|
|
|
|
শিল্প সংস্থার ফেলে রাখা জমি ফেরত চাইছে রাজ্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কারখানার জন্য জমি নিয়েও যে সমস্ত সংস্থা প্রকল্প না-গড়ে ফেলে রেখে দিয়েছে, তাদের কাছে জমি ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠাতে শুরু করেছে রাজ্য শিল্প দফতরের অধীনস্থ পশ্চিমবঙ্গ শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম। নিগম সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ৭০টির মতো সংস্থার কাছে জমি ফেরত দেওয়ার চিঠি পাঠানো হয়েছে।
তাঁর সরকার জোর করে এক ছটাক জমিও অধিগ্রহণ করবে না বলে ঘোষণা করার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সবটুকু জমি শিল্প সংস্থাকেই বাজার থেকে কিনে নিতে হবে।
সরকারি উদ্যোগে বড়জোর বিভিন্ন শিল্প তালুকের অব্যবহৃত জমির ব্যবস্থা করে দেওয়া যেতে পারে। নেওয়া যেতে পারে বন্ধ কল-কারখানার জমিও। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশিত সেই পথ অনুসরণ করেই পড়ে থাকা জমি ফেরত নিয়ে আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম।
নিগমের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার নন্দিনী চক্রবর্তী বলেন, “কারখানা না গড়লে জমি আর ফেলে রাখা যাবে না। তাই জমি ফেরত চেয়ে শিল্প তালুকগুলির বিভিন্ন সংস্থাকে চিঠি পাঠানো শুরু হয়ে গিয়েছে।”
শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মহাকরণে জানিয়েছেন, রাজ্যে শিল্প-জমি অনেক পড়ে রয়েছে। সেই জমি কী ভাবে ব্যবহার করা যায় তা খুঁজে বার করার পথে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। কেউ প্রকল্প না-গড়ে জমি ফেলে রাখলে ভুল করবেন। কোথায়, কত জমি পড়ে রয়েছে, তার সমস্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে। যা হাতে এলেই মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হবে বলে পার্থবাবু জানান।
ঠিক এই কাজটাই বিধানসভা নির্বাচনের কিছু দিন আগে থেকে শুরু করে দিয়েছিল পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম। শিল্প তালুকগুলির অবস্থা কী তা জানতে সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল একটি বেসরকারি পরামর্শদাতা সংস্থাকে। সংস্থাটি কয়েকটি শিল্প তালুকের উপর সমীক্ষা চালিয়ে সেগুলির পরিকাঠামোগত অবস্থা-সহ বিভিন্ন তথ্য সম্বলিত একটি রিপোর্ট নিগমের কাছে জমা দেয়। পাশাপাশি নিগমও শিল্প তালুকগুলির সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ চিহ্নিত করে। যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল, পড়ে থাকা জমিগুলিকে চিহ্নিত করে ফেরত চাওয়া।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় নিগমের অধীনে ১৫টির মতো বড়-মাঝারি শিল্প তালুক রয়েছে। যেগুলিতে বিভিন্ন সময়ে ৪৩০টির মতো সংস্থাকে জমি বিলি করা হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকেই নানা কারণে কারখানা গড়তে পারেনি। অনেকে আবার উৎপাদন শুরু করেও পরে রুগ্ণ হয়ে বন্ধ হয়ে যায়। আবার কিছু সংস্থা যারা প্রকল্প সম্প্রসারণের জন্য জমি নিয়ে পরে তা কাজে লাগাতে পারেনি। এই তিন ধরনের জমি ফেরতের ব্যাপারেই উদ্যোগী হয়েছেন নিগম কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় কোন সংস্থাকে, কত জমি অধিগ্রহণ করে দেওয়া হয়েছে, তার একটি সম্পূর্ণ তথ্যভাণ্ডার তৈরির কাজ করছে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম। যেখানে অব্যবহৃত জমির খতিয়ান যেমন থাকছে, তেমনই প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলির জন্য আরও কত জমি লাগবে সেই তথ্যও থাকছে। সম্প্রতি জেলাশাসকদের কাছে এই একই তথ্য জানতে চেয়েছে, রাজ্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরও। ওই দফতরের পক্ষ থেকেও আলাদা করে শিল্প-জমির একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নীতি হল, শিল্পের জন্য গোড়াতেই নতুন জমির সন্ধানে ছুটে না বেড়িয়ে, হাতে যা রয়েছে আগে তার সদ্ব্যবহার করা। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি এখন সেই নীতিকেই পাখির চোখ করেছে। |
|
|
|
|
|