|
|
|
|
রূপরেখা তৈরির নির্দেশ মন্ত্রীর জঙ্গলমহলের উন্নয়নে পরিকল্পনা |
নিজস্ব সংবাদদাতা• মেদিনীপুর |
টুকরো টুকরো নয়। জঙ্গলমহলের উন্নয়ন ঘটাতে চাই সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা। এ জন্য ‘রুট-ম্যাপ’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। সম্প্রতি জঙ্গলমহলের তিন জেলাশাসকের (পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া) সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী। সেখানেই জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে ১৫ দিনের মধ্যে ‘রুট-ম্যাপ’ বা উন্নয়নের রূপরেখা পাঠাতে হবে। ওই পরিকল্পনা রিপোর্ট খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকার প্রয়োজন মতো সংযোজন-বিয়োজন করতে পারে। তার পরেই সেই পরিকল্পনা মেনে জঙ্গলমহলে সার্বিক উন্নয়নের কাজ শুরু করা হবে।
জঙ্গলমহলের তিন জেলার মধ্যে অন্যতম পশ্চিম মেদিনীপুর। ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা তৈরির কাজ জোরকদমে শুরু করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শুভাঞ্জন দাস বলেন, “জেলায় আমরা একটি কমিটি তৈরি করেছি। কমিটির সবাই মিলে আলোচনার ভিত্তিতেই পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।”
জঙ্গলমহলের উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু দিন ধরেই নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, মহকুমা প্রশাসন, ব্লক প্রশাসন থেকে জেলার বিভিন্ন দফতর বিভিন্ন স্তরে নানা পরিকল্পনা হয়েছে। এই মুহূর্তে ‘ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যান’-এ কেন্দ্রীয় অর্থে উন্নয়নের নানা কাজ হচ্ছে জঙ্গলমহলে। কিন্তু প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ সবই টুকরো-টুকরো কাজ। এ ভাবে সার্বিক উন্নয়ন ঘটানো কঠিন। এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, “সেচ দফতর এক জায়গায় সেচ-বাঁধ তৈরি করছে, আবার একশো দিনের প্রকল্পে আর এক জায়গায় পুকুর খনন হচ্ছে। কিন্তু দেখা হচ্ছে না, কোথায় আগে সেচ-বাঁধ তৈরি করা জরুরি বা কোন এলাকায় সেচ-বাঁধ সংস্কার প্রয়োজন। ফলে একটি জায়গায় একাধিক কাজ হচ্ছে। আবার কোনও এলাকা একেবারেই বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে।”
এই সমস্যা কাটিয়ে সার্বিক উন্নয়নের জন্য চাই বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় সাধন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমাশাসক, বিডিও, জেলা পরিষদ, সেচ দফতর, কৃষি দফতর, পূর্ত দফতর, স্বাস্থ্য দফতর, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতর, পঞ্চায়েত দফতর, বন দফতর, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরপ্রতিটি দফতরেরই নিজস্ব উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে। তার মধ্যে সমন্বয় গড়ে কাজ করা জরুরি। কোথায় আগে রাস্তা প্রয়োজন, পানীয় জল বা সেচের ব্যবস্থা কোথায় জরুরি, কোথায় স্কুলে হস্টেল তৈরি করতে হবে সে সব বিচার করেই পরিকল্পনার রূপরেখা তৈরি করতে হবে। তা ছাড়া, জঙ্গলমহলের ভৌগোলিক অবস্থান আর পাঁচটা এলাকার থেকে আলাদা। কোথাও জঙ্গল, কোথাও টিলা, আবার কোথাও ঝর্না রয়েছে। বেশিরভাগ জমিই রুক্ষ্ম। সর্বত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। অনেক জায়গাতেই নেই দোকান-বাজার। দরিদ্র মানুষজন জঙ্গলের কাঠ-পাতা বিক্রি করে সংসার চালান। উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরির ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলিও নজরে রাখতে হবে। তা হলেই দীর্ঘ দিন বঞ্চনার আঁধারে পড়ে থাকা জঙ্গলমহলের প্রকৃত ও সার্বিক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। |
|
|
|
|
|