|
|
|
|
বাঁকুড়া মোড় |
সিগন্যাল পোস্ট, কালভার্ট ভেঙে বিপজ্জনক চলাচল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
একে রাস্তা বেহাল। বৃষ্টিতে সেই অবস্থা খারাপ হয়েছে বহুগুণ। তার উপরে বিপজ্জনক ভাবে ভেঙে পড়ে কালভার্ট। গত এক মাস ধরে হাল এমনই। সিগন্যাল পোস্ট ভেঙে পড়ে গিয়েছে কবেই। কংক্রিটের স্তম্ভটি কিন্তু রয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে বাঁকুড়া মোড় দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার অর্থ, বিপদের ঝুঁকি মাথায় নেওয়া। যে কোনও মুহূর্তেই ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। পূর্ত দফতর অবশ্য শীঘ্রই রাস্তা এবং কালভার্ট সারানোর আশ্বাস দিয়েছে।
দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়া যাওয়ার ওই রাস্তার গুরুত্ব আরও বেড়েছে গত কয়েক বছরে। এর অন্যতম কারণ দুর্গাপুরের অগ্রগতি। দুর্গাপুরকে কেন্দ্র করেই বাঁকুড়ার একটি বিস্তীর্ণ অংশের জনজীবন আবর্তিত হয়। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
বড়জোড়া এলাকায় গড়ে উঠেছে শিল্পতালুক। বেড়েছে বড় ও ভারী লরির চলাচল। অন্য দিকে, দুর্গাপুর একটি আধুনিক বাজারও বটে। তাছাড়া ট্রেন ধরতেও দুর্গাপুর স্টেশন ব্যবহার করেন বাঁকুড়ার অনেকেই।
আগেই এই রাস্তা ছিল উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান একটি রাস্তা। তার উপরে এই রাস্তায় যানবাহনের চলাচল আগের থেকে বেড়েছে বহুগুণ।
গোদের উপরে বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঁকুড়া মোড়ের ভাঙা কালভার্ট আর বিকল সিগন্যালিং ব্যবস্থা। রাস্তার মূল অংশে কালভার্টটির এক দিক ভেঙে যাওয়ায় রাস্তা সেখানে সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে। দুরন্ত গতিতে আসা কোনও গাড়ি অন্য গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে হঠাৎ কালভার্টের ওই ভাঙা অংশে পড়ে গিয়ে বিপদ ঘটাতে পারে। দিনে তবু নজরে আসে। রাতের অন্ধকারে ঝুঁকি আরও বেশি। সম্প্রতি এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে বিধাননগরের রবীন্দ্রনাথ ভাদুড়ির। তিনি বলেন, “ছেলে বাঁকুড়ার একটি মিশন স্কুলে পড়ে। সম্প্রতি ওকে দেখতে গিয়েছিলাম গাড়ি নিয়ে। বাঁকুড়া মোড়ের কাছে একটি গাড়ি ওভারটেক করতে যাই। হঠাৎ একটি ভাঙা কালভার্টের সামনে পড়ে যাই। জোরে ব্রেক কষে বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছি।”
যানজট কমাতে কয়েক বছর আগে বাঁকুড়া মোড়ে একটি সিগন্যাল পোস্ট চালু করা হয়েছিল। প্রথম প্রথম সেখানে নিয়মিত ট্রাফিক পুলিশ থাকতেন। কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। রাতের অন্ধকারে কোনও ভারী গাড়ি সিগন্যাল পোস্টে ধাক্কা মেরেছিল। কংক্রিটের ভিত থেকে উপড়ে পড়ে যায় ধাতব সিগন্যাল পোস্ট। রাস্তা সাফ করতে সেটিকে এক পাশে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়। কিন্তু আজও রয়ে গিয়েছে ফুট চারেকের উঁচু কংক্রিটের খুঁটি। যাতায়াতের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেটি। কংক্রিটের ওই ভাঙা স্তম্ভটি সরিয়ে নিলে রাস্তায় যাতায়াতের অংশ বাড়ে। তাতে গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রেও সুবিধা হয়।
বড়জোড়ার একটি কারখানায় চাকরি করেন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের কাশীনাথ বন্ধু। তিনি বলেন, “সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরি। ব্যারাজ পেরিয়ে বাঁকুড়া মোড়ের দিকে এগোতেই যানবাহনের গতি কমতে থাকে। বাঁকুড়া মোড় না পেরনো পর্যন্ত কখন বাড়ি ফিরব কোনও ভরসা নেই।”
নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, দিনের পর দিন বাঁকুড়া মোড়ের পরিস্থিতি এমনই। অথচ প্রশাসন সম্পূর্ণ নির্বিকার। প্রতি দিনই দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের যাতায়াত করতে হয়। পূর্ত দফতরের দাবি, এই রাস্তা যখন তৈরি হয়েছিল, তখন এত যানবাহনের কথা ভেবে তৈরি করা হয়নি। ফলে রাস্তার উপরে অত্যধিক চাপ পড়ছে। আর তাই তৈরি হচ্ছে খানাখন্দ। দফতরের স্থানীয় অফিসে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, রাস্তা মেরামতি এবং বাঁকুড়া মোড়ের হাল ফেরাতে কিছু পরিকল্পনা হয়েছে। দফতরের সহকারী বাস্তুকার নাজির আহমেদ জানান, বিভিন্ন পরিকল্পনা ধাপে ধাপে কার্যকর করা হবে।
তত দিন অবশ্য প্রাণ হাতে করেই যাতায়াত করতে হবে মানুষকে। |
|
|
|
|
|