|
|
|
|
মমতাকে চিঠি এসইউসি-র |
যৌথ বাহিনী রাখার পক্ষে মত লালগড়ের তৃণমূলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে অন্তত আরও কিছু দিন লালগড়ে যৌথ বাহিনী রাখার কথাই বলছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে তাঁদের দাবি, বিষয়টি ‘স্থানীয়’ এবং ‘নীতিগত সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত নয়’। গত ১৬ জুন লালগড় থানায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ে এক সর্বদল সভায় যৌথ বাহিনীর শিবির রাখার পক্ষেই সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। সেই সভায় তৃণমূল, কংগ্রেস এবং সিপিএম নেতৃত্ব এক সুরেই কথা বলেছেন।
বিরোধী পক্ষে থাকার সময় যৌথ বাহিনী তুলে নেওয়ার দাবিতে একাধিক বার সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজ্য পুলিশকে দিয়ে যৌথ বাহিনীকে ‘অপব্যবহার’ করে সিপিএম এলাকা দখল করছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মঙ্গলবারই দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বলেছেন, যৌথ বাহিনীর বিষয়টি আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত। ‘একটু দেখেশুনে’ই নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করা হবে।
লালগড়ে সর্বদল সভায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য এবং স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর কথায় প্রশ্ন উঠছে, তা হলে যৌথ বাহিনী প্রশ্নে অবস্থান ‘বদল’ করল তৃণমূল? বস্তুত, তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান বদলের অভিযোগই তুলেছে এই সে দিন পর্যন্ত তাদের জোটসঙ্গী এসইউসি। |

পুরুলিয়া আদালতে
তেলুগু দীপক। |
লালগড়ের সভায় তাঁদের প্রতিনিধিকে ডাকা হয়নি বলেও মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক সৌমেন বসু। যদিও বিষয়টি ততটা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ নয় বলেই দাবি ওই সভায় হাজির তৃণমূলের ব্লক নেতা বনবিহারী রায়ের। বুধবার যোগাযোগ করা হলে বনবিহারীবাবু বলেন, “আপাতত আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্থানীয় প্রশ্ন বিবেচনা করেই আরও কিছু দিন যৌথ বাহিনীর শিবির রাখার জন্য সভায় আমরা বলেছি। এর সঙ্গে দলের নীতিগত অবস্থান খুব জড়িত নয়।” |
|
চিঠিতে সৌমেনবাবুর বক্তব্য, একটি সংবাদপত্র সূত্রে ১৬ তারিখ সভা হবে জেনে লালগড়ের বিডিও-র সঙ্গে তাঁদের দলের প্রতিনিধি যোগাযোগ করেছিলেন। বিডিও জানান, তেমন সভার কথা তাঁর জানা নেই। পরের দিনই সংবাদপত্রে সভা হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে সৌমেনবাবু ইঙ্গিত করেছেন, যৌথ বাহিনী প্রত্যাহারের দাবিতে তাঁদের অনড় অবস্থান জেনেই সম্ভবত বিডিও দলীয় প্রতিনিধিকে ‘বিভ্রান্ত’ করেছেন। যদিও বিডিও মানস হালদার জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সর্বদল বৈঠক পুলিশ ডেকেছিল বলে কাউকে ডাকা, না-ডাকার বিষয়টি তাঁর এক্তিয়ারে নয়। আর থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, লালগড়ে এসইউসি-র কোনও সাংগঠনিক ‘অস্তিত্ব’ না-থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সৌমেনবাবুর অভিযোগ, ‘১৬ জুনের সভায় তৃণমূলের ব্লক নেতা বনবিহারী রায় যৌথ বাহিনীর শিবির তোলার বিরোধিতা করে প্রস্তাব আনেন। কংগ্রেস, সিপিএম, ঝাড়খণ্ড পার্টি (আদিত্য)-র প্রতিনিধিরা তা সমর্থন করেন’। এই অবস্থান মমতার ‘পূর্ববর্তী বক্তব্য ও প্রতিশ্রুতির সম্পূর্ণ বিপরীত’ বলে বলা হয়েছে তাঁর চিঠিতে। ‘আলোচনার মাধ্যমে জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠার’ যে কথা মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বার বলেছেন, তাকে শর্তাধীনে স্বাগত জানিয়েছেন সিপিআই (মাওবাদী)-র জেলবন্দি নেতা তেলুগু দীপক ওরফে বেঙ্কটেশ্বর রেড্ডি। একটি মামলার সূত্রে এ দিন তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পুরুলিয়া জেলা আদালতে। সেখানেই দীপক বলেন, “জঙ্গলমহলে ‘অপারেশন গ্রিনহান্ট’ বন্ধ এবং যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার হলেই আলোচনা সম্ভব।” ‘মিথ্যা’ মামলায় জড়িত ও রাজনৈতিক বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তিও দাবি করেছেন মাওবাদী নেতা। গত এক মাসে মমতার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে দীপকের মন্তব্য, “সিঙ্গুর বিল এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।” মামলা প্রত্যাহার এবং ‘নিঃশর্ত’ মুক্তির দাবিতে রাজনৈতিক বন্দিরা আজ, বৃহস্পতিবারই আবার রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারে অনশন করবেন। তাঁদের দাবির সমর্থনে ‘সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বিরোধী মঞ্চ’ মেদিনীপুরে জনসভারও ডাক দিয়েছে। |
|
|
 |
|
|