|
|
|
|
বার্বেডোজ নিয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা দুশ্চিন্তায় রাখছে |
দীপ দাশগুপ্ত |
প্রথম টেস্টটা ধোনিদের মাত্র চার দিনে শেষ করে দিতে দেখে একটা জিনিস মনে হচ্ছে। বিদেশে গেলে ভারতের যে চেনা-পরিচিত ধারাটা এত দিন দেখেছি, ক্যারিবিয়ানে সেটাকে উল্টে যেতে দেখলাম। বিদেশে প্রথম টেস্টেই মুখ থুবড়ে পড়ার ছবিটা মনে হয় পাল্টাচ্ছে।
আসলে বাইরে গেলে সিরিজের প্রথম টেস্টটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ ওখান থেকেই সিরিজ নিয়ে একটা আন্দাজ পাওয়া যায়। বিশ্ব ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিশ্চয়ই তেমন দরের টিম নয়, কিন্তু সাবাইনা পার্কে নামার আগে ভারতের অবস্থা তো খুব ভাল ছিল না। সচিন নেই, সহবাগ নেই, গম্ভীর নেই। লক্ষ্মণ-রাহুল থাকলেও টেস্ট খেলার আগে কোনও ম্যাচ প্র্যাক্টিস পায়নি। টিমটাও সবে ওয়ান ডে সিরিজ খেলে উঠেছে। এই অবস্থা থেকে টেস্ট জয়। কোথায় খারাপ? বরং আমি ইংল্যান্ডেও একই জিনিস ঘটতে দেখলে অবাক হব না। মনে রাখবেন, ওখানে কিন্তু সচিন-সহবাগ-জাহিররা থাকবে।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। বার্বেডোজে। ভারত প্রথম বাজিটা মেরে দিয়েছে, ঠিক আছে। চাপটা যে এখন ভারতের বদলে স্যামিদের উপরে, সেটাও ঠিক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের টিমেও আগের চেয়ে উনিশ-বিশ তফাত। গেইল নেই। ডোয়েন ব্রাভো নেই। কিন্তু বার্বেডোজ নিয়ে আমার যে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা আছে, সেটা নিশ্চিন্ত হতে দিচ্ছে না। ২০০২ সালে বার্বেডোজের বাউন্সি ট্র্যাকে ভারতকে কিন্তু কাঁদিয়ে ছেড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মনে আছে, দেড়শোর কমে আমরা অল আউট হয়ে গিয়েছিলাম। এ বারও ধোনিদের জন্য সেই একই বন্দোবস্ত থাকতে পারে। যতই বলুন, ওয়েস্ট ইন্ডিজে রেকর্ড তো আমাদের খুব ভাল নয়। দু’বার মাত্র সিরিজ জিতে ফেরা গিয়েছে। |
|
বিরাট কোহলি: সামনে সোনার সুযোগ |
সুনীল গাওস্করের মতো ক্রিকেটব্যক্তিত্ব বলেছেন, ৩-০ সিরিজ জেতার এটাই মোক্ষম সুযোগ। আমিও তাই মনে করি। তবু কয়েকটা ‘যদি’ এবং ‘কিন্তু’ থাকছে। দেখুন, প্রথম টেস্টে ভারতের জয়ের সমীকরণটা হল: ভাল বোলিং+রাহুল দ্রাবিড়। ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দু’দল মিলিয়ে চোখে পড়ার মতো তিনটে ইনিংস হয়েছে। যার মানে, ব্যাটিং নিয়ে বেশি কথা বলার জায়গা নেই। বিশেষ করে ভারতের জুনিয়রদের ব্যাটিং। ওপেনিংয়ে এত ভাল একটা সুযোগ পেল মুরলী বিজয়-অভিনব মুকুন্দ। কিন্তু খারাপ লাগল সুযোগটা মাঠে ফেলে আসতে দেখে। বিরাট কোহলির থেকে আমি অনেক কিছু আশা করছি। যে ফর্ম নিয়ে ও ক্যারিবিয়ানে এসেছিল, মনে হয়েছিল একটা-দু’টো সেঞ্চুরি টেস্টে বাঁধা। প্রথম টেস্ট বিরাট পারল না। রায়না একটা ভাল ইনিংস খেললেও মনে হয়েছে বাকি জুনিয়রদের ‘রোগ’ ওকেও তাড়া করছে। সবাই যেন শট খেলার জন্য তাড়াহুড়ো করছে। আর ব্যর্থতা নিয়ে কথা উঠলেই এখন একটা উত্তর শুনি। স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে গিয়ে নাকি আউট হয়েছে। কিন্তু স্বাভাবিক খেলা বলতে গিয়ে শুধু চালানো বোঝায়? আগে দু’টো ট্রিপল সেঞ্চুরি হোক, তার পর সহবাগ হওয়ার চেষ্টা করা ভাল। পরিষ্কার বলছি, বিরাটদের সামনে কিন্তু এমন সুযোগ বারবার আসবে না।
আসলে আগে পরিষ্কার হওয়া উচিত, কী চাইছি আমরা? টেস্টে এক নম্বরের মাইলস্টোন ছোঁয়াটাই লক্ষ্য, নাকি চাইছি এক দশক ধরে রাজত্ব করতে? দশ বছর ধরে বাকিদের উপর ছড়ি ঘোরাতে গেলে কিন্তু বিরাট-রায়নাদের এই দলটার উপরই অনেক কিছু নির্ভর করবে। সচিন-রাহুল-লক্ষ্মণ আর কত দিন? সামনে দু’টো লম্বা সিরিজ আছে। ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়া। সিনিয়রদের চাপে ফেলতে গেলে তো টেস্টের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে ফেলতে হবে বিরাট-রায়নাদের। কখনও পিচ এমন হবে যে, রান তুলতে দম বেরোবে। তখনই হয়তো ডেল স্টেইনের মতো কেউ রিভার্স করাতে শুরু করল। যেমন ইংল্যান্ড ক্রিস ট্রেমলেটকে নিয়ে এখন থেকেই স্বপ্ন দেখছে। এদের মোকাবিলা করাটা তো শিখতে হবে বিরাটদের। আর এই সফরের চেয়ে ভাল মঞ্চ কী হতে পারে? |
|
|
|
|
|