|
|
|
|
সড়ক গড়তে ১৪০ কোটি মুর্শিদাবাদে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
আড়াইশো কিলোমিটার সড়ক গড়তে মুর্শিদাবাদ জেলাকে ১৪০ কোটি টাকা দিল নাবার্ড। জেলায় ৩৯টি গ্রামীণ লাল মোরাম ও মাটির কাঁচা রাস্তাকে পিচ সড়ক বানাতেই এই অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। এর ফলে জেলার অন্তত ২২০টিরও বেশি গ্রামের মানুষ সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সুফল পাবেন।
কিন্তু তার কৃতিত্ব কাদের, তা নিয়েই এখন শুরু হয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেসের মধ্যে রাজনৈতিক কাজিয়া। বর্তমান জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ সিংহরায়ের দাবি, “৩৯টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার জন্য সুপারিশ করে বামফ্রন্ট নিয়ন্ত্রিত বর্তমান জেলা পরিষদই। রাজ্যের পূর্বতন সরকার তা মেনে নাবার্ডের কাছে পাঠায় বরাদ্দ অনুমোজনের জন্য। তার ভিত্তিতেই এই সব রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হতে চলেছে।” অন্য দিকে জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের বাণী ইস্রাইল বলেন, “এই পরিকল্পনা ছিল পূর্বতন জেলা পরিষদের, যা ছিল কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণাধীন। বিগত রাজ্য সরকার স্রেফ তার দায়িত্ব পালন করেছে মাত্র।” বিগত বামফ্রন্ট সরকার জেলা পরিষদের সেই প্রস্তাবকে নাবার্ডের কাছে পাঠায়। তিনি জানান, এর মধ্যে একাধিক রাস্তা হয়েছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডোমকলের কুপিলা থেকে কাটাফোপড়া, সাদিখানদিয়াড় থেকে ফকিরাবাদ, রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লকের বাদশাহী সড়কের জরুর থেকে রমনা হয়ে বেনেপুকুর। তিনি বলেন, “প্রণব মুখোপাধ্যায়কেও আমরা বলেছিলাম। তিনিও এই ব্যাপারে সুপারিশ করেছেন। আর তার ফলেই এই টাকা পেয়েছে মুর্শিদাবাদ।”
জেলা পরিষদের নিজস্ব সড়কপথ রয়েছে ২১৮৮ কিলোমিটার। এছাড়াও পঞ্চায়েতের রাস্তার পরিমাণ ৫১৩৮ কিলোমিটার। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের অতিরিক্ত কার্যনির্বাহী আধিকারিক সুজয় সরকার বলেন, “নাবার্ডের আরআইডিএফ ১৬ খাতে এই ১৪০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। জেলায় সড়ক নির্মাণে এত অর্থ আগে কখনও পাওয়া যায়নি নাবার্ডের কাছ থেকে। স্বভাবতই এর ফলে বহু এলাকার আর্তিক পরিকাঠামো উন্নত হবে। সড়ক পথে বাস সহ যাবতীয় যানবাহন সহজে চলাচল করতে পারবে। যোগাযোগ সহজ হলে পণ্য পরিবহণও বাড়বে। এটা তো খুশির খবর বটেই।” তিনি বলেন, “জেলা পরিষদের এজেন্সি হিসেবে এই প্রাপ্ত অর্থ নিজেদের হেফাজতে রেখেছে। সে ক্ষেত্রে জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকল, বাজেট হল কি হল না, স্থায়ী সমিতিতে কে আসবেন যাবেন, ৩৯টি সড়ক নির্মাণে তা কোনও বাধা হবে না। ইতিমধ্যেই প্রথম দফায় ৬টি ও দ্বিতীয় দফায় আরও ১৪টি রাস্তা তৈরির টেন্ডারও গ্রহণ করে কাজ শুরুর আদেশ জারি হয়েছে। ১৯টি সড়কের টেন্ডারও ডাকা হয়েছে। সোমবার টেন্ডারের ওয়ার্ক অর্ডারও দিয়ে দেওয়া হবে।” তিনি বলেন, “তবে জেলায় সড়ক উন্নয়নে এখনও দরকার অন্তত ১০০০ কোটি টাকা।” সুজয়বাবু বলেন, “তবে এখন বর্ষা নেমে গিয়েছে। মাটি পাওয়ার সমস্যা হবে। কাজও ঠিক মতো হবে না। তাই ঠিকাদারদের বলে দেওয়া হবে বর্ষার পরে এবং পুজোর আগে কাজ শুরু করতে।”
এই প্রকল্পে অন্তত ৪৮ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হচ্ছে ডোমকলে। সেখানে ৬টি রাস্তার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৪.৭৭ কোটি টাকা। পাশাপাশি জঙ্গিপুর মহকুমার ৭টি ব্লকের মধ্যে ৬টি ব্লকের একটি রাস্তাও অনুমোদন পায়নি। তবে সাগরদিঘিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৪টি সড়ক রয়েছে এই তালিকায়। গোপালদিঘি মোড় থেকে পলষণ্ডা ১৩ কিলোমিটার, চন্দনবাটী থেকে পুরাডাঙা হল্ট স্টেশন পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার এবং দিয়ারা মসজিদ থেকে মালিপাড়ার ১২ কিলোমিটার সড়ক পথগুলি রয়েছে এর মধ্যে। প্রায় ৬০টি গ্রামের মানুষ উপকৃত হবেন এই সড়কগুলির উন্নয়নে। সাগরদিঘির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা জরুর থেকে বন্যেশ্বর হয়ে বেলেপুকুর ১৪.৩৮ কিলোমিটার রাস্তাটি। সব মিলিয়ে সাগরদিঘির জন্য বরাদ্দ ৩০ কোটি ৭৫ লক্ষ, যা জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি। জরুরের বাদশাহী সড়কটি অসম্পূর্ণ পড়ে রয়েছে। রাস্তাটি বীরভূমের লোহারপুরের ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে গিয়ে মিশেছে। ফলে বীরভূমে যাওয়ার রাস্তা কমবে। |
|
|
|
|
|