|
|
|
|
কামাখ্যার অম্বুবাচী মেলায় রেকর্ড ভিড়ের সম্ভাবনা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কামাখ্যা |
শুরু হল কামাখ্যার অম্বুবাচী মেলা। আজ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে বন্ধ হল কামাখ্যা মন্দিরের দরজা। দেবী ‘রজস্বলা’ হওয়ায়, চার দিন বন্ধ থাকবে কামাখ্যার দরজা। নিত্য পূজার পরে রবিবার ভোরে ফের দরজা খুলবে। মেলা শুরুর আগে, এই প্রথম পারস্পরিক বিভেদ ভুলে একসঙ্গে ধর্মাচরণের জন্য কামাখ্যায় ধর্মধ্বজা প্রতিষ্ঠা করলেন নাগা সন্ন্যাসীরা।
নীলাচলে ওঠার চারটি পথ। পূর্ব দিক দিয়ে উঠলে অর্থলাভ, পশ্চিমে রাজ্যলাভ, উত্তর পথে মুক্তি লাভ ও দক্ষিণ দুয়ারে মৃত্যুলাভ হয়। বাস, গাড়ি, ট্রেকার ওঠার চলতি রাস্তা পূর্ব দিক দিয়েই। দলে দলে গেরুয়া, লাল, কালো কাপড় পরিহিত সাধু-সন্ন্যাসীরা মন্দিরের পথে। সেই সঙ্গে উপরমুখো মেদিনীপুর, হুগলি, কোচবিহার, বর্ধমানের হাজার হাজার মানুষ। গত বার অম্বুবাচীতে ১২ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়েছিল। এ বার রেকর্ড ভাঙবে বলেই মনে করেন দেবোত্তর ট্রাস্টের সম্পাদক নবকান্ত শর্মা।
কামাখ্যার মূল মন্দিরের পাশ কাটিয়ে, নমথ কালি মন্দিরের পাশ দিয়ে গিয়ে ‘ভিভিআইপি’ চত্বর। ছাইমাখা নাগা সন্ন্যাসীদের জটলা। বিরাট যজ্ঞবেদী। ভারতের সবচেয়ে পুরনো ‘নথিভুক্ত’ আখাড়া, জুনা আখাড়ার ছাউনি। নাগা সন্ন্যাসী, মধ্যমণি থানাপতি মহন্ত রঞ্জিতানন্দ গিরি মহারাজ। নাম যতটা বড় মানুষটার বড়াই ততটা নয়। সাদরে বসিয়ে জানালেন, নাগা সন্ন্যাসীদের সাতটি আখাড়ার এক হওয়ার গল্প। নিরঞ্জনি, আনন্দ, মহানির্বাণ, অগ্নি-সহ সাতটি সন্ন্যাসী-গোষ্ঠী মিলিয়ে মোট সাড়ে তিনশো নাগা সন্ন্যাসী কামাখ্যায় হাজির। গত কাল সাত মাথা এক হয়ে সিদ্ধান্ত নেন, ঝগড়া-বিবাদ অনেক হয়েছে। এ বার, একত্রে কামাখ্যা উৎসব পালন করবেন সকলে। প্রতিষ্ঠা হয় ধর্মধ্বজা। প্রতি বছরই এমনটা হবে বলে জানালেন রঞ্জিতানন্দ।
বহুরূপীর দল এ বারও বাংলা থেকে কামাখ্যার পাহাড়ে হাজির। হাজির যোগাসনে দড় বাপি গিরি। সংবাদপত্রে ছবি বের হওয়ার দৌড়ে রেকর্ড গড়ছেন জটা বাবা। তবে, এই বার মাটিতে নয়, তিন ধাপ পাটাতনের উপরে দাড়ি ঝুলিয়ে বসে তিনি। দাড়িতে টান লাগালেই খেউড়ের ফুলঝুরি।
ভিড় ঠেকাতে ও নাশকতা রোধে ইতিমধ্যেই সশস্ত্র বাহিনী মন্দির ঘিরে ফেলেছে। ৭০ জন অফিসারের নেতৃত্বে ৪টি ব্যাটালিয়নে শিবির খুলে ফেলেছে অসম পুলিশ। নীলাচল পাহাড় ঘিরে চলছে শেষ পর্যায়ের ব্যস্ততা। নিরাপত্তার জন্য ৬৪টি ক্লোজ্ড সার্কিট টিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে পাহাড়ে। কামাখ্যা ট্রাস্ট, এনসিসি, সিভিল ডিফেন্স, স্কাউট, ভারত সেবাশ্রম—সব মিলিয়ে স্বেচ্ছাসেবীদের হাতেই আপাতত নীলাচলের ভার। দেবত্তোর ট্রাস্ট ছাড়াও, ৩৫টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তীর্থযাত্রীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করছে। ফল দেবে আরও ১৪টি সংগঠন। পুরসভার তরফে ২০০ জন সাফাই কর্মী, ২০০টি কল, ব্লিচিং পাউডার, ২টি ডাম্পার, ২০০টি অস্থায়ী শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। ট্রাস্টের তরফেও থাকছে ২১৫টি শৌচালয়। দমকলের দুটি গাড়িও মোয়াতেন থাকছে। |
|
|
|
|
|