|
|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
সংশয়
থাকিলেই
ভাল হইত |
বইপোকা |
অভিজ্ঞজন মানিবেন, ‘সংশয়তিমির মাঝে না হেরি গতি হে...।’ এই দশায় না পড়িলে সম্পাদকের হাত হইতে সু-গ্রন্থ প্রস্তুত হইতে পারে না। সংশয়ই আমাদিগকে নূতন তথ্যের পথে আগাইয়া দিতে পারে। ইহা মনে হইল বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগের জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত সচিত্র পাণ্ডুলিপি সংবলিত রবীন্দ্রসংগীত স্বরলিপি (সম্পাদনা দেবাশিস রায়) গ্রন্থটি লইয়া। না রবীন্দ্রসংগীত লইয়া সংশয় নাই, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ-কৃত স্বরলিপি লইয়াও নহে। সংশয় ‘সচিত্র পাণ্ডুলিপি’ লইয়া। আটটি রবীন্দ্রসংগীত এবং একটি রবীন্দ্রসুরারোপিত বিদ্যাপতি-গীতি অবলম্বনে যে নয়টি পেন্সিল-স্কেচ এই গ্রন্থে মুদ্রিত তাহাদের শিল্পী কি সত্যই জ্যোতিরিন্দ্রনাথ?
শিল্পীর স্বাক্ষর একটিতেও নাই। জ্যোতিরিন্দ্রনাথের যে ধরনের মুখাবয়ব এবং শিরোচিত্র পরিচিত, তাহার সহিতও চিত্রগুলি মিলিতেছে না। চিত্রগুলি বিশ্বভারতী রবীন্দ্রভবনে আসে জ্যোতিরিন্দ্রনাথের রাঁচির গৃহ হইতে। ইন্দিরা দেবীচৌধুরাণী লিখিতেছেন, ‘...গৃহবাসীর সঙ্গে গৃহও মৃত হয়েছে। নতুন কাকিমার একটি নিজ হাতে আঁকা পেন্সিলের ছবিই সেই ঘরের সজ্জা ছিল।’ নতুন কাকিমা অর্থে কাদম্বরী দেবী। তবে কি চিত্রগুলি তাঁহার আঁকা? ছবিগুলি বেশির ভাগই হিন্দু দেবদেবীর। কাদম্বরী হিন্দু ভাবাপন্ন শ্যামলাল গঙ্গোপাধ্যায়ের কন্যা। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ব্রাহ্ম। সেই বিবেচনাও এমন অনুমানে কিয়দংশ সমর্থন করিতে পারে। কিন্তু এ সকলই অনুমান। ছবিগুলি জ্যোতিরিন্দ্রনাথেরই আঁকা ইহাও অনুমান, তাহারই ভিত্তিতে গ্রন্থপ্রকাশ না করিয়া, আরও একটু অনুসন্ধান করিলে বাহির হইতে পারিত অন্য কোনও দিগন্ত। তাই বলিতেছিলাম, কিছু ক্ষেত্রে সংশয়ই আলো দেখায়, সিদ্ধান্ত অন্ধকার। |
|
|
|
|
|