|
|
|
|
উত্তরে ধুঁকছে উচ্চ শিক্ষা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
প্রতি মাসে প্রায় ৭০ কোটি টাকা বিলি হয় যে দফতরের মাধ্যমে সেই দফতরে একটিও কম্পিউটার নেই, বহু আবেদন নিবেদনের পরে কয়েক মাস হল একটি ফ্যাক্স মেশিন জুটেছে। উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সব কলেজের প্রশাসনিক কাজকর্ম যে দফতর পরিচালনা করে তাদের কাছেই সরকারি নির্দেশ পৌছোয় না. বিভিন্ন কলেজ থেকে চেয়ে অথবা কলকাতায় গিয়ে সরকারি নির্দেশ যোগাড় করতে আনতে হয় কর্মীদের। চুম্বকে এই হল উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক উচ্চ শিক্ষা আধিকারিকের দফতরের হাল। উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার সব কলেজের প্রশাসনিক সদর এবং পাঁচ জেলার ৫৬টি কলেজের শিক্ষক থেকে কর্মী সকলের বেতন এবং অনান্য অর্থিক অনুদান যে দফতরের মাধ্যমে হয় সেখানে মাত্র একজন আধিকারিক, একজন স্টেনো এবং একজন লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক দিয়ে অফিসের কাজকর্ম পরিচালনা করতে হয়। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বারবার রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরে জানিয়েও করেও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ির নিউটাউন পাড়া এলাকার ভাড়া বাড়িতে এই আঞ্চলিক অফিসটি ‘বঞ্চনার’ প্রতীক হয়ে রয়েছে বলেই শিক্ষানুরাগী মহলের অভিযোগ। দফতরের শীর্ষ কর্তা তথা আঞ্চলিক উচ্চ শিক্ষা আধিকারিক কৃষ্ণদেব গোস্বামী বলেন, “সম্প্রতি উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে যাবতীয় পরিকাঠামোর অভাব দূর করার পরিকল্পনা হয়েছে। আশা করছি পুজোর আগে কিছু একটা সুরাহা হবে।” ১৯৮১ সালে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন কলেজের প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক কাজকর্ম পরিচালনা করার জন্য এই দফতরের প্রতিষ্ঠা। কলেজগুলিকে যে সরকারি অনুদান দেওয়া হয় তা কীভাবে ব্যয় হচ্ছে তা কলেজে গিয়ে খতিয়ে দেখার জন্য আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি পদ রয়েছে, যার নাম ট্র্যাভেলিং অডিটর। পদটিতে কোনও আধিকারিককে পাঠানো হয়নি। অ্যাকান্টস অফিসার পদের অনুমোদন থাকলেও কেউ এই পদে যোগ দেননি। বর্তমানে ২০টি অনুমোদিত পদের মধ্যে আধিকারিক কর্মী রয়েছেন মাত্র আট জন। তার মধ্যে চার জনই চতুর্থ শ্রেণির। বাকি দুইজন টাইপিস্ট। এই পরিস্থিতিতে দফতরের আধিকারিক এবং স্টেনোকে কাজের বেশির ভাগ সামাল দিতে হয়। এক কর্মীর কথায়, “কী করে যে অফিসটি চলছে তা কেউ জানে না। এই অফিসের কেউ খবরও রাখে না।” উচ্চশিক্ষার এই আঞ্চলিক দফতরে রাজ্য সরকারের শিক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশ এসে পৌঁছনোর ব্যবস্থা নেই। নতুন নির্দেশ এলে উত্তরবঙ্গের কোনও-না-কোনও কলেজে ছুটতে হয় দফতরের কর্মীদের। কলেজে সরকারি নির্দেশের প্রতিলিপি এলেও আঞ্চলিক দফতরে পৌঁছয় না। জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কোচবিহার এবং দুই দিনাজপুরের ৫৬টি কলেজের বেতন প্রায় ৭০ কোটি টাকা প্রতি মাসে দফতরের মাধ্যমে বিলি হয়। পশ্চিমবঙ্গ কলেজ শিক্ষাকর্মী ইউনিয়নের দার্জিলিং জেলা কমিটি সম্পাদক অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেবল বেতন বিলিই নয়, দফতর থেকে কলেজ শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের পেনশন সংক্রান্ত কাজও করা যেত। কিছু হচ্ছে না। কলকাতায় দৌড়তে হচ্ছে আমাদের।” |
|
|
|
|
|