|
|
|
|
নিশানায় চিদম্বরম, বিজেপি তদন্ত চায় আড়ি পাতা নিয়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দফতরে ‘নজরদারি’র ঘটনাকে কংগ্রেস যতই উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুক, বিজেপি বিষয়টিকে হাতছাড়া করতে নারাজ। বরং এ নিয়ে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং পি চিদম্বরমের মধ্যে ‘বিবাদ’কে উস্কে দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগার কৌশল নিচ্ছে।
লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ আজ সাংবাদিক বৈঠকে চিদম্বরমের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেন, “কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (আইবি) চুইং গামের যে তত্ত্ব দিচ্ছে, তা রীতিমতো হাস্যকর। চুইং গামের এতই বুদ্ধি যে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থেকে শুরু করে তাঁর উপদেষ্টা ও ব্যক্তিগত সচিবের ঘরে টেবিলের নীচে গিয়ে আটকে যায়!” আমেরিকার ‘ওয়াটারগেট’ কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ টেনে সুষমা বলেন, “ওই ঘটনায় ষড়যন্ত্র হয়েছিল বিরোধীদের বিরুদ্ধে। ইস্তফা দিতে হয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। এখানে ব্যাপারটা খোদ অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত
হওয়া প্রয়োজন।”
সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ জনতা পার্টির সভাপতি সুব্রহ্মণ্যম স্বামী আরও এক ধাপ এগিয়ে সরাসরিই আক্রমণ করেন চিদম্বরমকে। তাঁর অভিযোগ, “আড়ি পাতার ছোট্ট যন্ত্র লাগানোর জন্য এ ধরনের আঠা গোয়েন্দা সংস্থাগুলিই ব্যবহার করে। যাতে প্রয়োজন অনুসারে ছোট ক্যামেরা বা ওয়্যারলেস মাইক্রোফোন বসানো বা সরিয়ে নেওয়া যায়। আমার কাছে খবর রয়েছে, চিদম্বরমের নির্দেশেই এই কাজ করা হয়েছে।” বিজেপি নেতৃত্বের সুরেই স্বামী অভিযোগ করেন, “ঘটনাটি নজরে আসার পরে অর্থমন্ত্রী সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করে তদন্ত করাতে পারতেন। তিনি সেটি করেননি।” বিজেপি-র প্রকাশ জাভড়েকরও বলেন, “আইবি-র উপরে ভরসা ছিল না বলেই অর্থমন্ত্রী প্রথমে নিজের দফতরের মাধ্যমে বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করিয়েছেন। যথাযথ প্রমাণ পাওয়ার পরে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নয়, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তদন্ত করার আর্জি জানিয়েছেন। এতেই স্পষ্ট যে, দুই শীর্ষ মন্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাসের অভাব রয়েছে। উভয়ের মধ্যে বিবাদও রয়েছে।”
বিজেপি-র এই আক্রমণ সত্ত্বেও প্রণববাবু ঘটনাটিকে আমল দিচ্ছেন না। আজ ফের এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই সব আজগুবি ব্যাপারে সময় নষ্ট করে লাভ নেই।” কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্তী নটরাজনও বলেন, “পরের পর এক নির্বাচনে হেরে হতাশায় ভুগছে বিজেপি। অন্তর্কলহ ধামা চাপা দিতেই কংগ্রেসকে আক্রমণ করে যাচ্ছে। খোদ অর্থমন্ত্রীই ভিত্তিহীন বলেছেন ঘটনাটিকে। দলের তরফেও আর কিছু বলার নেই।” মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যেও কোনও বিবাদ নেই বলে দাবি করেন জয়ন্তী। উড়িয়ে দেন নতুন করে তদন্তের সম্ভাবনাও।
কংগ্রেসের সাফাইয়ে অবশ্য আদৌ সন্তুষ্ট নয় বিজেপি। টু-জি থেকে গ্যাস দুর্নীতি, পরের পর বিভিন্ন প্রসঙ্গেই বিজেপি গত কিছু দিন ধরে চিদম্বরমকে আক্রমণের নিশানা করে যাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রকে আড়ি পাতার অভিযোগও এখন তাদের নতুন অস্ত্র। তাই চিদম্বরমে বিঁধে দলের এক শীর্ষ নেতা মনে করিয়ে দেন, নরসিংহ রাও ও রাজীব গাঁধীর সময়েও এমন ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল। ১৯৮৫ সালে রাজীবের সময় আড়ি পাতার দায়ে মানিকলাল নামে এক ব্যক্তির ১৮ বছর জেলও হয়। তা-ও ১৭ বছর শুনানির পর। |
|
|
|
|
|