|
|
|
|
বেহাল জেলা গ্রন্থাগার, বিপাকে পড়ুয়ারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
নেই পর্যাপ্ত কর্মী। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রস্তুতি নেওয়ার মতো বই। জেনারেটর, সিলিং, টেবিল ফ্যানও অপর্যাপ্ত। অভাব রয়েছে উপন্যাসের। টেলিভিশন থাকলেও প্রোজেক্টরের অভাবে শুরু করা সম্ভব হয়নি ‘কর্মশালা’। সরকারি অনুদানও পর্যাপ্ত নয়। এমনটাই দুর্দশায় ধুঁকছে কর্ণজোড়ায় অবস্থিত উত্তর দিনাজপুর জেলা গ্রন্থাগার। সম্প্রতি ইসলামপুরের বিধায়ক তথা জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী করিম চৌধুরী এবং রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত ওই গ্রন্থাগার ঘুরে দেখেন। তাঁরা কর্তৃপক্ষকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দেন। জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী বলেন, “জেলা গ্রন্থাগারের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেছি। কর্তৃপক্ষকে লিখিকভাবে জানাতে বলেছি। এর পরে সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক মনোঞ্জয় রায় বলেন, “জেলা গ্রন্থাগারের সমস্যার কথা উপদেষ্টা কমিটিতে আলোচনা করে লিখিতভাবে মন্ত্রীকে জানানো হবে।” বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত অভিযোগ করেন, বামফ্রন্ট সরকারের অবহেলার ফলে জেলা গ্রন্থাগারটি নানা সমস্যায় ধুঁকছে। গ্রন্থাগারটি অতিরিক্ত কোনও বরাদ্দ পায়নি। গ্রন্থাগারের উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান তথা উত্তর দিনাজপুর জেলাশাসক সুনীলকুমার দন্ডপাট বলেন, “গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানানো হবে।” ২০০৪ সালে রায়গঞ্জের প্রশাসনিক ভবন লাগোয়া এলাকায় জেলা গ্রন্থাগারটি গড়ে তোলা হয়। সেখানে ১ হাজার ২০০ জন পাঠক সদস্য আছেন। পাঁচটি বিভাগে শিশু সহ বিভিন্ন বিভাগের পাঠকদের নিখরচায় বই পড়ার সুবিধা রয়েছে। জেলা গ্রন্থাগারে ‘কেরিয়ার গাইডেন্স’ নামে পৃথক একটি বিভাগ চালু করা হয়েছে। সেখানে বেকার যুবকদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় প্রস্তুতির জন্য বই পড়ার সুযোগ রয়েছে। |
|
ছবি: তরুণ দেবনাথ। |
জেলা গ্রন্থাগারে বর্তমানে ১০ জন কর্মী থাকার কথা। আছেন ৬ জন। করণিক ও সহকারি গ্রন্থাগারিকের পদ ফাঁকা পড়ে আছে। ওই পরিস্থিতিতে পাঠকদের পরিষেবা দিতে নাকাল দশা হয় কর্মীদের। পড়ুয়ারা জানান, জেনারেল নলেজ, সমাজবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা সহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বই মেলে না। জেনারেটরের সমস্যার জন্য রাতে গ্রন্থাগার খোলা রাখা সম্ভব হয় না। সম্প্রতি গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ টেলিভিশন কিনলেও প্রোজেক্টরের অভাবে শিক্ষামূলক ভিসুয়াল কর্মশালা চালু করা সম্ভব হয়নি। সরকারি বরাদ্দের অভাবে কর্তৃপক্ষ টেলিফোন ও বিদ্যুতের বিল মেটাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। কয়েক বছর থেকে রাজা রামমোহন ফাউণ্ডেশনের তরফে শিশুদের জন্য হিন্দি ভাষায় বই দেওয়া হয়। জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক জানান, গ্রন্থাগারে হিন্দি ভাষায় পাঠক নেই বলনেই চলে। গ্রন্থাগারে সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন পড়ার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু সেখানে পাখার ব্যবস্থা নেই। অসহ্য গরমে বসে কাগজ পড়তে বাধ্য হচ্ছেন পাঠকরা। জেরক্স চালু না হওয়ায় কোনও বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ জেরক্স করা সম্ভব হয় না। জেলা গ্রন্থাগারিক প্রতুলচন্দ্র কর্মকার বলেন, “কেরিয়ার গাইডেন্স বিভাগে বই কেনার জন্য বছরে অতিরিক্ত ৬ নক্ষ টাকা দরকার। বিষয়টি রাজ্য সরকাকে জানানো হয়েছে।” বিনয় বর্মন, সঞ্জয় দেবনাথের মতো গ্রন্থাগারের নিয়মিত কয়েকজন পাঠক জানান, রাত ৮টা পর্যন্ত গ্রন্থাগার খোলা রাখা প্রয়োজন। জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিকের কথায়, “মালদহে জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক নেই। তাই আমাকে সপ্তাহে তিনদিন ওই জেলায় থাকতে হচ্ছে। ফলে উত্তর দিনাজপুরের ৫৩টি সরকারি গ্রন্থাগার ও জেলা গ্রন্থাগার পরিদর্শনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সবই মন্ত্রীকে জানিয়েছি।” |
|
|
|
|
|