মমতা দেখুন: মেডিক্যাল কলেজ
জায়গা ‘দখল’ করে বসবাস,
ফের অভিযুক্ত এক ডাক্তার
চিত্তরঞ্জন শিশু হাসপাতালের পরে এ বার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। শিশু হাসপাতালে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে সেখানকার এক অ্যানাস্থেটিস্ট ২২ বছর ধরে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি নিজে হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টি সরেজমিন দেখেন এবং ওই কোয়ার্টার্স সরিয়ে ৩০টি শয্যা পাতার নির্দেশ দেন। সেই ঘটনাকে সামনে রেখে এ বার মুখ খুলেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালের জনৈক প্লাস্টিক সার্জেন নিয়ম ভেঙে হাসপাতালের প্রায় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট জায়গা দখল করে বসবাস করছেন। পাশাপাশি, তিনি কোয়ার্টার্সে ছোটখাটো অপারেশন থিয়েটার তৈরি করে ফেলেছেন এবং চারটি এসি মেশিন লাগিয়ে প্রাইভেটে রোগীদের অস্ত্রোপচারও করছেন। অভিযুক্ত চিকিৎসক নিজেও হাসপাতালের জায়গা দখল করে থাকার অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেননি।
এই ভবনের দোতলাতেই রয়েছেন ওই চিকিৎসক।
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যভবনে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁদের হাসপাতালে ইমার্জেন্সি ডিউটিতে নিযুক্ত রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসারদের (আরএমও) থাকার জায়গা দখল করে রেখেছেন প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর বিক্রম সিংহ রাঠৌর। আরএমও-দের হাসপাতালেই থাকার কথা। যাতে জরুরি প্রয়োজনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যে কোনও সময়ে তাঁদের পাওয়া যায়। কিন্তু বিক্রমবাবু জায়গা দখল করে থাকায় তাঁরা থাকার জায়গা পাচ্ছেন না। হাসপাতালের জরুরি পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। অভিযোগ, অধ্যক্ষের দফতর যে ভবনে, তার ঠিক পাশেই পুরনো একটি ভবনের গোটা দোতলাটি ওই চিকিৎসকের দখলে চলে গিয়েছে।
মেডিক্যালের সুপার সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী বলেন, “বিক্রমবাবুর কোয়ার্টার্সের বৈদ্যুতিক লাইনের সঙ্গে এমসিএইচ ভবনের লাইন যুক্ত। কোয়ার্টার্সের চারটি এসি-তে প্রচুর লোড টানে বলে এমসিএইচ ভবনে বিদ্যুতের লাইন মাঝেমধ্যেই ‘ট্রিপ’ করে যায়। এমসিএইচে বহু গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড রয়েছে। প্রচুর রোগী থাকেন। লাইন ‘ট্রিপ’ করে বিদ্যুৎ চলে গেলে তাঁরা ভীষণ সমস্যায় পড়েন।” তিনি আরও বলেন, “একাধিক বার কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিক্রমবাবুকে কোয়ার্টার্স ছাড়তে লিখিত নির্দেশ ধরানো হয়েছে। কিন্তু তিনি কিছুতেই কান দেননি।”
তাঁর কোয়ার্টার্সের দরজা।
মেডিক্যাল সূত্রের খবর, অধ্যক্ষের দফতর সংলগ্ন ওই বাড়িটি আরএমও-দের থাকার কোয়ার্টার্স হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার কথা। বিক্রমবাবু আরএমও থাকাকালীন কোনও এক বিশেষ কারণে তৎকালীন কর্তৃপক্ষ অন্য আরএমও-দের বঞ্চিত করে গোটা দোতলায় শুধু তাঁকেই থাকতে দেন। এখন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হওয়া সত্ত্বেও বিক্রমবাবু আরএমও কোয়ার্টার্স ছাড়ছেন না। ফলে, স্ত্রী-রোগ ও পেডিয়াট্রিক্সের আরএমও-রা থাকার জায়গা পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে বিক্রমবাবু বলেন, “আরও অনেক ডাক্তারবাবু হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় অনেক জায়গা দখল করে আছেন। আগে সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করতে হবে। তার পরে আমার ওঠার প্রশ্ন। তা ছাড়া, আমার আগেও অনেক ডাক্তার দীর্ঘ দিন এই কোয়ার্টার্সে থেকেছেন। তাঁদের কেন বারণ করা হয়নি?” কোয়ার্টার্সে ওটি তৈরি করে প্রাইভেটে অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে তাঁর জবাব, “কোয়ার্টার্সে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করি না। চেনা কেউ এলে দেখে দিই। তাতে ক্ষতি কী?”
ছবি: সুদীপ আচার্য
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.