|
|
|
|
পুলিশ নিষ্ক্রিয়, অভিযোগ অশান্ত ভেড়ি এলাকায় |
নিজস্ব সংবাদাদাতা |
শাসক বদলালেও বদলায়নি পরিস্থিতি। ভেড়ি অধ্যুষিত বিধাননগরের সংযুক্ত এলাকার অশান্তিতে ফের তটস্থ স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন। গত শুক্রবার থেকে যা চরম আকার ধারণ করেছে। এর জন্য পুলিশ-প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আগে ভেড়ির দখল ঘিরে তৃণমূল ও সিপিএমের মারামারি নিয়ে তাঁরা সন্ত্রস্ত থাকতেন। এখন সন্ত্রাসের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর অন্তর্দ্বন্দ্ব। কখনও ভেড়ি দখল, কখনও অটো চালানোকে কেন্দ্র করে। এলাকায় থাকতে হলে কোন নেতার সঙ্গে থাকতে হবে তা নিয়ে দু’পক্ষ প্রকাশ্যেই সাধারণ মানুষকে চোখ রাঙাচ্ছে বলে অভিযোগ।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় এমন ঘটছে। বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর থেকেই ধৃত অরুণ চৌধুরী এবং ধৃত নারায়ণ মণ্ডলের মতো দুই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে গোলমাল চলছে। কিছু দিন ধরে এলাকায় কার্যত বোমা-গুলির বৃষ্টি হয়েছে বলে জানান বাসিন্দারা।
উল্লেখ্য, ভেড়ি এলাকা কুলিপাড়ায় রাজনৈতিক গোলমালে বিধানসভা ভোটের আগে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বলাই মণ্ডল নামে এক তৃণমূল কর্মী। তার আগে পুরভোটের মুখে নাওভাঙায় বোমা ফেটে মৃত্যু হয় এক দুষ্কৃতীর। অভিযোগ, পরপর এমন ঘটনা সত্ত্বেও সংযুক্ত এলাকায় দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত পুলিশ ঠেকাতে পারেনি। সেইসঙ্গে বর্তমানে ক্রমাগত রাজনৈতিক গোলমাল ঠেকাতে তৃণমূলের দুই বিবদমান গোষ্ঠীকে নিয়ে পুলিশ শান্তি বৈঠকও করেনি।
বিধাননগরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবব্রত দাস এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “ওই এলাকায় টহলদারি অব্যাহত। শনিবার রাতেও ঘটনাস্থল থেকে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
এ দিকে, শনিবার সুকান্তনগরের গোলমালে ধৃত ১১ জনকে রবিবার বিধাননগর মহকুমা আদালতে হাজির করে পুলিশ। ধৃতদের এক দিনের জেল হেফাজত হয়। আজ, সোমবার ধৃতদের ফের আদালতে হাজির করার কথা।
ধৃত অরুণবাবু মহকুমা আদালতে ওকালতি করেন। এ দিন তাঁর পক্ষে জামিনের আবেদন করতে আদালতে দাঁড়ান বিধাননগর বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের অনেকেই। পুলিশ আহত অরুণবাবুর উপযু্ক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। এর প্রতিবাদে আজ, সোমবার আদালত বয়কট করা হতে পারে বলে জানান বার-অ্যাসোসিয়েশনের সচিব সমীর দাস।
আদালত চত্বরের বাইরে অরুণবাবুর ঘনিষ্ঠ তৃণমূলকর্মীরা অভিযোগ জানান, দত্তাবাদে বেআইনি ভাবে মদ বিক্রি বন্ধের দাবিতে তাঁরা বিধাননগর (উত্তর) থানার সামনে ঘেরাও করে খিচুড়ি রান্না করেন। তাই বারবার বলা সত্ত্বেও বিধাননগরের পুলিশ প্রশাসন অরুণবাবুদের গোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে চায়নি বলে অভিযোগ।
উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘এই ঘটনা নিয়ে দলীয় স্তরে তদন্ত হচ্ছে। সেই অনুযায়ী ওই দুই নেতার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’’ তবে দলীয় সূত্রে খবর, দু’জনকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে।
শনিবারের ঘটনার পরে সংযুক্ত এলাকায় শান্তির দাবিতে পুলিশ প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে জানিয়ে সিপিএম নেতা অমিতাভ নন্দী বলেন, “এখন প্রশাসন তৃণমূলের। গোলমালও হচ্ছে তাঁদের মধ্যেই। এর জেরে গরিব মানুষের জীবন বিপন্ন। আমাদের লোকজনকে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে। আশা করব, সাধারণ মানুষকে এলাকা ছাড়তে যেন বাধ্য করা না হয়।” |
|
|
|
|
|