|
|
|
|
স্বশাসিত সংস্থার পদে আমি থাকব না: গুরুঙ্গ |
নিজস্ব সংবাদদাতা• শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং |
পাহাড়ে প্রস্তাবিত স্বশাসিত সংস্থায় কোনও পদে থাকবেন না বলে জানালেন বিমল গুরুঙ্গ। পাশাপাশি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার যে অংশ স্বশাসন-প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে তাদের বোঝানো এবং প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় অনুশাসন মেনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও বার্তা দিলেন।
মঙ্গলবার দার্জিলিঙের জিমখানা ক্লাবে দলের সমস্ত শাখা সংগঠনের সভায় মোর্চা সভাপতি বলেন, “স্বশাসন পেলে আমি কোনও পদে থাকব না। আমি গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাব। স্বশাসন পরিচালন ব্যবস্থায় ৬০-৭০ শতাংশ পদে থাকবেন মহিলারা। কারণ, এত দিন সমস্ত আন্দোলনে মহিলারাই অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন।”
গুরুঙ্গ বলেন, “আমাদের হৃদয়ের দাবি গোর্খাল্যান্ড। সেই দাবি থেকে আমরা সরছি না। কিন্তু টানা তিন বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে পাহাড়বাসী ক্লান্ত। এখন স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরানো জরুরি। সে জন্য আপাতত স্বশাসন নেওয়া হচ্ছে, যাতে পাহাড়ের উন্নয়নের গতি আসে। সেই সঙ্গে ক্লান্ত পাহাড়বাসীর বিশ্রামও হবে।”পাশাপাশি, রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁদের পূর্ণ আস্থার কথাও জানিয়ে দিয়েছেন গুরুঙ্গ। তাঁর কথায়, “আগের বাম সরকারের কাজকর্ম আমরা দেখেছি। পাহাড়ের সমস্যা মেটাতে তারা আগ্রহী ছিল না। নতুন মুখ্যমন্ত্রী ১০০ দিনের পাহাড় সমস্যা সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর কাজ দেখার জন্য সময় দেওয়া প্রয়োজন। বর্তমানে পাহাড়ে শান্তি রয়েছে। পর্যটক ভরে রয়েছে। আমরা চাই, পাহাড়ে এমন শান্তি থাকুক।”
স্বশাসনের প্রশ্নে মোর্চা নেতৃত্ব সম্মত হলেও তাঁদের দলের একাধিক শাখা বিরোধিতা করছে। এই প্রসঙ্গে গুরুঙ্গের বক্তব্য, “দলের মধ্যেই কিছু কিছু কমিটি এর বিরোধিতা করছে। আমরা তাদের সকলকে নিয়েই বৈঠক করে বিষয়টি বোঝাব। বুঝলে ভাল, নইলে দলীয় অনুশাসন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পাশাপাশি, তরাই ও ডুয়ার্সের কোনও এলাকা স্বশাসনের আওতায় আসবে কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকার যে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ছে, তাতে মোর্চার তরফে তরাই এবং ডুয়ার্সের দু’জন করে প্রতিনিধি থাকবেন বলে জানিয়েছেন গুরুঙ্গ।
সভায় গুরুঙ্গ দলীয় কর্মীদের জানান, দলের তরফে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতাপত্র তৈরি করা হচ্ছে। তা কেন্দ্রীয় কমিটি এবং স্টাডি ফোরামের সদস্যেরা চূড়ান্ত করার পরে রাজ্য সরকারকে পাঠানো হবে। পাশাপাশি, রাজ্য তাদের সমঝোতাপত্র তৈরি করে দার্জিলিঙে পাঠাবে। দু’পক্ষই পরস্পরের সমঝোতাপত্র খতিয়ে দেখবে। তবে গুরুঙ্গের সংযোজন, রাজ্যের সমঝোতাপত্রে গোর্খাল্যান্ডের দাবির বিষয়টির উল্লেখ থাকলেই সব চূড়ান্ত হবে। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে দলীয় সভাপতি হিসাবে কোনও সমঝোতাপত্রে তিনি স্বাক্ষর করলেই তা চূড়ান্ত সমঝোতা হবে বলে গুরুঙ্গ দলীয় কর্মীদের জানিয়েছেন। বিধানসভা ভোটের ফল মনে করিয়ে দিয়ে পাহাড়ের বিরোধী দলগুলিকে স্বশাসনের বিরোধিতা না করতেও আহ্বান জানান মোর্চার ওই শীর্ষ নেতা।
সভায় মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি জানান, প্রস্তাবিত স্বশাসনের সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকছে না। তাঁর দাবি, “স্বশাসনের সাংবিধানিক স্বীকৃতি মিললে গোর্খাল্যান্ডের দাবি অপ্রাসঙ্গিক হতে পারে। সে জন্য তা হচ্ছে না। স্বশাসন নিলেও আমরা গোর্খাল্যান্ড এবং কেন্দ্র শাসিত এলাকার দাবির বিষয়টি থেকে সরব না।” |
|
|
 |
|
|