|
|
|
|
রুক্ষ ভালডুবিতে সবুজায়নের স্বপ্ন |
প্রশান্ত পাল • নিতুড়িয়া |
শিল্পায়নের ছোঁয়ায় দিন বদলের স্বপ্ন যেমন তাঁদের চোখে, তেমনই সবুজে ঘেরা গ্রাম গড়তেও সমান উদ্যোগী তাঁরা। তাই তো নিজেদের শ্রমে তাঁরা গ্রামে গড়ে তুলেছেন আম্রকুঞ্জ। একদা ধূসর, রুক্ষ জমিতে আজ নানা প্রজাতির আমের গাছ।
নিতুড়িয়া থানার ভালডুবি গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের সীমিত সামর্থে এ ভাবেই সামিল সবুজায়নের অভিযানে। আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামের গা ঘেঁষেই গড়ে উঠছে ডিভিসি-র ১২০০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ যখন এলাকায় বৃক্ষরোপণের সিদ্ধান্ত নিলেন, তখন ভালডুবি ছাড়া অন্য কোনও জনপদের কথা তাঁদের মাথায় আসেনি। গ্রামের বাসিন্দারা এ বার ঠিক করেছেন, আম, লিচু, পেয়ারার বিশাল বাগান গড়ে তুলবেন। তাঁদের এই উদ্যোগে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে বন দফতর ও ডিভিসি। |
|
ছবি: সুজিত মাহাতো |
গ্রামে ঢোকার মুখেই প্রাথমিক স্কুল সংলগ্ন ফাঁকা জমিতে শনিবার বিকেলে বন দফতর ও ডিভিসি-র যৌথ উদ্যোগে ১১০০ ফলের চারা লাগানো হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহ, অতিরিক্ত জেলাশাসক হৃষিকেশ মুদি, বনপাল সোমনাথ মুখোপাধ্যায়-সহ বন দফতর এবং ডিভিসি-র পদস্থ আধিকারিকেরা। গ্রামের পরিবেশ দেখে খুশি হয়ে ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে জেলাশাসক অনুরোধ করেছেন, পড়ে থাকা বাকি জমিতেও ফলের বাগান ও উদ্যান গড়ে উঠুক। একই ভাবে জেলাশাসকের কাছে গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ মুর্মুর আর্জি, “এই বাগানে এক জন সর্বক্ষণের কর্মী দিন।” জেলাশাসক গ্রামবাসীদের বলেছেন, “গাছগুলিকে আপনারা সন্তানস্নেহে বড় করে তুলুন।”
স্থানীয় বাসিন্দা তথা রায়বাঁধ পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান গুনারাম গোপ প্রশাসনিক কর্তাদের বলেন, “বলা হয় পুরুলিয়ার রুক্ষ মাটিতে কিছু হয় না। একবার আপনারা দেখে যান, কত আম ফলেছে এখানে।” ক্ষুদ্র জল বিভাজিকা প্রকল্পে তৈরি আমের বাগান দেখে খুশিই হয়েছেন তাঁরা। জেলাশাসকের আশ্বাস, ডিভিসি কর্তৃপক্ষ যাতে সর্বক্ষণের কর্মী বাগানে রাখেন, তার জন্য তিনি কথা বলবেন। কংসাবতী (উত্তর) বন বিভাগের ডিএফও বিজয়কুমার শালিমত জানিয়েছেন, এই প্রকল্প ডিভিসি এবং বন দফতরের যৌথ উদ্যোগ। ডিভিসি-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার প্রভাত কিরণ বলেন, “আমাদের স্বপ্ন সবুজ রঘুনাথপুর। এই গ্রামের মানুষের সবুজের প্রতি ভালবাসা দেখে বৃক্ষরোপণের জন্য অন্য কোনও গ্রামের কথা আর মনে হয়নি।” |
|
|
|
|
|