|
|
|
|
রাজ্যে গঙ্গার দূষণ বেশি, রুখতে বাড়তি অর্থ দাবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান হয়েছে। সেই প্ল্যানের দু’টি পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিতে গড়ে তোলা হয়েছে পরিকাঠামোও। কিন্তু অর্থের অভাবে সেই পরিকাঠামো চালু রাখা বা রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে না। তা কার্যকর রাখার জন্য আরও বেশি অর্থের দরকার বলে রাজ্য সরকারের দাবি। গঙ্গা-দূষণ রোধে কেন্দ্রের কাছে তাই আরও বেশি অর্থ চায় তারা। এ বার ‘ন্যাশনাল গঙ্গা রিভার বেসিন অথরিটি’র কাছে মোট খরচের ৯০ ভাগ টাকা দাবি করবে রাজ্য। এখন রাজ্য পায় ৭০ শতাংশ টাকা।
আগামী ৫ জুলাই কেন্দ্রীয় যোজনা কমিশনের বৈঠক হবে কলকাতায়। সেই সময় অন্যান্য বিষয়ে আলোচনার মধ্যেই গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান সংক্রান্ত প্রায় ২০ দফা সুপারিশপত্র জমা দেওয়া হবে বলে রাজ্যের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত বৃহস্পতিবার মহাকরণে জানিয়েছেন।
গঙ্গা-দূষণ রোধ প্রকল্পের সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের অগ্রগতি নিয়ে এ দিন মহাকরণে আলোচনা হয়। বৈঠকে পরিবেশ ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীরা, কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রতিনিধি ছাড়াও কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ, সেচ-সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নদী-বিশেষজ্ঞেরাও তাঁদের মতামত জানান। সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মন্ত্রী মণীশবাবু।
পরে মণীশবাবু জানান, গঙ্গার শেষ ভাগে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান। তাই সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্যে গঙ্গার দূষণ অপেক্ষাকৃত বেশি। কিন্তু আগের বিভিন্ন দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে পুরসভাগুলির পরিকাঠামো বৃদ্ধির খরচ ধরা ছিল না। তা ছাড়া গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানে ৩০ শতাংশ খরচ রাজ্যকে বহন করতে হচ্ছে। তাই এ বার ‘ন্যাশনাল গঙ্গা রিভার বেসিন অথরিটি’র কাছে মোট খরচের ৯০ ভাগ টাকা দাবি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
পুর এলাকার নিকাশি থেকে কোনও বর্জ্য যাতে সরাসরি গঙ্গায় না-পড়ে, সেই জন্য কিছু কিছু পুরসভায় ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বরাদ্দের মধ্যে সেগুলো চালু রাখার খরচ ধরা নেই। তাই সেই সব ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের বেশ কয়েকটিই বন্ধ হয়ে আছে। সেগুলো ফের চালু করার পাশাপাশি শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লির ব্যবস্থা বাড়ানো, সর্বজনীন শৌচাগারের বন্দোবস্ত, গঙ্গার পলি তোলার ব্যবস্থা ইত্যাদি সুপারিশ যোজনা কমিশনের কাছে করা হবে বলে জানান মণীশবাবু জানান।
গঙ্গা নিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এ দিন একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। তাতে গঙ্গার জলের গুণগত মান উন্নয়নের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের দু’টো পর্যায়ের কাজের পরেও গঙ্গার জলের গুণগত মান উন্নত হয়নি। নদী-বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র এ দিনের বৈঠকে জানান, কলকাতা ও হাওড়া-সহ গঙ্গার দু’পাড়ে যে-পাঁচটি পুরসভার নিকাশি নালা বয়ে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য প্রতিদিন এই নদীতে পড়ছে, তা বন্ধ করতে না-পারলে এর জলের মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। পাড়ের সৌন্দর্যায়ন আর ঘাট বাঁধালেই গঙ্গার মানোন্নয়ন হবে না। গঙ্গার দূষণ রোধ করতে হলে জলের মান উন্নত করতে হবে। সেটাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে এ দিনের বৈঠকে জানান তিনি। |
|
|
|
|
|