বাম সরকারের গাফিলতিতে রাজ্যের তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রায় এক লক্ষ শংসাপত্রের আবেদন জমা পড়ে রয়েছে বলে আজ কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ জানালেন রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। দিল্লিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রকের বৈঠকে ওই অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এর ফলে ওই ব্যক্তিরা সমস্ত ধরনের সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।” আজ দিল্লিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রকের বৈঠকের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ওই বৈঠকে রাজ্যের পক্ষ থেকে বলতে গিয়ে উপেন বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘ অবহেলার কারণে রাজ্যের পিছিয়ে থাকা এলাকার হাসপাতাল ও স্কুলগুলির পরিকাঠামো একেবারে ভেঙে পড়েছে। অবিলম্বে সেগুলির ভোল পাল্টাতে কেন্দ্রের কাছে বড় মাপের আর্থিক সাহায্য দাবি করেন তিনি। তবে এর জন্য কত অর্থ প্রয়োজন সে নিয়ে আজ কিছু জানাতে চাননি উপেনবাবু। তিনি শুধু বলেন, “সমীক্ষা চলেছে। তার পরেই জানা যাবে কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন।” পাশাপাশি রাজ্যের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির যে ছাত্রছাত্রীরা চলতি বছরে উচ্চ মাধ্যমিকে ৭০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন, তাদের একটি অনলাইন তালিকা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপেনবাবুর মন্ত্রক। আগামী দিনে ওই ছাত্রছাত্রীরা যাতে অর্থ বা সুযোগের অভাবে উচ্চশিক্ষার আঙিনা থেকে না সরে, তার জন্য তাঁদের সমস্ত ধরনের সাহায্য দেওয়া হবে। |
শাসক পক্ষের কিছু বিধায়ক শুক্রবারেও তুমুল হইহল্লা চালিয়ে যান বিধানসভায়। বিরোধীরা বলতে শুরু করলেই নানা ছুতোয় তাঁদের বাধা দিতে থাকেন তাঁরা। এমনকী যখন সিপিএম বিধায়ক বাসুদেব মেটে বলতে উঠে স্পিকারের কাছে নিজের ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছেন, তখনও সরকার পক্ষের বিধায়কেরা চিৎকার করে তাঁকে বাধা দেন। বর্ধমানের আউসগ্রামের ওই বিধায়ক বলেন, “আমি স্পিকারের কাছে নিরাপত্তা চাইছি। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে আমি বাড়িতে থাকতে পারছি না।” এ দিন সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রাজ্যপালের বক্তৃতার উপরে ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাব নিয়ে বলতে উঠে বিরোধী দলনেতাও বারবার বাধার মুখে পড়েন। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র তাঁর বক্তৃতা থামিয়ে কয়েক বার বসে পড়েন। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বারবার সরকার পক্ষের বিধায়কদের থামানোর চেষ্টা করেন। কাজ বিশেষ হয়নি। প্রায় প্রত্যেক বিরোধী বিধায়ককেই বক্তব্য পেশের সময় সরকার পক্ষের বিধায়কদের বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়। মাঝেমধ্যে চিৎকার-চেঁচামেচিতে প্রেস গ্যালারি থেকে কোনও পক্ষের কোনও কথাই স্পষ্ট শোনা যায়নি। |
রাজ্যে বিধান পরিষদ গঠন করার প্রস্তাব নিয়ে ২৮ জুন বিধানসভায় আলোচনা হবে বলে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার জানান। তিনি জানান, ২৪ জুন বেলা আড়াইটেয় ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’ পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ২৭ জুন ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’ নিয়ে ৪ ঘণ্টার আলোচনা হবে। ২৮ জুন ব্যয় অনুমোদন বিল নিয়েও কথা হবে। বিধানসভা সূত্রের খবর, ১৯৬৯ সালে এই রাজ্যে বিধান পরিষদ তোলা হয়। নতুন করে বিধান পরিষদ গঠন করতে হলে বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করতে হবে। সেই প্রস্তাবটি আবার লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ করাতে হবে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায়। তা হলেই বিধান পরিষদ গঠন করা সম্ভব। সাত জন বিধায়ক-পিছু এক জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। |