|
|
|
|
নামেই মেডিক্যাল কলেজ |
আধুনিক যন্ত্র পড়ে, হয় না ডায়ালিসিস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মেডিক্যাল কলেজ বলে কথা। অথচ ডায়ালিসিস পরিষেবাই নেই! ডায়ালিসিসের রোগী এলেই ‘রেফার’ করে দেওয়াই রুটিন এখানে।
সাত বছর আগে মেদিনীপুর জেলা হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত হয়। কিন্তু একটা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যে ধরনের পরিষেবা পাওয়ার কথা, তার অনেক কিছুই মেলে না বলে অভিযোগ রোগী ও তাঁদের পরিজনেদের। ডায়ালিসিস চালু না-হওয়া সেই অভিযোগের তালিকাটাকেই দীর্ঘ করছে। অথচ মেদিনীপুরের মতো এলাকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডায়ালিসিস পরিষেবা থাকা অত্যন্ত জরুরি। বর্ষা শুরু হয়েছে। এ বার সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা বাড়বে। সাপে কাটা রোগীদের একাংশেরও ডায়ালিসিস প্রয়োজন হয়। এ জন্যই বছর দু’য়েক আগে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে তিনটি আধুনিক ডায়ালিসিস মেশিন কেনা হয়েছিল। এ জন্য একটি ঘরও নির্দিষ্ট করা হয়। দু’জন টেকনিশিয়ানও নিয়োগ করা হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ডায়ালিসিস আর চালু হয়নি। কিন্তু কেন?
মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ সুকুমার মাইতির বক্তব্য, “যে মেশিনগুলি রয়েছে, তাতে এক বার ডায়ালিসিস করতে ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ পড়বে। রোগীর পরিজনেদের অনেকের পক্ষেই এই খরচ বহন করা অসম্ভব। অথচ এমন মেশিনও রয়েছে যেখানে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা খরচ পড়ে। আমরা ওই ধরনের মেশিন এখানে আনার বন্দোবস্ত করছি।” মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, দীর্ঘ দিন ধরেই এ নিয়ে স্বাস্থ্যভবনে দরবার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের বিষয়টি জানানোও হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্রেফ আশ্বাসই মিলেছে। কবে নতুন মেশিন আসবে, ডায়ালিসিস পরিষেবা চালু হবে, সে সম্পর্কে তাই সুনির্দিষ্ট কোনও জবাব নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। যদিও অধ্যক্ষের দাবি, “বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখছে স্বাস্থ্য দফতর। বিকল্প মেশিন আনারও বন্দোবস্ত হচ্ছে।” পশ্চিম মেদিনীপুর ‘পিছিয়ে পড়া’ জেলা হিসাবে চিহ্নিত। গরিব মানুষই সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু জেলায় গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। ব্লক হাসপাতালে প্রয়োজনীয় পরিষেবা মেলে না বলে অভিযোগ। বহু রোগী ব্লক-স্তর থেকে ‘রেফার’ হয়ে আসেন মেডিক্যালে। তাই রোগীর চাপ একটু বেশিই। মেডিক্যালে ৫৬০টি শয্যা রয়েছে। কিন্তু গড়ে রোজ রোগী ভর্তি থাকেন প্রায় ৭০০। তাই মেডিক্যালে ভর্তি হলেও অনেকেরই শয্যা মেলে না। মাটিতেই শুয়ে থাকতে হয়। রাজ্যে পালাবদল হয়েছে। নতুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় একের পর এক হাসপাতাল পরিদর্শন করতে শুরু করেছেন। স্বাস্থ্যের ‘হাল’ ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছেন একাধারে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী। জেলার মানুষের আশা, মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই মেদিনীপুর মেডিক্যালের দিকেও এ বার নজর দেবেন। শয্যার সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম মেনে নিয়েই হাসপাতাল সুপার রামনারায়ণ মাইতি বলেন, “আরও ১৫০টি শয্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব কার্যকর হলে আর সমস্যা থাকবে না।” |
|
|
|
|
|