মোবাইল চোর সন্দেহে বিদ্যুতের শক বালককে
মোবাইল চোর সন্দেহে বিদ্যুতের শক দেওয়া হল দশ বছরের এক বালককে। বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের একটি মিষ্টির দোকানে। দোকানের কর্মচারী ওই বালক গুরুতর জখম হয়ে সিউড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাটা বৃহস্পতিবারের। রবিবার পুলিশের কাছে ওই দোকান মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বালকের মা। জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত পলাতক।”
সপ্তাহখানেক আগে বীরভূমের দুবরাজপুরের উত্তরডিহি গ্রাম থেকে পাণ্ডবেশ্বর স্টেশনের কাছে মাঝি কর্মকারের মিষ্টির দোকানে কাজ করতে আসে বছর দশেকের জয় বাগদি। স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকালে মাঝি তার মোবাইল ফোনটি পাচ্ছিলেন না। সন্দেহের বশে জয়ের উপরে শুরু হয় ‘অত্যাচার’। অভিযোগ, বাচ্চাটিকে দীর্ঘ ক্ষণ রড দিয়ে মারধর করা হয়। পরে দোকানের প্লাগ-পয়েন্টে তার জুড়ে জয়ের হাতে বিদ্যুতের শকও দেওয়া হয়। ‘অত্যাচারে’ অজ্ঞান হয়ে পড়ে জয়। আশপাশের দোকানের লোকজন খবর দিলে বৃহস্পতিবার বিকেলে সেখানে পৌঁছন জয়ের বাবা সিপাই বাগদি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জয় বাগদি। নিজস্ব চিত্র
সিপাইবাবুর দাবি, “মাঝি আমাকে বলে, ‘আপনার ছেলেকে একটু মারধর করেছি। চিকিৎসার জন্য দু’হাজার টাকা দিচ্ছি। বেশি হইচই না করে চলে যান।’ ছেলেকে সুস্থ করাটাই তখন জরুরি মনে হয়েছিল। তাই একটা সাদা কাগজে টিপ সই দিয়ে টাকা নিই। মাঝির ভয়ে আর কথা না বাড়িয়ে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি চলে আসি।” ঘটনার কথা মানলেও, ওই মিষ্টির দোকানের অন্য কর্মীরা বা আশপাশের দোকানদারেরা এ ব্যাপারে আর কিছু বলতে চাননি।
শুক্রবার জয়কে দুবরাজপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। শনিবার রাতে তাকে সিউড়ি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। দুবরাজপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক সুস্মিতা বিশ্বাস বলেন, “ছেলেটির সারা গায়ে কালসিটে পড়ে গিয়েছে। হাতে ছ্যাঁকার দাগও রয়েছে।”
বৃহস্পতিবারের কথা জানতে চাইলেই এখনও কুঁকড়ে যাচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জয়। তবে তারই মধ্যে সে বলল, “আমি চুরি করিনি। তবু সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমাকে মারধর করা হয়, শক দেওয়া হয়।” তার বাবা সিপাইবাবু বলে, “অভাবের জন্যই ছেলেকে কাজ করতে পাঠিয়েছিলাম। এমন ঘটবে ভাবিনি!”
এ দিন সকালে জয়ের মা খ্যান্তা বাগদি পাণ্ডবেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান। তাঁর ক্ষোভ, অভিযোগ না নিয়ে দীর্ঘক্ষণ তাঁকে থানায় বসিয়ে রাখা হয়। পরে বর্ধমানের পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে। পাণ্ডবেশ্বরের ওসি রাজর্ষি দত্ত বলেন, “ঘটনার দিনই আমরা ছেলেটির পরিবারকে অভিযোগ করতে বলেছিলাম। কিন্তু ওঁরা দোকান মালিকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলে গেলেন। তাই আমরা কোনও ব্যবস্থা নিতে পারিনি।” এ দিন অভিযোগ নিতে দেরি করা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “আমি থানায় না থাকায় অভিযোগ নিতে দেরি হয়েছে।”
Previous Story Bardhaman Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.