বানভাসি ঘাটালে নৌকাতেই প্রসব
ম্মতি ঘোড়ইয়ের বাড়ি ঘাটাল শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে চাউলিতে। প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে মঙ্গলবার রাত থেকেই বাড়িতেই ছটফট করছিলেন। কিন্তু রাতে নৌকার অভাব ও বন্যার জল পেরিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি ছিল। বুধবার সকাল হতেই নৌকায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা হয়। আর আসার পথেই নৌকায় সন্তানের জন্ম দেন সম্মতিদেবী। পরে তাঁকে ভর্তি করানো হয় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে এসে আরও এক সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, যমজ সন্তানের জননী সুস্থই রয়েছেন। সদ্যোজাতরাও ভাল আছে। সম্মতিদেবীর পরিবার সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে প্রসবযন্ত্রণা শুরু হয়। কিন্তু রাতে হাসপাতালে আনার কোনও উপায় ছিল না। একে নৌকার অভাব। তার পরে বাড়ির চারপাশে শুধু জল আর জল।
জলেই জীবন। বানভাসি ঘাটালে নৌকায় হাসপাতালের পথেই সন্তানের জন্ম। নিজস্ব চিত্র
আলো নেই। ওই অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যথেষ্ট ঝুঁকি হয়ে যেত। কোনও রকমে রাত পার করে সকালেই নৌকার খোঁজ শুরু হয়। নৌকা পেতেও প্রথমে সমস্যা হয়। পরে যখন নৌকা পাওয়া যেতেই আসন্নপ্রসবাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন পরিবাদের লোকজন। কিন্তু মহকুমা হাসপাতালের পথেই একটি সন্তানের জন্ম দেন সম্মতিদেবী।
ঘাটাল শহরের গড়প্রতাপনগরের বাপের বাড়ি তাঁর। স্বামী দিলীপ ঘোড়ই কর্মসূত্রে থাকেন দিল্লিতে। চাউলিতে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গেই থাকেন সম্মতিদেবী। ঘোড়ই দম্পতির একটি সাত বছরের ছেলে রয়েছে। ফোনে এ দিনের যমজ সন্তানের কথা জানানো হয় দিলীপবাবুকে। সম্মতিদেবীর শ্বশুর রতন ঘোড়ই বলেন, “মঙ্গলবার রাত থেকে খুবই চিন্তায় ছিলাম। নৌকা নেই, আলো নেই। জল আর জল। সকাল হতেই নৌকা পেয়ে বৌমাকে নিয়ে রওনা হই। কিন্তু পথেই নৌকায় একটি সন্তানের জন্ম হয়। পরে হাসপাতালে আর একটি। সবাই ভাল আছে।” ঘাটাল হাসপাতালে দুই সদ্যোজাতকে নিয়ে সম্মতিও বলেন, “সবাই ভাল আছি। বন্যার জল না কমলে বাচ্চাদের নিয়ে বাড়ি ফিরব না।”
এ দিকে বুধবারেও ঘাটাল মহকুমায় বন্যা পরিস্থিতি একই রকম। জল বেড়েই চলেছে শিলাবতী, ঝুমি, কংসাবতী-সহ মহকুমার নদীগুলিতে। জল সরেনি ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাস্তা থেকেও। ফলে এ দিনও সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। নৌকাই আপাতত যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু পর্যাপ্ত নৌকাও মিলছে না। ঘাটাল ব্লকের একাধিক পঞ্চায়েত এলাকা এখনও জলমগ্ন। অনেক জায়গায় ত্রাণ মিলছে না, পানীয় জলের জন্যও হাহাকার। কংসাবতীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত দাসপুরের শতাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের যে সবচেয়ে বেশি সমস্যা,তা মেনে নিয়ে ঘাটালের মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারী বলেন, “ঘাটালে ব্লক অফিস থেকেই সব জায়গায় ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। কিছু এলাকায় তবু সমস্যা রয়েছে। বিশেষত পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। প্যাকেট জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে দাসপুরের জলমগ্ন এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দাকেই উদ্ধার করে আশ্রয় শিবিরে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
Previous Story Medinipur Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.