|
|
|
|
১৩০ স্কুলে সবাই ফেল |
অসমে শিক্ষার হাল ফেরাতে শিক্ষকদের যোগ্যতা পরীক্ষা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
দিন কয়েক আগে অসমে উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। ১৩০টি স্কুল থেকে এই পরীক্ষায় বসা একজন পরীক্ষার্থীও পাশ করতে পারেনি। এমন ফলাফলে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী কবুল করেন, শিক্ষক শিক্ষিকাদের নানা দাবি-দাওয়া পূরণে রাজ্য এত ব্যস্ত ছিল যে, ছাত্রছাত্রীদের উপরে শিক্ষক বা সরকার কেউ নজর দেয়নি। প্রাথমিক থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক স্তর অবধি শিক্ষার হাল ফেরাতে এ বার অসম সরকার একগুচ্ছ নতুন পদক্ষেপ নিতে চলেছে। যোগ্যতা নির্ধারণে চলতি বছর থেকেই চালু হচ্ছে ‘টিচার্স এলেজিবিলিটি টেস্ট’ (টেট)। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই শিক্ষকপদে আবেদন জানানো যাবে।
উচ্চ-মাধ্যমিকের ফল দেখে হতাশ শিক্ষামন্ত্রী ইতিমধ্যেই শিক্ষা সংসদ এবং রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ পরিদর্শন করেছেন। হিমন্ত জানান, এই বছরই ‘টেট’-এর সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার মৌলিক অধিকার আইন সংক্রান্ত বিধিটি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে চালু করা হবে রাজ্যে গড়া হবে বারোটি কলেজ, চারটি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বছরের মধ্যেই রাজ্যে অন্তত ৩১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম মানা হয়নি। যে সব স্কুলে ৩০ শতাংশের বেশি ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক বা উচ্চ-মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়নি, সেখানকার শিক্ষকদের অন্যত্র বদলি করা হবে। যেখানে কেউ পাশ করেনি, সেই স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের ২৪ জুন ডেকে পাঠিয়েছি। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন মাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অসমের সেরা শিক্ষকদের অধঃপাতে যাওয়া স্কুলগুলিতে পাঠিয়ে মানোন্নয়নের চেষ্টা চালাব আমরা।”
ফল খারাপ হওয়ার জন্য শিক্ষকদের গুণগত মানের অভাব এবং পড়ানোয় মন না থাকাকেই দায়ী করেছেন মন্ত্রী। হিমন্তের ঘোষণা, অতঃপর ‘টেট’ পাশ না করে কেউ সরকারি বা বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতে পারবেন না। পরীক্ষায় বসতে হলে অন্তত ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। তফসিল জাতি উপজাতির ক্ষেত্রে এই যোগ্যতামান ৪৫। বাণিজ্য শাখায় নিয়োগ পরীক্ষা এখনই হচ্ছে না। বিএড, পিজিবিটি, ডিপ্লোমা ইন বেসিক টিচার্স ট্রেনিং, ডিপ্লোমা ইন এলেমেন্টারি এডুকেশন থাকলে অগ্রাধিকার মিলবে। শিক্ষকদের তিন বছরের মধ্যে বিএড করতে হবে। পরীক্ষা হবে অক্টোবর মাসের প্রথমে। সেই সঙ্গে, নিরপেক্ষ পরিদর্শনের জন্য কলেজের ক্ষেত্রে জেলা প্রতি একজন ও স্কুলের ক্ষেত্রে পাঁচজন সাম্মানিক পরিদর্শক নিয়োগ করা হবে। তাঁরা সরাসরি জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন।
মন্ত্রী জানান, স্কুলগুলির দাবিদাওয়া স্কুলেই মেটাতে মাধ্যমিক স্কুলগুলির ক্ষেত্রে বহু সিদ্ধান্ত পরিচালন সমিতির হাতেই অর্পণ করবে শিক্ষা দফতর। শিক্ষার মৌলিক অধিকার বিধি প্রণয়ন হলে প্রতি কিলোমিটারে নিম্ন প্রাথমিক ও প্রতি পাঁচ কিলোমিটার অন্তর মাধ্যমিক স্কুল গড়া হবে। প্রাথমিক স্কুলে ছয় মাসের মধ্যে অন্তত ২ জন করে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।
৬৩২৩ জন আন্দোলনকারী চুক্তি শিক্ষকের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রীর বার্তা, ওই শিক্ষকরা বেআইনি সংগঠন ভেঙে দিলে তাঁদের কার্যকাল বাড়িয়ে দেওয়া হবে। তাঁর প্রশ্ন, “সারাদিন অন্যায় আন্দোলন করলে শিক্ষকরা আর পড়াবেন কখন?”
হিমন্ত আরও ঘোষণা করেন, রাজ্যে আরও ১২টি সরকারি কলেজ হবে। প্রতিটির জন্য বরাদ্দ ৮ কোটি টাকা। মন্ত্রীর মতে, ১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৫০টির বেশি কলেজ থাকা উচিত নয়। তাই ৫ বছরের মধ্যে অন্তত ৪টি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়বার কথাও ভাবা হচ্ছে। |
|
|
 |
|
|