|
|
|
|
উপাচার্যের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি অশোকের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অরুণাভ বসু মজুমদারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করার হুমকি দিলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। বুধবার শিলিগুড়িতে দলের সদর দফতরে বসে তিনি এই মামলা করার সিদ্ধান্তের কথা জানান। দার্জিলিং জেলা সিপিএমও এ ব্যাপারে অশোকবাবুর পাশে থাকবে বলে জানিয়ে দেন দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি আড়াল করতে অশোকবাবু এবং তাঁর দল সিপিএম ‘সক্রিয়’ বলে গত শনিবারই অভিযোগ করেছিলেন উপাচার্য।
এ দিন অশোকবাবু বলেন, “উপাচার্যের পদে থেকে, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সরকারি বাসভবনে বসে তিনি আমার এবং দলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন তা পরিকল্পিত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অসত্য এবং ভিত্তিহীন ওই অভিযোগ জনমানসে আমার এবং পরিবারের সম্মানহানি করেছে। উপাচার্যের পদকে সম্মান জানালেও, অরুণাভবাবুর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শীঘ্রই শিলিগুড়ি আদালতে মামলা দায়ের করব।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর দাবি, উপাচার্য যা বলছেন, তা তাঁকে প্রমাণ করতে হবে। পাশাপাশি, তিনি বলেছেন, “উপাচার্য প্রেস-বিবৃতিতে লিখেছেন, আমি তাঁর সম্পর্কে অসাংবিধানিক মন্তব্য করেছি। এটাও অসত্য।” এ প্রসঙ্গে উপাচার্যের প্রতিক্রিয়া, “আমি যা বলার, সে দিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেছি। নতুন করে আমার কিছু বলার নেই। উনি
(প্রাক্তন পুরমন্ত্রী) কী করবেন, সেটা ওঁর ব্যাপার।”
গত শনিবার উপাচার্য বাসভবনে সস্ত্রীক সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকবাবু ও সিপিএম নেতা জীবেশ সরকারের ‘চাপের মুখে’ পড়তে হয়েছে তাঁকে। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের কাজেও ‘বিঘ্ন’ ঘটেছে। পাশাপাশি, তাঁর স্ত্রী অভিযোগ করেন, তাঁকে ‘বিধবা করে দেওয়ার’ হুমকিও দেওয়া হয়েছে। উপাচার্যের ওই সাংবাদিক বৈঠকের পরে দার্জিলিং যাওয়ার পথে শিলিগুড়িতে উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়ে দেন, উপাচার্যের কাছ থেকে তিনি আগেই ‘অনেক কিছু’ শুনেছেন। সেই সঙ্গে সিপিএম কী ভাবে উপাচার্য নিয়োগ করে ‘দলতন্ত্র চালাত’, তা-ও স্পষ্ট বলে ব্রাত্যবাবু দাবি করেন।
এই ঘটনা নিয়ে আলোড়ন পড়েছে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টেও। উপাচার্যের অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার নয় বলে মনে করেন বাম-শরিক আরএসপি-র স্থানীয় নেতৃত্ব। আরএসপি-র দার্জিলিং জেলা কমিটির সম্পাদক বিনয় চক্রবর্তী বলেন, “সিপিএমের শিক্ষা সেলের দায়িত্বে রয়েছেন বিমান বসু। তাঁর অনুমোদন সাপেক্ষেই উপাচার্য ঠিক হয়েছেন বলে জানি। বিষয়টি উপাচার্যের সঙ্গে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের সমস্যা বলেই মনে হয়েছে। উপাচার্যের অভিযোগ খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তা ছাড়া, উপাচার্যের নিয়োগ কী ভাবে হয়েছে, তা-ও দেখা দরকার।” এ দিকে, দার্জিলিং থেকে ফেরার পথে মঙ্গলবারই বাগডোগরায় উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিশেষ তদন্ত হবে। |
|
|
|
|
|