|
|
|
|
৩০টি ট্রলারের খোঁজ নেই, আজ নামছে নৌবাহিনী |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিল ৩৩টি ট্রলার। তার মধ্যে ৩০টি ট্রলারের কোনও খোঁজ মিলছে না। সেগুলিকে খুঁজতে বিশাখাপত্তনম থেকে নৌবাহিনীর বিশেষ একটি দল আসছে। হলদিয়া থেকে আসছে উপকূলরক্ষী বাহিনীর একটি দলও।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মহাকরণে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব ইন্দিবর পাণ্ডে বলেন, ৩৩টি ট্রলারই বৃহস্পতিবার সমুদ্রে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। মাত্র তিনটির খোঁজ মিলেছে। তার মধ্যে দু’টি ফিরে আসছে। অন্যটি বাংলাদেশের ফতুয়াখালিতে চলে গিয়েছে। সেটিকে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষের। পাণ্ডে বলেন, উদ্ধারকারী দলগুলি হোভারক্রাফট, ডুবুরি ও বিমানের সাহায্য নেবে। তবে দুর্যোগের জন্য নৌবাহিনী বা উপকূলরক্ষী বাহিনী এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সমুদ্রে নামতে পারেনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, খারাপ আবহাওয়ার জন্য নিখোঁজ ট্রলারগুলির মৎস্যজীবীদের সঙ্গে অয়্যারলেসের মাধ্যমেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। |
 |
যে ট্রলার ডুবে মারা গিয়েছিলেন গোপাল দাস, শুক্রবার সেটি ফিরে
আসে। কাকদ্বীপের অক্ষয়নগরে ছবিটি তুলেছেন দিলীপ নস্কর। |
যে-সব মৎস্যজীবী নিখোঁজ, তাঁদের অধিকাংশই কাকদ্বীপের অক্ষয়নগর ও কালীনগরের বাসিন্দা। বেসরকারি সূত্রের খবর, ছোট ইলিশ মাছ নিয়ে ন’টি ট্রলার ফিরে এসেছে। কিন্তু ছোট ইলিশ ধরার জন্য পুলিশ গ্রেফতার করবে, এই ভয়েই তারা ঘরে ফিরছে না। তারা নামখানার দিকে চলে গিয়েছে।
এ দিকে, সরকারের পক্ষ থেকে গভীর নিম্নচাপের আগাম সতর্কবার্তা বৃহস্পতিবার রাতেও তাদের কাছে পৌঁছয়নি বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন অভিযোগ জানিয়েছে। সংগঠনগুলি বলছে, নিম্নচাপের সতর্কবার্তা তারা পেয়েছে বাংলাদেশ রেডিও মারফত। দু’বছর আগে, আয়লার সময়েও বাংলাদেশ রেডিওর মাধ্যমেই তাঁরা দুর্যোগের আগাম খবর পেয়েছিলেন বলে মৎস্যজীবীরা জানান।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক নারায়ণস্বরূপ নিগম অবশ্য ধীবরদের অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “মৎস্যজীবীদের প্রতিটি সংগঠনের কার্যালয়েই নিম্নচাপের আগাম সতর্কবাতা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল।” মৎস্যজীবী সংগঠনগুলি জানিয়েছে, আলিপুরের জেলা সদর থেকে কখন সতর্কবার্তার চিঠি এসে পৌঁছবে, তা তাদের আগে থেকে জানানো হয় না। তাদের পক্ষে কাজ ছেড়ে সংগঠনের কার্যালয়ে সব সময় বসে থাকাও সম্ভব নয়। তাই ও-ভাবে চিঠি পাঠিয়ে সতর্কবার্তা দেওয়ার পদ্ধতিতেও তাদের আপত্তি রয়েছে। জেলাশাসক জানান, চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি এ বার থেকে মাইকের মাধ্যমে সতর্কবার্তা জানানো হবে বিভিন্ন নদীঘাটে।
অন্য দিকে, দিঘা মোহনা থেকে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেওয়া চারটি ট্রলারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না বৃহস্পতিবার। এ দিন সেগুলির খোঁজ মিলেছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এর মধ্যে মা চলন্তিকা নামে ট্রলারটি নামখানার কাছে আশ্রয় নিয়েছে। মা বাসন্তী, প্রিয়াঙ্কা ও পঞ্চপ্রিয়া নামে বাকি তিনটি ট্রলার সাগরদ্বীপ থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে গভীর সমুদ্রে বিকল হয়ে আটকে রয়েছে। ওই তিনটি ট্রলারে অন্তত ৩৫ জন মৎস্যজীবী রয়েছেন। দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাসের অভিযোগ, “ওই মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করার জন্য হলদিয়া উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে বারবার আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি।” জেলা প্রশাসন সূত্রে বলা হয়, খারাপ আবহাওয়ার জন্য এ দিন উপকূলরক্ষী বাহিনী সমুদ্রে নামতে পারেনি। আজ, শনিবার থেকে তারা তল্লাশি চালাবে। |
|
|
 |
|
|