|
|
|
|
কাল ফাইনালে শারাপোভা-কিতোভা |
|
ট্রফিটা নাদালের হাতেই থাকা উচিত
জয়দীপ মুখোপাধ্যায় • লন্ডন |
|
নাদাল বনাম মারের সেমিফাইনাল ম্যাচটা নিয়ে দেখছি গোটা দেশটা উত্তাল। কাল ম্যাচটার সময় গোটা ব্রিটেন যে অ্যান্ডি মারের জন্য প্রার্থনা করবে, তা নিয়েও কোনওরকম সন্দেহের ‘স’ থাকতে পারে না। দুর্দান্ত টেনিস খেলছে ঘরের ছেলে মারে, ওকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেই পারে ইংরেজরা। এতেও সন্দেহ নেই, হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচই হবে মারে আর নাদালের। একটা দুটো পয়েন্টে এ দিক-ও দিক হওয়া বা কারও একটা ছোট্ট ভুলে ম্যাচ ঘুরে যাওয়ার মতো ঘটনা না ঘটলেই অবাক হব। তবু বলব, এই ম্যাচে তো বটেই, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যও আমার বাজি নাদাল। ট্রফি ওরই হাতে থাকা উচিত। যেমন মেয়েদের সিঙ্গলসে শারাপোভা ট্রফি না পেলে অবাক হব। আজ সেন্টার কোর্টে ওকে যে টেনিসটা খেলতে দেখলাম, এক কথায় খুঁতহীন।
নাদালের কথায় আসি। গ্র্যান্ডস্লাম জেতার রহস্যটাই হল ঠিক সময়ে আস্তে আস্তে ‘পিক’ করা। নাদালকে দেখে মনে হচ্ছে, একেবারে ঠিক সময়ে ‘পিক’ করছে। মার্ডি ফিশ ঘাসের কোর্টে একেবারেই হেলাফেলার প্লেয়ার নয়। কিন্তু নাদালের সামনে পারল না। নাদাল-ফেডেরার যুদ্ধ আর উইম্বলডনে দেখা যাবে না বলে বহু টেনিসপ্রেমীকে হা-হুতাশ করতে দেখছি। আমার কথা হল, টেনিসের মতো ব্যক্তিগত খেলায় ‘রাইভ্যালরি’ ব্যাপারটা আসবে, যাবে। তা বর্গ-ম্যাকেনরোই হোক বা সাম্প্রাস-আগাসি। |
|
দুর্ভেদ্য নাদাল ও অপ্রতিরোধ্য শারাপোভা। |
সাম্প্রতিকতম অবশ্যই ফেডেরার-নাদাল। এখন ছেলেদের টেনিসে প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা এত উনিশ-বিশ যে সেরা দুইয়েরর মধ্যে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কম। আবার ফেডেরার-নাদাল যুদ্ধ কোনও গ্র্যান্ডস্লামে দেখব কি না জানি না, তবে ফেডেরারকে যা দেখলাম, মোটেই বলব না ফুরিয়ে গিয়েছে। বরং অনেক বেশি ফিট লাগল ওকে। সঙ্গার বিরুদ্ধে ম্যাচটা দুটো সেট এগিয়েও তা হলে কেন হারল? একটাই ব্যাখ্যা। কোনও কোনও দিন এক একজন যে এমন অবিশ্বাস্য টেনিস খেলতে পারে, সেটা সঙ্গাকে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। শেষ তিনটে সেটে স্বপ্নের টেনিস খেলছিল ও, সেখানে ফেডেরারের স্রেফ কিচ্ছু করার ছিল না। পরের বার উইম্বলডনে ফেডেরার যা-ই করুক, লন্ডন অলিম্পিক হবে ঘাসের কোর্টে। সব পাওয়া হয়ে গেলেও অলিম্পিক সোনাটা এখনও নেই ওর। আমি নিশ্চিত, সেটার জন্য ঝাঁপাবেই।
মেয়েদের ফাইনালের কথায় আসি। যে মেয়েটা ১৭ বছর বয়সে উইম্বলডন জিতেছিল, সাত বছর আগের সেই শারাপোভা আর আজকের শারাপোভা এক নয়। এখন ও অনেক পরিণত। অনেকটা পুরনো মদের মতো, যত সময় যাচ্ছে, তত খেলা খুলছে। মিডিয়া চব্বিশ ঘণ্টাই ওর পিছনে ছুটছে, এই পরিস্থিতিতে একটাও সেট না খুইয়ে ফাইনালে চলে গেল প্রায় খুঁতহীন টেনিস খেলে। জার্মানির মেয়ে সাবিনা লিসিকিকে ‘নতুন স্টেফি’ বলা হচ্ছিল, সেই মেয়েকে উড়িয়ে দিল ৬-৪, ৬-৩। পেত্রা কিতোভা আবার ৬-১, ৩-৬, ৬-২ হারাল আজারেঙ্কোকে। একটা ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে। ও বাঁ-হাতি, মেয়েদের সার্কিটে বাঁ হাতি তেমন বেশি নেই। ঘাসের কোর্টে ও যে সার্ভিসটা করছে, সেটা স্লাইস করে কোর্টের এমন জায়গায় পড়ছে, ডান হাতিদের ফেরাতে অসুবিধে হচ্ছে। এটা শারাপোভাকে মাথায় রাখতে হবে। তবু বলব, যে টেনিসটা ও খেলছে, ট্রফি জেতাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা মনে হচ্ছে। |
|
|
|
|
|