বর্ষার মরসুমে মেয়র ইস্তফা দিলেও শহরের নাগরিক পরিষেবায় যাতে বিঘ্ন না-ঘটে, সে জন্য বরো অফিসগুলিতে গিয়ে অফিসার-কর্মীদের উদ্দীপ্ত করার চেষ্টা করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ৩টি বরো অফিসে যান গৌতমবাবু। তিনি অফিসার-কর্মীদের কাছে জানতে চান, তাঁদের কাজ করতে দৈনন্দিন কী ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। সমস্যার কথা শুনে সমাধানের জন্য সঙ্গে সঙ্গেই পুর কমিশনার পাশাং নরবু ভুটিয়া, সচিব কাজল সাহাকে নির্দেশ দেন। তার পরেই মন্ত্রী জানিয়ে দেন, বর্ষার সময়ে নাগরিকদের নানা ধরনের দুর্ভোগ হয়। সে জন্য অতি মাত্রায় তৎপরতা জরুরি। তিনি জানান, নাগরিকদের পরিষেবা পেতে হয়রান হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
বস্তুত, পুরবোর্ড পুনর্গঠনের জন্য মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত ইস্তফা দিতেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী পুরসভা সচল রাখতে উদ্যোগী হন। দু’দিন আগে সকালে আচমকা পুরভবনে গিয়ে সব বিভাগ ও একটি বরো অফিস পরিদর্শন করেন। এ দিন দ্বিতীয় দফায় অন্য তিনটি বরো অফিসে গিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর তৎপরতায় স্বস্তিতে পুরসভার অফিসার-কর্মীরাও। তাঁদের একাংশের কথায়, “মন্ত্রী হলেও উনি (গৌতমবাবু) এখনও আমাদের পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। নাগরিক পরিষেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আমাদের কাজের ক্ষেত্রে কী অসুবিধে হচ্ছে সেটাও খোঁজ নিচ্ছেন। যা এতদিন কেউ প্রায় নেননি। এখন অসুবিধেগুলি তাড়াতাড়ি দূর হবে বলে আশা করছি।”
কী ধরনের অসুবিধে দেখলেন মন্ত্রী? তিনি দেখলেন, বরো অফিসগুলির দফতরের চেয়ারগুলির একাংশ ফাঁকা। কারণ, এক জন অফিসারকে দু’টি অফিসে কাজ সামাল দিতে হচ্ছে। কোনও বরো অফিসে গিয়ে জানতে পারলেন, মহিলা কর্মীদের জন্য পৃথক কোনও শৌচাগার নেই। কর সংগ্রহের কাজে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি না গিয়ে অফিসে বসেই বাসিন্দাদের কাছ থেকে কর নেন বলেও অভিযোগ। ফিল্ডে না গিয়ে সাফাই এবং বিদ্যুৎ বিভাগে চুক্তির ভিত্তিতে থাকা কর্মীদের একাংশ বেতন নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। দফতরে কাউকে না-পেলেই তিনি ফিল্ডে কাজ করতে গিয়েছেন বলা হচ্ছে। আদৌ ফিল্ডে গিয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন। ফিল্ডে কাজের বিষয়টি আলাদা করে নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা করতে বলেন সঙ্গে থাকা পুর কমিশনারকে। গৌতমবাবু বলেন, “পুরসভার ৩ এবং ৪ নম্বরে বরো অফিসার নেই। অন্য আধিকারিককে কাজ সামলাতে হচ্ছে। বরো অফিসগুলিতে কর্মীর সংখ্যা কিছু কম রয়েছে। যাঁরা আছেন তাঁদের সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে হবে। সুসংহত বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে ৭ জন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন। ওই প্রকল্প ছাড়াও তাঁদের পুরসভার অন্যান্য প্রকল্পের কাজ তদারকির দায়িত্ব দিলে ভাল হয়।” |