|
|
|
|
|
ব্যবসায় হলিউডকে টেক্কা
দিতে পারে বলিউড
ইন্দ্রনীল রায় • টরন্টো |
|
যে বিশেষ ক্ষেত্রটিকে সামনে রেখে আগামী দশকে ভারত বিশ্বজয় করতে পারে, তার নাম হচ্ছে বলিউড। ভারত আর কানাডার বড় বড় ব্যবসায়ী মাথা অন্তত তাই বলছেন।
টরন্টোর মেট্রো কনভেনশন সেন্টারে ‘ফিকি-আইআইএফএ গ্লোবাল বিজনেস ফোরাম’-এ ফিরে ফিরে আসছিল এই কথাটাই। এই অনুষ্ঠানে হাজির প্রত্যেকে একবাক্যে মেনে নিলেন, বলিউডের এখন এতটাই ক্ষমতা যে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি কিংবা জনি ডেপকে সহজেই ঢেকে দিতে পারেন শাহরুখ খান আর প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।
কে বলছিলেন এমন কথা? অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডাল্টন ম্যাকগিন্টি। তিনি একা নন। কানাডায় ভারতের কনসাল জেনারেল প্রীতি সারনেরও একই মত। তাঁর কথায়, “খুব শিগ্গির সব সীমারেখা মুছে দেবে বলিউড। কানাডার মতো অনেক দেশেই ব্যবসার বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।” ‘ইন্ডিয়ান মিডিয়া অ্যান্ড এন্টারটেনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি’-র হিসেবমতো ২০০৯ সালের পরে ১১ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে এই খাতে। শীঘ্রই বৃদ্ধির হার ১৩-১৪% হয়ে যাবে। ২০১৫ সালে পৌঁছে ১ লক্ষ ৪০ হাজার কোটির ঘর ছুঁয়ে ফেলবে এই শিল্প। তা ছাড়া, যে হারে হিন্দি ছবির শু্যটিংয়ের জন্য এখন বিদেশি লোকেশন বেছে নেওয়া হয়, তার জেরে লাভের অঙ্ক বাড়ছে সেই সব দেশেরও। ‘উইজক্রাফ্ট’-এর উদ্যোক্তা সাবাস জোসেফ বললেন, “অর্ধেকেরও বেশি বলিউড ছবিতে একটা বড় অংশ বিদেশে শু্যট করা হয়। প্রতি বছর ৮০০-রও বেশি ছবি বানানো হচ্ছে। বলিউডের জন্য যে সব দেশ দরজা খুলে দিচ্ছে, তাদের বিশাল লাভ হচ্ছে।”
বিজনেস ফোরামে স্ত্রী সুনন্দাকে নিয়ে হাজির ছিলেন শশী তারুর। সুনন্দা বলছেন, “বলিউড যে গ্লোবাল ব্র্যান্ড, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বছর বছর সেটা আরও শক্তিশালী হচ্ছে।” |
|
আইআইএফ-এ অংশগ্রহণ করতে শুক্রবার টরন্টোয় পৌঁছলেন শাহরুখ খান। রয়টার্স |
গত কাল সাংবাদিক বৈঠকে ‘আইআইএফএ উইকএন্ড’ ঘোষণার সময় প্রধান অতিথি ছিলেন পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসনের ভাই জেরমেইন জ্যাকসন। কথায় কথায় তিনিও এই প্রতিবেদককে জানালেন বলিউড-মাহাত্ম্যের কথা। জেরমেইনের মতে, অদূর ভবিষ্যতে যদি কোনও দিন দেখা যায় হলিউডকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বলিউড, একটুও অবাক হব না। নিজের কাফলিঙ্ক (যাতে লেখা, এম জে) ঠিক করতে করতে তাঁর মন্তব্য, “বলিউড কী আয়তনের ছবি তৈরি করছে আজকাল। ধীরে ধীরে হলিউডকে অতিক্রম করে যেতেই পারে। এখানে এসেছি সোনু নিগমের সঙ্গে অনুষ্ঠান করব বলে। আমরা মাইকেলের গানও গাইব। এক দশক আগে অন্তত এটা সম্ভব ছিল না। ভারত যে ভাবে এগিয়েছে, পাশাপাশি বলিউডও তাই আজ আমরা এক মঞ্চে।”
ফিরে আসা যাক অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডাল্টন ম্যাকগিন্টির কথায়। তিনি বলছেন, “যে ভাবে ভারত এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে এখন যদি এই দেশকে কেউ গুরুত্ব না দেয়, সেটা বোকামি। সেই এগিয়ে যাওয়ার গল্পে বলিউড একটা বড়সড় উপাদান।” অন্টারিওয় কিছু দিনের মধ্যেই ভোট। ম্যাকগিন্টি বলছেন, আইআইএফএ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রবাসী ভারতীয়দের কাছাকাছি পৌঁছনোর দারুণ সুযোগ। তাঁর ‘পোল ম্যানেজাররা’ ইতিমধ্যেই স্লোগান তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
রাজনীতি থেকে ব্যবসা বলিউড নিয়ে এখন সব মহলেই এক রা। তবে যে শিল্প এত আশা-ভরসার গল্প তৈরি করছে, তাকে সমৃদ্ধ করতে বলিউডেরও কি আর একটু যত্নবান হওয়া উচিত নয়?
নয়তো এখানে সঞ্জয় দত্ত আর মল্লিকা শেরাওয়াতের ‘ডবল ধামাল’-এর মতো ছবি দেখে যে ভাবে অর্ধেক দর্শক ঘুমিয়ে পড়লেন, তাতে বলিউড নিয়ে এই উচ্ছ্বাস টিকলে হয়! |
|
|
|
|
|