মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে তো না-ই, বরং ডিজেল, কেরোসিন ও এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বাড়ায় দীর্ঘ মেয়াদে তার চাপ ক্রমশ কমবে। তেলের দাম বাড়ানোর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের পক্ষে সওয়াল করে দেশবাসীকে এই আশ্বাসই দিয়েছেন যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া। মন্টেকের যুক্তি, ডিজেল, কেরোসিন ও গ্যাস সিলিন্ডারের বর্ধিত দাম প্রকৃতপক্ষে অর্থনীতিতে নগদের বাড়তি জোগান কমাতে সাহায্য করবে। ফলে ধীরে ধীরে কমবে মূল্যবৃদ্ধিও। কয়েক দিন আগেই ডিজেলের দাম লিটারে ৩ টাকা, কেরোসিন ২ টাকা ও রান্নার গ্যাসের দাম সিলিন্ডার পিছু ৫০ টাকা বাড়িয়েছে কেন্দ্র। আবার একই সঙ্গে এক দিকে, পেট্রো পণ্যের উপর আমদানি শুল্কের হার ৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ২.৫ শতাংশ। আর অন্য দিকে, ডিজেলের উপর উৎপাদন শুল্ক লিটারে ৪.৬ টাকা থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ২ টাকা। রাজকোষের প্রভূত ক্ষতি স্বীকার করেও আমজনতার উপর তেলের দাম বাড়ার প্রভাব খানিকটা হাল্কা করতেই অত্যন্ত সচেতন ভাবে এই শুল্ক কমানোর পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে দাবি করেন মন্টেক। প্রসঙ্গত, সরকারি পরিসংখ্যান মাফিক পেট্রোপণ্যের উপর শুল্ক কমানোয় চলতি অর্থবর্ষের বাকি ন’মাসে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যথাক্রমে ২৪ হাজার কোটি ও ১১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে। বিশেষজ্ঞ মহলের অবশ্য আশঙ্কা জ্বালানির দাম বাড়ার দরুন আগামী জুলাইয়ে সার্বিক মুদ্রাস্ফীতির হার দুই অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলবে। গত মে মাসে পাইকারি মূল্য সূচকের ভিত্তিতে হিসেব করা ওই হার ছিল ৯.০৬ শতাংশ।
|
আগামী ১ অগস্ট থেকেই ভারত-জাপান মধ্যে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর হবে। গত ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিয়ন্ত্রণ তুলতে এই চুক্তিতে সই করে দু’টি দেশ। সেই অনুযায়ী, আগামী ১০ বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রায় ৯৪% পণ্য লেনদেনের উপর থেকেই শুল্ক তুলে নেবে ভারত ও জাপান। চুক্তিটিতে জাপান সংসদ অনুমোদন দিয়েছে। এই অবাধ বাণিজ্য চুক্তির ফলে ভারতে আমদানি হওয়া লিথিয়াম ব্যাটারি, ডিজেল ইঞ্জিন, ইস্পাত পণ্য, ডিভিডি প্লেয়ার-সহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিন পণ্য অথবা জাপানের ক্ষেত্রে চা বা বিভিন্ন খাবার বিনা শুল্কে আমদানি করা যাবে। দু’দেশের বাণিজ্যের মধ্যে স্বচ্ছতা আনতেও এই চুক্তি সাহায্য করবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট মহলের। পাশাপাশি, গবেষক, শিক্ষক, অ্যাকাউন্ট্যান্ট-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পেশাদাররা জাপানে গিয়ে কাজের সুযোগও পাবেন। এই চুক্তির মাধ্যমে প্রাথমিক ভাবে ২০১৫ সালের মধ্যে দু’দেশের বাণিজ্য ২,৫০০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও নেওয়া হয়েছে। এর আগে সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে এ ধরনের অবাধ বাণিজ্য চুক্তিতে সই করেছে ভারত।
|
বর্ষা শুরুর পর এক ঝটকায় বেশ কিছুটা নেমে এল খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার। গত ১৮ জুন তা দাঁড়িয়েছে ৭.৭৮%। ঠিক আগের সপ্তাহের ৯.১৩ শতাংশের তুলনায় বেশ কম। আর গত দেড় মাসে সর্বনিম্ন। মূলত সব্জি, আলু, পেঁয়াজ, ডালের দাম কমার জেরেই নেমেছে এই মূল্যবৃদ্ধি সূচক। আগামী দিনে যা আরও কমবে বলে সম্প্রতি আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। কিন্তু আমজনতার স্বস্তি আদৌ কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, সে বিষয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কারণ তাঁদের মতে, কেরোসিন, ডিজেল এবং রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্যবৃদ্ধি এই পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হয়নি। তা ছাড়া, কিছু জায়গায় অতি বর্ষণের জেরে ইতিমধ্যেই বাজার বেশ চড়া।
|
আটটি পরিকাঠামো শিল্পে বৃদ্ধি মে মাসে কমে হয়েছে ৫.৩%। আগের বছরের একই সময়ে তা ছিল ৭.৪%। এই হার বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। তার মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস ও সিমেন্ট উৎপাদন কমেছে। ঢিমে তালে বেড়েছে তেল শোধন ও ইস্পাত শিল্পে। তবে অশোধিত তেল, বিদ্যুৎ, সার এবং কয়লা ক্ষেত্রে বেড়েছে বৃদ্ধির হার। প্রসঙ্গত, সার ও প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্রকেও পরিকাঠামো শিল্পের আওতায় আনা হয়েছে।
|
ব্রিটিশ সংস্থা কেয়ার্ন এনার্জির ভারতীয় শাখা কেয়ার্ন ইন্ডিয়া কিনতে বেদান্ত রিসোর্সেস-কে শর্তসাপেক্ষে সায় দিল কেন্দ্র। কেয়ার্নের ৪০% মালিকানা হস্তান্তরে শেয়ার প্রতি দর ৪০৫ থেকে কমিয়ে ৩৫৫ টাকা করতে এ সপ্তাহেই চুক্তি করে কেয়ার্ন-বেদান্ত। তার জন্যই এই সায়, মত বিশেষজ্ঞদের। শর্ত হিসাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, নয়া কর্ণধারকে রাজস্থানের তেল ক্ষেত্রের জন্য রয়্যালটির ভাগ নিতে হবে ওএনজিসি-র সঙ্গে। এবং সেস খাতে প্রতি টনে দিতে হবে ২৫০০ টাকা। এই সংক্রান্ত সালিশি মামলাও তুলে নিতে হবে কেয়ার্ন ইন্ডিয়াকে।
|
মূলত খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের হাত ধরেই বৃহস্পতিবার ১৫২ পয়েন্ট বাড়ল সেনসেক্স। থামল ১৮,৮৪৫.৮৭ অঙ্কে। গ্রিসের আর্থিক টালমাটাল নিয়ে দুশ্চিন্তা কমাও ইন্ধন জুগিয়েছে উত্থানে। গ্রিক পার্লামেন্ট এ দিনই ব্যয়সঙ্কোচ, নতুন কর বসানো এবং বেসরকারিকরণ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ বিলে অনুমোদন দিয়েছে। |