|
|
|
|
রাস্তা জুড়ে রাখা গাড়ি-বাইক যানজটে নাকাল ক্রেতারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
শহরের সবচেয়ে প্রাচীন বাজার। সমস্যাও সব চেয়ে বেশি।
দুর্গাপুর বাজার মানেই পাশাপাশি এমনই দুই ছবি। স্টেশন লাগোয়া এই বাজারে দোকানের সংখ্যা হাজারের বেশি। শহর যত উন্নত হয়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ক্রেতার সংখ্যা। অথচ পরিকাঠামোর উন্নয়নে পুরসভা প্রায় কিছুই করেনি বলে অভিযোগ।
ছয়ের দশকের শুরুতে গড়ে ওঠে এই দুর্গাপুর বাজার। সেই সময় দুর্গাপুর ও আসানসোল মহকুমা মিলিয়ে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় বাজার। শুধু দুর্গাপুর শহর নয়, বাঁকুড়ার একটি বড় অংশের বাসিন্দারাও এক সময় এই বাজারের উপরে নির্ভরশীল ছিলেন। ইদানিং বাঁকুড়া থেকে আসা ক্রেতাদের সংখ্যা কমেছে ঠিকই। কিন্তু শহরের জনসংখ্যা আগের থেকে বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। ফলে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে। দোকানের সংখ্যাও বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পুরনো যে অপরিসর রাস্তার দু’দিকে দোকানপাট গড়ে উঠেছিল, তা চওড়া করার বিশেষ উপায় নেই। তার উপরে আবার রাস্তা প্রায়শই খানা-খন্দে ভরে থাকে বলে অভিযোগ। শহরে গাড়ি ও মোটরবাইকের সংখ্যাও বেড়েছে। গাড়ি রাখার বন্দোবস্ত না থাকায় দোকানের সামনেই রেখে দেন ক্রেতারা। সাইকেল, রিকশা, অটোর দৌরাত্ম্য তো আছেই। তার উপর ট্রাফিক আইন না মেনে চলাফেরার প্রবণতা। সব মিলিয়ে যানজট নিত্যসঙ্গী ঘিঞ্জি এই বাজারের। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
বিধাননগর থেকে বাজার করতে এসেছিলেন সলিলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সৌমিলি। তাঁরা বলেন, “গাড়ি রাখাটাই প্রধান সমস্যা। যে দোকানে যাচ্ছি সেখানেই জায়গা খুঁজে নিতে হচ্ছে।” বাঁকুড়ার প্রতাপপুর এলাকা থেকে বাজারে এসেছিলেন সস্ত্রীক পল্টু দাস। তিনি বলেন, “বড় ঘিঞ্জি বাজার। তার উপরে শৌচাগার নেই। বাজারে এসে বিশেষত মেয়েদের খুবই অসুবিধায় পড়তে হয়।” ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরের অন্য বাজারগুলি উন্নত হয়েছে। বেনাচিতি বাজারের রাস্তাঘাট আগের তুলনায় চওড়া করা হয়েছে। মামরা বাজারের ভিতরের রাস্তাঘাট কংক্রিটের করা হয়েছে। সিটি সেন্টারে নতুন নতুন শপিং মল হয়েছে। সে সবের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে পিছিয়ে পড়ছে দুর্গাপুরের সবচেয়ে পুরনো বাজারটি। সাবেকি পরিকাঠামোর মধ্যে কোনও রকমে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, বাকি বাজারগুলির সঙ্গে পাল্লা দিতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে তাঁদের। দুর্গাপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অশোক চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “এই পরিস্থিতিতে আমাদের ব্যবসা ব্যাপক ভাবে মার খাচ্ছে। গাড়ি রাখার জায়গা এবং অন্তত মহিলাদের জন্য শৌচাগার অত্যন্ত জরুরি।”
পুরসভার তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ওই এলাকায় পার্কিং জোন ও শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। কিন্তু জমির অভাবে তা করা যাচ্ছে না। মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, শহরের সব ক’টি পুরনো বাজারের পরিকাঠামো উন্নয়নে কাজ হয়েছে। কিন্তু দুর্গাপুর বাজারে জায়গার অভাবে তা করা যাচ্ছে না। অশোকবাবু জানান, আগে বাজারের রাস্তায় মিনিবাস চলত। এখন তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই বাইরে থেকে যাঁরা বাসে চেপে আসেন তাঁদের এসবি মোড়ে নেমে ফের রিকশা ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এলাকার তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে সমস্যার কথা সবিস্তারে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। অপূর্ববাবু বলেন, “দুর্গাপুর বাজারের সমস্যার বিষয়গুলি জেনেছি। কী ভাবে সুরাহা করা যায়, তা ভাবা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|