|
|
|
|
খড়ের আকাল, বিপাকে বাসিন্দারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাজনগর |
বর্ষা ঢোকার আগেই জীর্ণ খড়ের চালের বাড়িগুলি নতুন করে সংস্কার করে নেওয়াটাই রীতি। তা না হলে বৃষ্টির জল খড়ের চাল ভেদ করে গৃহস্থকে সমস্যায় ফেলবে। কিন্তু সেই খড়ের অভাবই বেশি ভোগাচ্ছে রাজনগর ও খয়রাশোল ব্লকের গরিব মানুষদের। কারণ, গতবার সে ভাবে বৃষ্টি না হওয়ায় সামান্য জমিতে চাষ হয়েছিল।
এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, যে পরিমাণ খড় মিলেছিল, তা গবাদিপশুর খাবারের জন্য যথেষ্ট ছিল না। তার উপরে এ বার একটানা বৃষ্টি হওয়ায় সমস্যা আরও বেড়েছে।
রাজনগরের ইসবপুরের পবিত্র বাউরি, চন্দ্রপুরের সোহাগী হেমব্রম বা খরয়াশোলের পলাশবুনির সুলেখা ঘোষ, বাবুইজোড়ের দীপক গড়াইদের বক্তব্য এক। তাঁদের কথায়, “এমনিতে আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। বর্ষার আগে এলাকার কারও কাছ থেকে খড় কিনে বা চেয়ে এনে চাল ছাইয়ে নিই। কিন্তু এ বার খড়ই পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও কিছু খড় গাড়িতে করে বাইরে থেকে আসছে, তা দাম এত বেশি, আমাদের কেনার ক্ষমতা নেই। তাই বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে পঞ্চায়েত বা ব্লকের স্মরণাপন্ন হচ্ছি।” তাঁরা জানান, গত বছর যে খড় তাঁরা ১৫ টাকায় কিনেছেন, এ বার ৬০ টাকা দিলেও তা মিলছে না।
এলাকায় খড়ের অভাব সত্যিই সমস্যায় ফেলেছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন, খয়রাশোলের বাবুইজোড় পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস ঘোষ এবং রাজনগরের চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুকুমার সাধু। তাঁরা বলেন, “এ বার শুরুতেই যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, প্রচুর মানুষ ত্রিপলের আশায় পঞ্চায়েতে আসছেন। কারণ, একটাই এলাকায় খড় পাওয়া যাচ্ছে না।” সুকুমারবাবু বলেন, “পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে, শুধু আমার পঞ্চায়েত এলাকায় ৮০০-১০০০ ত্রিপল দরকার। কিন্তু কোথায় পাব।” আর তাপসবাবুর বক্তব্য, “পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে আপাতত ২০ হাজার মোটা প্লাস্টিক কিনে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।” খয়রাশোলের যুগ্ম বিডিও সম্বল ঝা’ও বলছেন, “এ বার এমন কিছু পরিবার ত্রিপলের জন্য ব্লক অফিসে আবেদন জানিয়েছেন, যাঁরা আগে কোনও দিন আবেদন করেননি। কারণ, পয়সা দিয়ে খড় মিলছে না বা মিললেও তা পর্যাপ্ত নয়। এই অবস্থার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” |
|
|
|
|
|