সিঙ্গুরের জমি ফেরাতে আরও গতি চান পার্থ
সিঙ্গুরে ‘অনিচ্ছুক’ চাষিদের জমি ফেরত দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার যে দ্রুততায় কাজ করতে চাইছে, তা হচ্ছে না বলে মনে করছেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য তিনি চান, কাজে আরও গতি আসুক।
শুক্রবার চুঁচুড়ায় হুগলির জেলাশাসকের দফতরে সিঙ্গুরের জন্য গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসে জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের কাছে সিঙ্গুরের কাজের গতি নিয়ে কার্যত উষ্মা প্রকাশ করেন পার্থবাবু। যিনি ওই কমিটির চেয়ারম্যানও। যদিও পার্থবাবু এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। সন্ধ্যায় বৈঠক সেরে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আদালতে সিঙ্গুর নিয়ে মামলা চলছে। বিচারাধীন বিষয়। এ ব্যাপারে কোনও কথা বলতে পারব না।” পরে অবশ্য তাঁর সংযোজন, “একটা কথাই বলতে পারি, সিঙ্গুরের চাষিরা সুবিচার পাবেন।”
এ দিনের বৈঠকে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের পদস্থ কর্তারাও হাজির ছিলেন। ছিলেন সিঙ্গুরের কৃষিজমি রক্ষা কমিটির নেতারাও। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকের শুরুতেই পার্থবাবু এ যাবৎ সিঙ্গুরে কী কাজ হয়েছে, তা খুঁটিয়ে জানতে চান। সব কিছু শোনার পরে তিনি প্রশাসনের কর্তাদের স্পষ্টই জানিয়ে দেন, যা কাজ হয়েছে, তাতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছনো যায়নি। কাজ আরও দ্রুত করার নির্দেশ দেন তিনি। এ নিয়ে কিছু পরামর্শও দেন।
বস্তুত, সিঙ্গুরে জমির সমীক্ষা বা অন্যান্য কাজ যে রাজ্য সরকার দ্রুত সেরে রাখতে চাইছে, পর পর কয়েকটি পদক্ষেপেই তা স্পষ্ট। এর আগে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির বৈঠক হয় গত শনিবার। ওই রাতেই জমি ফেরত দেওয়ার সরকাারি বিজপ্তি এবং জমির জন্য চাষিদের আবেদনের বয়ান সিঙ্গুরের ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের দিয়ে দেওয়া হয়। রবিবার, সরকারি ছুটির দিন থাকা সত্ত্বেও পুরোমাত্রায় জমি ফেরত দেওয়ার প্রশাসনিক কাজ চলে। আবেদনপত্র বিলি ও জমা নেওয়া শুরু হয়ে যায়।
এ দিনও চুঁচুড়ায় যখন ওই বৈঠক হচ্ছে, তখন সিঙ্গুরে জমি ফেরত দেওয়ার প্রশাসনিক কাজ চলছে। সিংহেরভেড়ি এবং গোপালনগরের পরে এ দিন খাসেরভেড়ি, বেড়াবেড়ি এবং বাজেমিলিয়া এই তিনটি মৌজাও শিল্পোন্নয়ন নিগমের থেকে হস্তান্তরিত হয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে। জমি ফেরত চেয়ে আবেদন করেন ৫৮ জন নতুন ‘অনিচ্ছুক’ চাষি। এই নিয়ে আবেদনকারীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৬৭।
রোজ কাজ হলেও শিল্পমন্ত্রী মনে করছেন তা কাঙ্ক্ষিত গতিতে হচ্ছে না। সিঙ্গুর ব্লক অফিসে কর্মীর অভাব রয়েছে। তা ছাড়া, কাজের ব্যাপকতা আন্দাজ করে আলিপুর সার্ভে অফিস থেকে জমি জরিপের কাজে দক্ষ ৫০ জনকে জরুরি ভিত্তিতে নিয়ে এসে ক্যাম্প করে সিঙ্গুরে রাখা হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের পরে রাজ্য সরকার চেয়েছিল কাজ আরও দ্রুত হোক। কিন্তু সরকারের সেই চাহিদার সঙ্গে বাস্তবের যে ফারাক রয়েছে, এ দিন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে সেটাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী।
রাজ্য সরকার যে দ্রুততায় কাজ চাইছে, তা হচ্ছে না কেন? জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “জমি সংক্রান্ত কাজ অতি জটিল। প্রতিটি পর্যায়ে কাগজপত্র সঠিক ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা জরুরি। এই সংক্রান্ত ভুল এড়াতেই কিছুটা সময় লেগে যাচ্ছে। তা-ও সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, দ্রুত সেই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।”
Previous Story South Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.