|
|
|
|
চুঁচুড়া থানায় ঢুকে এসআইয়ের চোখে ঘুষি তৃণমূল নেতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
থানার ভিতরেই এক পুলিশ অফিসারকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার উপ-পুরপ্রধান অমিত রায়ের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় তোলপাড় হয় চুঁচুড়া শহর। শুধু মারধর করাই নয়, দলবল জুটিয়ে অমিতবাবু ফের থানায় হামলার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এ বার অবশ্য পুলিশকর্মীরা প্রতিরোধ করেন। লাঠি উঁচিয়ে তাঁদের এলাকাছাড়া করা হয়। থানার মধ্যে দলেরই এক নেতা তথা উপ-পুরপ্রধান এমন কাণ্ড ঘটানোয় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছেন। তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “এটা একেবারেই শিষ্টাচার বিরোধী, গর্হিত কাজ হয়েছে। আমাদের নেত্রী বারবার সংযত হতে বলছেন। কিন্তু তা থেকে শিক্ষা না নিয়ে দলের দায়িত্বশীল নেতারাই যদি এই সব ঘটান, তা হলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছবে। বিষয়টি আমি দলের রাজ্য নেতৃত্বকেও জানিয়েছি।” অমিতবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে ওই অফিসারের বিরুদ্ধে পাল্টা মারের অভিযোগ তুলেছেন। |

পার্থসারথি মজুমদার।
নিজস্ব চিত্র |
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, বিধানসভা নির্বাচনের সময় নিয়ম ভেঙে মিছিল করা এবং কুশপুতুল দাহের অভিযোগে চুঁচুড়া থানায় একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে অমিতবাবুর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বারবার থানার পুলিশকর্মীরা তাঁকে আদালত থেকে জামিন নিতে বললেও তিনি কান দেননি। এ দিন সন্ধ্যায় পথ-দুর্ঘটনায় মৃত এক তৃণমূল কর্মীর ময়না-তদন্তের কাগজপত্র নিয়ে থানায় যান অমিতবাবু। সেই সময় কর্তব্যরত এসআই পার্থসারথি মজুমদারের সঙ্গে অমিতবাবুর বচসা বাধে।
ওই তৃণমূল নেতার দাবি, “ওই অফিসার আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, |
|
‘আপনার নামে পরোয়ানা আছে। আপনি আসামি। তাই থানার চেয়ারে বসতে পারবেন না’। এর পরে আমি চেয়ারে বসতে গেলে তিনি তা টেনে নেন। আমি মাটিতে পড়ে যাই। তখন আমি তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করার কথা বলি। এমনকী পরোয়ানা থাকলে আমাকে থানাতেই গ্রেফতার করতে বলি। উনি তা করেননি।”
পুলিশ কর্মীরা জানিয়েছেন, পার্থসারথিবাবুর মন্তব্যে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন অমিতবাবু। অভিযোগ, ওই অফিসারের বাঁ চোখে সজোরে ঘুষি মারেন তিনি। অতর্কিত মারে পার্থসারথিবাবু মেঝেতে পড়ে যান। এর পরেই অমিতবাবুর সঙ্গীসাথীরা ওই পুলিশ অফিসারের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। থানার পুলিশ কর্মীরা তখন পাল্টা তেড়ে যান হামলাকারীদের দিকে। বেগতিক বুঝে অমিতবাবু-সহ তৃণমূলের লোকেরা চলে যান।
এখানেই শেষ নয়।
এর পরে দল আরও ভারী করে থানার বাইরে পুলিশকর্মীদের উদ্দেশে তৃণমূল সমর্থকেরা হুমকি দিতে থাকেন। পার্থসারথিবাবুর কথায়, “এমন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছিল যে, যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে যেতে পারছিলাম না। বাইরে বেরোলেই হয়তো আবার মারধর করত।”
শেষে চুঁচুড়া থানার আইসি সমরজিৎ সমাদ্দার পুলিশ কর্মীদের নির্দেশ
দেন তৃণমূল সমর্থকদের হঠিয়ে দিতে। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তাঁদের তাড়া করতেই অমিতবাবু ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গোরা চলে যান। হুগলির পুলিশ সুপার
তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “ওই নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ আইন মোতাবেক
ব্যবস্থা নেবে।”
অমিতবাবু অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, “ওই অফিসারের সঙ্গে কথাকাটাকাটির সময় আইসি আমাকে পাশের ঘরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন পার্থসারথিবাবুই আমাকে ঘুষি মারেন। আমার বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ সাজানো। আমি কী প্রকৃতির মানুষ, চুঁচুড়া শহরের মানুষ তা জানেন।” |
|
|
 |
|
|