|
|
|
|
পাচারকারী খুঁজে দিতে পুরস্কারের ‘টোপ’, ক্ষুব্ধ সীমান্ত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিকারপুর |
‘এলাকায় পাচারের খবর পেলে আমাদের জানান। আপনার নাম গোপন রাখা হবে। খবর পাকা হলেই পাবেন নগদ ১০ হাজার।’
গত কয়েকদিন ধরে সকাল-বিকেল মুরুটিয়ার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে মাইক নিয়ে এমনই প্রচার চালাচ্ছে বিএসএফ। গ্রামবাসীদের পুরস্কারের ‘টোপ’ দিয়ে পাচার বন্ধের এই উধ্যোগে অবশ্য সাড়া মেলেনি। মিলবে কী করে? তাঁরা বলচেন, “কোনটা আগে বলুন তো, জীবন না দশ হাজার টাকা?”
শিকারপুরের এক বাসিন্দার কথায়, “টাকার লোভ দেখিয়ে মানুষকে এ ভাবে ব্যবহার করা ঠিক নয়। চরবৃত্তির জন্য গ্রামের কারও প্রাণ গেলে তার দায় কে নেবে? তা হলে বিএসএফ জওয়ানেরা আছেন কী করতে?”
গত কয়েক বছরে নদিয়ার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাপাচার কমেছে। তবে তা যে বন্ধ হয়ে গিয়েছে এমন দাবি করা যায় না। বরং তারা বদলে ফেলেছে পাচারের ধরণ। তারকাঁটার বেড়া দেওয়ায় গরু পাচার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। অবাধে চলছে গাঁজা, ফেন্সিডিল পাচার। কোথাও কোথাও কাঁটাতারের বেড়া কেটে গরু পাচারও। আর তাতেই চিন্তা বাড়ছে বিএসএফের। গত কয়েক মাসে মুরুটিয়ার শিকারপুর এলাকায় বেশ কয়েক বার তারকাঁটার বেড়া কেটে ফেলা হয়েছে। এর আগে শিকারপুর ছাড়া নিউ শিকারপুর, ভারল, দহখোলা, ফুলবাড়ি, ব্রজনাথপুর, বেড় রামচন্দ্রপুর এ ঘটনা দেখেছে। বিএসএফের এক কর্তার কথায়, “গ্রামের মানুষ একটু সাহায্য না করলে আমরা কাজ করব কী করে!” কিন্চু তা বলে ‘টাকার টোর’ব্যা্পারটা বেশ সম্মানে লেগেছে গ্রামবাসীদের। বিএসএফের গাড়িতে দিন ভর প্রচার শুনে মুখ বেঁকিয়ে গ্রামবাসীরা বলছেন, “টাকার লোভ দেখালে কেউ কেউ হয়তো এগিয়ে আসবেন। অভাবীতো! কিন্তু তারপরে পাচারকারীদের বন্দুকের সামনে আমাদের বাঁচাবে কে শুনি?” করিমপুর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ সিপিএমের শঙ্কর মণ্ডল বলেন, “বিএসএফ নিজেদের ‘সোর্স’ বানানোর জন্য যে ভাবে প্রচার চালাচ্ছে তাতে গ্রামে নতুন সমস্যা তৈরি হবে। বাসীরা নতুন সমস্যা পড়বে না তো?” তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, “বিএসএফ স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে এই প্রচারটা করতে পারত! তা না করে পুরস্কার ঘোষণা করে যে ভাবে প্রচার চালাচ্ছে তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।” |
|
|
|
|
|