ কয়েকজন পড়ে গিয়ে জখম হন। মঙ্গলবারই শ্রমিকদের রেশন দেওয়া হয়। রেশনে পাওয়া চাল গম সকলের ঘরে মজুত ছিল। ওই চাল, গমের লোভেই হাতি দুটি একের পর এক শ্রমিক আবাস ভেঙে তছনছ করে বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের বক্তব্য, জঙ্গলে পর্যাপ্ত খাবার না থাকায় হাতিরা চা বাগানে হানা দিচ্ছে। বাগান কর্তৃপক্ষ ভাঙা বাড়ি ঘর মেরামতি করছেন না। ফলে বর্ষায় অনেককে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। চা বাগান মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার সচিব অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, “এ বছর হাতির হানায় প্রচুর বাগানের ক্ষতি হয়েছে। একের পর এক চা বাগানের ঘর ভাঙলেও বন দফতর কোনও ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না। সম্প্রতি তোর্সা চা বাগানের ৬০০ ফুট এলাকা জুড়ে পানীয় জলের বড় পাইপ ভেঙে ফেলে বুনো হাতির পাল। বন দফতরে ক্ষতিপূরণের আবেদন করেছি।” এদিকে গত মঙ্গলবার স্কুলের ঘর ভেঙে ১১ বস্তা চাল খেয়ে চলে যায় এক দাঁতাল এবং সেটির সঙ্গিনী। গয়েরকাটার গিল্ড মিশন প্রাথমিক স্কুলের শ্রেণিকক্ষের দরজা ভেঙে ফেলছে দুটি হাতি। চাল না পেয়ে গ্রামে হানা দেওয়ার ঘটনা ঘটছে সেখানে। গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা আশুতোষ গোস্বামী বলেন, “হাতি হানার ভয়ে রাতে দু চোখের পাতা এক করতে পারছি না।” |
|
|
|
|
|