|
|
|
|
বিজেপিকে দ্বিচারী বলল কংগ্রেস |
অবস্থান না জানিয়েই আন্নাকে ইন্ধন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
আন্না হাজারে ও তাঁর সঙ্গীদের তৈরি ‘জনলোকপাল’ বিলের খসড়ার সঙ্গে অনেক বিষয়েই একমত নয় বিজেপি। তবু কংগ্রেস-বিরোধিতার জন্য আন্নাকে সঙ্গে রাখারও প্রয়োজন রয়েছে তাদের। এই দ্বিমুখী কৌশলের অঙ্গ হিসেবেই বিজেপি এখনও লোকপাল বিল নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছে না। তাদের এই ‘দ্বিচারিতা’র মুখোশ খুলে দিতেই সর্বদলীয় বৈঠকের আগে বিজেপি-কে আক্রমণের পথে নামল কংগ্রেস।
দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আজ বলেন, “জয়ললিতা ও এনডিএ-র সহযোগী অকালি নেতারাও লোকপাল বিল নিয়ে তাঁদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু সংসদে অস্থিরতা তৈরি করতে বিজেপি-ই শুধু তাদের অবস্থান খোলসা করছে না। অবস্থান জানিয়েছে সরকারও। সরকারের মতই কংগ্রেসের মত। বিজেপি তবু বলছে, সরকার না বললে তারা অবস্থান জানাবে না। এটা শিশুসুলভ অজুহাত। বিজেপি আসলে সুযোগসন্ধানী, দ্বিচারী। লোকপাল নিয়ে রাজনীতি করছে।”
কংগ্রেসের চাপের মুখে বিজেপি-র মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ আজ জানিয়েছেন, “শীঘ্রই লোকপাল নিয়ে আমাদের অবস্থান প্রকাশ্যে আনা হবে। আগামিকাল এনডিএর বৈঠকের পর স্থির হবে, সরকারের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে আমরা যাব কি না। কারণ, সরকারই এখনও লোকপাল নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি। মন্ত্রিসভা কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি, প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর করা কোনও বিলও আমাদের সামনে নেই।”
দীর্ঘ টালবাহানার পর সম্ভবত আগামিকালই আন্না হাজারের সঙ্গে দেখা করতে পারেন সনিয়া গাঁধী। কিন্তু তার আগে আন্নাকে গুরুত্ব দিতে আজ লালকৃষ্ণ আডবাণীর নেতৃত্বে বিজেপি-র ১১ জন শীর্ষ নেতা আন্নার সঙ্গে দলের সদর দফতরে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে অবশ্য ‘টিম-আন্না’-কে বিজেপি নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের তৈরি ‘জনলোকপাল’ বিলে পূর্ণ সম্মতি নেই দলের। বিচার ব্যবস্থাকে লোকপালের বাইরে রাখার পক্ষপাতী বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর বিষয়টি নিয়ে মতান্তর রয়েছে দলেই। তা ছাড়া, সংসদের ভিতরে সাংসদদের অধিকার যাতে খর্ব না হয় তা-ও নিশ্চিত করতে চায় বিজেপি। আর এই বিষয়ে আন্নার সঙ্গে মতভেদ থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সঙ্গে রাখার দায় রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের।
তাঁরা চাইছেন, সরকার আগে মন্ত্রিসভা থেকে বিলের খসড়া চূড়ান্ত করুক। তার পরে বিজেপি নিজের তাস খুলবে। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস যে ভাবে বিজেপি-কে ফাঁদে ফেলতে চাইছে, তার থেকে নিষ্কৃতি পাবে প্রধান বিরোধী দল। সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে সরকার আসলে আন্নার আক্রমণের অভিমুখ বদলে দিতে চাইছে। কিন্তু বিজেপি চাইছে, আন্নাদের নয়, সরকারের বিলই সংসদে পেশ হোক। তা হলেই আন্না ফের কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে আন্দোলনে নামতে পারবেন। আর বিজেপি-ও তার রাজনৈতিক ফসল ঘরে তুলতে পারবে।
এই পরিস্থিতিতেই বিজেপি-র মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ আজ সর্বদলীয় বৈঠক প্রসঙ্গে বলেন, “সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের আশঙ্কা রয়েছে।” বস্তুত ওই বৈঠকে যোগ দেওয়া নিয়ে মতান্তর রয়েছে বিজেপি-তে। শরিক জেডি(ইউ)-ও এই বৈঠকে যাওয়ার পক্ষপাতী নয়। কিন্তু বিজেপি-র একটি অংশ মনে করে, সর্বদলীয় বৈঠকে গিয়েই বিরোধীদের এত দিন অবজ্ঞা করে চলার প্রতিবাদ জানানো উচিত।
তবে কংগ্রেসের কাছে এটা স্পষ্ট, সর্বদলীয় বৈঠক নিয়ে বিজেপি যে কৌশলই নিক, আজ নয়তো কাল লোকপাল নিয়ে অবস্থান জানাতেই হবে তাদের। না হলে তারাই একঘরে হয়ে পড়বে। |
|
|
|
|
|