|
|
|
|
আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল |
যক্ষ্মা রোগ সংক্রান্ত বিভাগ বন্ধ, বিভ্রান্তি রোগীদের মধ্যে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
গত তেইশ বছর ধরে চালু আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের বক্ষ (বহির্বিভাগ) বন্ধ হয়ে আছে দশ দিন ধরে। কোনও আগাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন বহু রোগী। তাঁরা হাসপাতালে এসেও ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। বিভাগটি কবে খুলবে, কিংবা আদৌ খুলবে কিনা, তা নিয়েও কোনও তথ্য নেই তাঁদের কাছে।
যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ক্ষেত্রেও এই পরিস্থিতিতে সমস্যা হচ্ছে। এই হাসপাতালে আরামবাগ ছাড়াও হুগলির বিভিন্ন এলাকা, হাওড়া, বর্ধমান, বাঁকুড়া থেকেও যক্ষ্মা নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য মানুষ আসেন। দিনে এই সংখ্যাটা প্রায় ৫০-৬০ জন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এঁদের মধ্যে দৈনিক গড়ে ২-৬ জনের যক্ষ্মা রোগ ধরা পড়ে। স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে জনস্বার্থবিরোধী কাজের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। রাজনৈতিক দলগুলিও মুখ খুলেছে।
হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশেই বিভাগটি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে দাবি হাসপাতালের যক্ষ্মা ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক গোবিন্দচন্দ্র মল্লিকের। তাঁর অভিযোগ, “গত ১৩ জুন থেকে আমাকে বক্ষ বিভাগ বন্ধ রেখে সাধারণ বহির্বিভাগে বসার নির্দেশ দেন সুপার।” গোবিন্দবাবুর বক্তব্য, “সাধারণ বহির্বিভাগে নানা রকম রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা আসেন। সেখানে যক্ষ্মা রোগীদের রোগ নির্ণয় বা নিয়মিত চিকিৎসা সুষ্ঠু ভাবে করা সম্ভব নয়।” ‘সংশোধিত জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ’ কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে সমস্যার কথা জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন ওই চিকিৎসক। কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি বলে তাঁর দাবি।
অন্য দিকে সুপারের বক্তব্য, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশেই বক্ষ (বহির্বিভাগ) বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। হাসপাতালে বক্ষ বিশেষজ্ঞের পদটি খালি বলে জানিয়ে নারায়ণবাবু বলেন, “বক্ষ বিশেষজ্ঞ পেলেই ওই বিভাগটি চালু হবে।” তাঁর বক্তব্য, গোবিন্দবাবু যেহেতু বক্ষ বিশেষজ্ঞ নন, তাই তিনি সাধারণ বহির্বিভাগ থেকেই বক্ষ-সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে যাঁরা আসবেন, তাঁদের দেখতে পারবেন। নারায়ণবাবু বলেন, “তা ছাড়া, হাসপাতালে চিকিৎসক কম বলেও এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
কিন্তু যক্ষ্মা রোগীরা জানতে পারছেন না, সাধারণ বহির্বিভাগ থেকেই তাঁদের চিকিৎসা হবে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে এসেও ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। যে সব যক্ষ্মারোগী খোঁজখবর করে সাধারণ বহির্বিভাগে দেখাচ্ছেন, তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ শরীরে চিকিৎসা করানো খুবই সমস্যার। অন্য দিকে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না এনেও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসককে দিয়ে এই দায়িত্ব সামলানো যায় বলে মন্তব্য করেছেন গোবিন্দবাবু। তিনি নিজেও এই প্রশিক্ষণ নিয়েই ১৯৯৮ সাল থেকে এই বিভাগের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বলে জানান।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা, সে ব্যাপারে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন হুগলি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক উন্মেষ বসু। তিনি বলেন, “জাতীয় কর্মসূচি নষ্ট হয়ে যায়, এমন কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। বিষয়টি আমি সুপারের কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছি।”
তৃণমূল এবং সিপিএম নেতৃত্ব দ্রুত বিভাগটি চালু করার দাবি জানিয়েছেন। হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে সুপার ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলব।”
শ্রমিক বিক্ষোভ বাউড়িয়ায়। ষোলো বছর আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে হাওড়ার বাউড়িয়ার একটি সুতোকল। কিন্তু তার শ্রমিকেরা প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং গ্র্যাচুইটির টাকা পাননি। পাওনা টাকার দাবিতে বুধবার এই সুতোকলের সামনে যুব আইএনটিইউসি-এর নেতৃত্বে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখান। বিকেল ৩টে থেকে শুরু হয়ে বিক্ষোভ চলে প্রায় ২ ঘণ্টা। যুব আইএনটিইউ নেতা নাসিরুদ্দিন মণ্ডল বলেন, “প্রাপ্য টাকা না-পেয়ে অনেক শ্রমিক মারাও গিয়েছেন। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।” |
|
|
|
|
|