দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হলেন উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার এক তৃণমূল সমর্থক। নাম কোশা মহম্মদ (৩০)। সোমবার দুপুরে চোপড়ার কাশিমগছ এলাকায় সংঘর্ষের সময় তাঁর মৃত্যু হয়। কোশার আত্মীয় তথা তৃণমূলের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যকেও অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পরে বেশি রাতে চোপড়া বাজার এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
কোশার বাড়ি এলাকার তিসরামগছ গ্রামে। এ দিন তিনি কাশিমগছে বোনের শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি এলাকায় সিপিএম সমর্থক হিসাবে পরিচিত ছিলেন। নির্বাচনের পরে তৃণমূলে যোগ দেন। হামলাকারীরা কংগ্রেসের মদতে পুষ্ট বলে তৃণমূল এবং সিপিএমের অভিযোগ। কংগ্রেস ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এ বার বিধানসভা নির্বাচনের পরেই উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া এবং ইসলামপুরে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে চলেছে। পুলিশের হিসেবে, নির্বাচনের পরে চোপড়ায় ১০টি রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, এ দিন বোনের শ্বশুরবাড়ি থেকে বার হয়েই দুষ্কৃতীদের হামলার শিকার হন কোশা। একটি গুলি তাঁর পায়ে এবং অন্যটি মাথায় লাগে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। হামলার সময়ে নিহত ব্যক্তির সঙ্গেই ছিলেন তাঁর বোনের শ্বশুর তথা সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ধোলা মহম্মদ। তিনি অপহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ। হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। জেলার পুলিশ সুপার মিলনকান্ত দাস বলেন, “নিহত ব্যক্তি তাঁদের দলের সমর্থক বলে তৃণমূল দাবি করেছে। এলাকার একাধিক বাড়িতে লুঠপাট হয়েছে বলেও অভিযোগ পেয়েছি। হামলার ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে লুঠ হওয়া মালপত্রের একাংশ।
তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অসীম ঘোষ বলেন, “সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই কোশা এবং ধোলাকে চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের মদতে পুষ্ট দুষ্কৃতীরা হুমকি দিচ্ছিল। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুষ্কৃতীদের ধরা না-হলে ইসলামপুর থানা ঘেরাও করা হবে।” চোপড়ার বিধায়ক বলেন, “আমার অনুগামীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। নিহত যুবক এলাকায় সমাজবিরোধী বলে পরিচিত। দু’দল দুষ্কৃতীর গোলমালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।”
চোপড়ার ব্লক তৃণমূল সভাপতি তবিরুর রহমান বলেন, “বিধানসভা ভোটের পর থেকেই আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালাচ্ছে কংগ্রেস। কোশা আমাদের দলের সমর্থক ছিলেন।” ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অশোক রায় বলেন, “কোশা মহম্মদ তো সিপিএমের লোক। ও কবে থেকে তৃণমূল হল?” সিপিএমের চোপড়া লোকাল কমিটির সম্পাদক পরিতোষ রায় বলেন, “কোশা একেবারেই নিরীহ লোক ছিলেন। আমাদের মিছিলে যেতেন। ভোটের পরে তৃণমূলে চলে যান। কংগ্রেস যে এলাকায় সন্ত্রাস কায়েম করতে চাইছে এই ঘটনায় তা ফের প্রমাণ হয়ে গেল।” |