বঙ্গ ভবনের ঠান্ডা-যন্ত্র লাল থেকে হল নীল
ছিল লাল, হয়ে গেল নীল! রুমাল বা বেড়াল নয়। বঙ্গভবনের রেফ্রিজারেটর।
কোনও সরকারি হুকুম নেই। কোনও লিখিত নির্দেশিকা নেই। তবু বঙ্গভবনের পাঁচ তলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য নির্দিষ্ট ঘরে রেফ্রিজারেটরের রং বদলে গেল।
কারণ? নতুন মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। অতএব ‘লাল’ যা কিছু, করো বিদায়। শনিবার রাতে দিল্লি আসার কথা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শেষ মুহূর্তের খবর, শনিবারের বদলে সম্ভবত সোমবার আসবেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর এই প্রথম। দিল্লিতে এসে অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় ও যোজনা কমিশনের উপাধ্যক্ষ মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়ার সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। সেই জন্যই সাজো সাজো রব হেইলি রোডের রাজ্য সরকারের অতিথিশালায়। মুখ্যমন্ত্রী যে বঙ্গভবনে উঠবেন, এমন কোনও বার্তা অবশ্য মহাকরণ থেকে বঙ্গভবনে এসে পৌঁছয়নি। দিল্লিতে নিযুক্ত রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা এখনও পর্যন্ত যা ইঙ্গিত পেয়েছেন, তা হল অন্যান্য বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী বাবা খড়ক সিংহ মার্গের সেই এমএস ফ্ল্যাটসের পাঁচ তলার ঘরেই উঠবেন। কিন্তু সাবধানের মার নেই! বঙ্গভবনে না থাকলেও তিনি যে সেখানে গিয়ে হাজির হবেন না, তা কে বলতে পারে। ঝুঁকি না নিয়ে তাই মুখ্যমন্ত্রীর ঘর যতটা সম্ভব ‘ঝাড়পোঁছ’ করে রাখা হচ্ছে।
বঙ্গভবনের কর্মীরা বলছেন, এই ‘ঝাড়পোঁছে’ যতটা না আবর্জনা সরানোর দিকে নজর, তার থেকে বেশি নজর বিগত সরকারের সব রকম চিহ্ন মুছে ফেলার দিকে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বরাবর বঙ্গভবনে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য নির্দিষ্ট ঘরেই থেকেছেন। শেষ বার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে এসেও পাঁচ তলার ৪০৮ নম্বর ঘরেই ছিলেন তিনি। সাফাই-কর্মীদের কাছে নির্দেশ গিয়েছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নাম লেখা কোনও প্যাড, লেটারহেড বা অন্য কোনও সরকারি কাগজপত্রের চিহ্ন যাতে না থাকে। বৈঠকখানা বা শোওয়ার ঘর তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখা হয়েছে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য মহাকরণ থেকে তড়িঘড়ি নতুন মুখ্যমন্ত্রীর প্যাড, লেটারহেডও আনানো হয়েছে।
কিন্তু রেফ্রিজারেটরের রং বদলে গেল কেন? রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা বলছেন, পুরনো রেফ্রিজারেটরটি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই জন্যই সেটি বদলানো হয়েছে। তবে নতুন রেফ্রিজারেটর কেনার সময় ‘অলিখিত নির্দেশ’ গিয়েছিল, যে কোম্পানিরই হোক না কেন, লাল রং আর নয়। মমতার শপথ গ্রহণের সময় কার্পেট থেকে শুরু করে মণ্ডপে যে লালের বদলে সবুজেরই আধিক্য ছিল, সে কথা মাথায় রেখেছিলেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে হালকা নীল রঙের রেফ্রিজারেটর বসেছে। বঙ্গভবনের পাশাপাশি দিল্লির সার্কুলার রোডে রাজ্য সরকারের একটি নতুন অতিথিশালা হচ্ছে। কয়েক মাসের মধ্যেই সেটি তৈরি হয়ে যাবে। মুখ্যমন্ত্রী চাইলে সেটিও দেখাতে নিয়ে যাবেন রাজ্যের অফিসাররা। দিল্লিতে রাজ্য সরকারের দু’টি অফিস। একটি কনট প্লেসে রেসিডেন্ট কমিশনারের অফিস, অন্যটি গোল মার্কেটে রাজ্য সরকারের তথ্য-সংস্কৃতি কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে কখনও খাদ্য ভবন, কখনও দমকল ভবন, কখনও বা নন্দন-প্রাঙ্গণে গিয়ে হাজির হচ্ছেন, তাতে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে এসেও একই কাণ্ড ঘটাতে পারেন বলে রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা ‘আশঙ্কা’ করছেন। সেই জন্য ওই অফিসগুলিতেও সরকারি কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তথ্য-সংস্কৃতি কেন্দ্রের গায়েই আবার সিপিএমের সদর দফতর একেজি ভবন। মুখ্যমন্ত্রী এক বার প্রকাশ কারাটের দফতরের দিকেও উঁকি দেবেন কি না, সেই নিয়েও গুঞ্জন সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতার অপেক্ষায় রয়েছেন নবকুমার মিস্ত্রি, অসিতকুমার জানা-রাও। দিল্লির শিল্পী হাটে পশ্চিমবঙ্গ হস্তশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। সেখানেই পাথরের থালা-বাটি নিয়ে হাজির পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলপাহাড়ির নববাবু। এক দিকে মাওবাদীদের দৌরাত্ম্য, অন্য দিকে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কাজকর্ম শিকেয় উঠতে বসেছে। মুখ্যমন্ত্রী মেলা দেখতে এলে সেই সমস্যার কথা শোনাতে চান নবকুমার মিস্ত্রি।
First Page Desh Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.