|
|
|
|
রাস্তা নেই, নোংরা জল ডিঙিয়ে যাতায়াত পড়ুয়াদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সাঁইথিয়া |
স্কুলে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। তবে সেটি কোনও মোরাম কিংবা পাকা নয়। জায়গাটি নীচু। তাই বৃষ্টি শুরু হলেই সাঁইথিয়া পুর-শহরের বাসিন্দাদের চিন্তা বেড়ে যায়, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাবেন কী করে? স্কুলটি সাঁইথিয়া ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে। রুবিরানি সিংহ প্রাথমিক স্কুলে যাওয়ার জায়গাটি উঁচু না হওয়ায় বর্ষায় নোংরা জলে ভরে যায়।
বছরভর ওই রাস্তা দিয়েই স্কুলে যেতে হয় পুর-শহরের পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের। কষ্ট হলেও বৃষ্টিতে হাঁটু সমান নোংরা জল ডিঙিয়ে যেতে হয় তাঁদের। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ছোট ছোট পড়ুয়াদের। ভরা বর্ষায় তাদের বুক বা কোমর সমান জল দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। তখন অভিভাবকেরা তাদের কোলে করে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। |
|
ছবি: অনির্বাণ সেন। |
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর বারো আগে প্রয়াত ইরানি সিংহ এবং তাঁর স্বামী স্কুলের জন্য জায়গা দিয়ে ঘরও তৈরি করে দিয়েছিলেন। পরে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় স্কুল গৃহের শ্রীবৃদ্ধি হয়। ১৬৮ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ১২৫-১৩০ জন উপস্থিত থাকে। বৃষ্টির সময়ে উপস্থিতির হার কমে যায়। সম্প্রতি স্কুলে গিয়ে দেখা যায় মাত্র ৯০ জন পড়ুয়া উপস্থিত ছিল। তাও অনেককে বাড়ি থেকে ডেকে আনতে হয়েছে। দুই শিক্ষিকা-সহ মোট পাঁচ জন শিক্ষক আছেন। এক জন প্রতিবন্ধী শিক্ষকও আছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নীহারিকা সাহা বলেন, “স্কুলে যাতায়াতের জন্য আজ পর্যন্ত কোনও রাস্তা তৈরি হয়নি। স্কুলের সামনে অন্যের জায়গা দিয়ে বারোমাস যাতায়াত করতে হয়। ব্যক্তিগত মালিকানার জায়গা হওয়ায় অনেকে প্রাতঃকর্মও করেন। অন্য সময় তাও কষ্ট করে নোংরা ডিঙিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা, পড়ুয়ারা স্কুলে আসি। কিন্তু বর্ষায় অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে।” প্রধান শিক্ষিকার অভিযোগ, “পুরকর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে বহুবার বলা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।” স্থানীয় বাসিন্দা কাকলি মণ্ডলের কথায়, “স্কুলের সামনের রাস্তার উল্টো দিকেই আমাদের বাড়ি। মেয়ে সুরভি ওই স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। বর্ষায় সময় নোংরা জল পার হয়ে স্কুলে যাওয়া কষ্টের। কয়েক দিন একটু ব্যস্ত থাকায় মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যেতে পারিনি।” স্কুলের সামনে ওই নোংরা জল জমে থাকার কারণে ছেলে কাঞ্চনকে স্কুলে পাঠান না তার বাবা জীতেন দাস। তিনি বলেন, “ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। এমনিতে সে অসুস্থ। তার উপরে ওই নোংরা জল ডিঙিয়ে স্কুলে পাঠিয়ে ছেলে আরও অসুস্থ হোক!” আর এক অভিভাবক অজিত দাস বলেন, “ছেলে নবীনের যদি চামড়ার রোগ হয় সেই ভয়ে স্কুলে পাঠাই না।”
কাউন্সিলর সিপিএমের উত্তম সিংহ বলেন, “ওখানে স্কুল করা ঠিক হয়নি। তবে স্কুলের সামনে যাঁদের জায়গা তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছে স্কুলের রাস্তার প্রয়োজনে কিছুটা জায়গা ছেড়ে দেওয়া। তা ছাড়া, স্কুলের পিছনে একটি আট ফুটের রাস্তা আছে। আপাতত পিছনে স্কুলে ঢোকার একটি গেট করে দেওয়া হবে।” পুরপ্রধান, কংগ্রেসের বীরেন্দ্রকুমার পারখ বলেন, “পুরকর্তৃপক্ষ বা ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সেই অভিযোগ ঠিক নয়। আমরা নানা ভাবে চেষ্টা চালিয়ে আসছি।” |
|
|
|
|
|