|
|
|
|
বার্ধক্য ভাতার দাবিতে তালা পঞ্চায়েতে, বিক্ষোভ ব্যাঙ্কে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাইপুর ও মানবাজার |
বার্ধক্য ভাতায় গরমিলের অভিযোগকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েতে তালা দেওয়া ও ব্যাঙ্কে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটল দুই জেলায়।
সোমবার দুপুরে বাঁকুড়ার রাইপুর ব্লকের ধানাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে দেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, বার্ধক্য ভাতার তালিকায় দলবাজি করেছে সিপিএম। এ দিন, প্রধানের অনুপস্থিতিতে কর্মীদের বের করে দিয়ে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
ধানাড়া অঞ্চলের তৃণমূল নেতা সুভাষ ষন্নিগ্রহী, তপন মহাপাত্রদের অভিযোগ, “বার্ধক্য ভাতার তালিকায় বিরোধী দলের সুস্থ কর্মী সমর্থকদের উপেক্ষা করে অবস্থাপন্ন সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের নাম ঢোকানো হয়েছে। প্রধানের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েও লাভ হয়নি। তালিকায় চূড়ান্ত দলবাজি করেছেন সিপিএম প্রধান কাজল ভুঁই।” রাইপুর ব্লক তৃণমূল নেতা সুভাষ নাদ বলেন, “বার্ধক্য ভাতার ওই তালিকা সংশোধনের দাবিতে এ দিন আমাদের দলের প্রায় ২৫০ জন কর্মী সমর্থক ধানাড়া পঞ্চায়েত অফিসে যান। প্রধান সেই সময় ছিলেন না। পঞ্চায়েতের কর্মীরা অফিসের বাইরে চলে গেলে উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকেরা পঞ্চায়েত অফিসে তালা দিয়েছেন।” ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের কাজল ভুঁই অবশ্য তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বার্ধক্য ভাতার তালিকায় কোনও দলবাজি হয়নি। রাজনৈতিক কারণে মিথ্যা অভিযোগ করছে তৃণমূল।” প্রধানের দাবি, “ব্যক্তিগত কারণে আমি এ দিন পঞ্চায়েতে যেতে পারিনি। তবে কর্মীদের বের করে দিয়ে তৃণমূলের লোকেরা পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে শুনেছি।” রাইপুরের বিডিও কৌশিস রায় বলেন, “ধানাড়া পঞ্চায়েতে তালা দেওয়ার খবর পেয়েছি। বিষয়টি দেখছি।”
অন্য দিকে, বার্ধক্য ভাতার টাকা না পেয়ে ব্যাঙ্কে বিক্ষোভ দেখালেন পুরুলিয়ার পুঞ্চা থানার পায়রাচালি গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। সোমবার, ওই গ্রামের বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের সামনে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বার্ধক্য ভাতার তালিকায় গরমিলের জন্য টাকা পাচ্ছেন না প্রাপকরা। বাগালধরা গ্রামের বৃদ্ধা কেশরি মুর্মু বলেন, “হঠাৎ আমার বার্ধক্যভাতা আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।” তাঁর আত্মীয় ধীরেন মুর্মু’র দাবি, “টাকা বন্ধের কারণ জানতে ব্লক অফিসে গিয়েছিলাম। ব্লক অফিসের কর্মী আমাকে জানান কেশরিবাবুর নাম মৃতের তালিকায় রয়েছে।” দুলালপুরের বাসিন্দা নবীন মুর্মু, নীলমনি মুর্মুরা বলেন, “আমাদের নামও বার্ধক্য ভাতার তালিকায় নেই। এই বয়সে ব্যাঙ্কে যাওয়ার ক্ষমতা নেই তাই ব্যাঙ্কের সামনেই বিক্ষোভে সামিল হয়েছি।” ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অমিয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ব্যাঙ্ক চত্বরে বিক্ষোভ চলায় ব্যাঙ্ক বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য শৈলেন মিত্র বলেন, “এদের মধ্যে অনেকেই পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় ধরে বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন। কার গাফিলতিতে এদের নাম তালিকায় ওঠেনি তা আমরা বিডিও’র কাছে জানতে চেয়েছি।” চাঁদড়া পায়রাচালি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের জয়দেব সিং বলেন, “যে সব ব্যক্তির বার্ধক্যভাতার জন্য অ্যাকাউন্ট হয়ে গিয়েছে তাঁদের সঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতের আর সরাসরি কোনও সম্পর্ক থাকে না। ওরা কেন ভাতা পাচ্ছেন না তা ব্লক অফিসই বলতে পারবে।” মানবাজারের বিডিও কমলচন্দ্র দে বলেন, “যাঁরা মৃত তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্য কারও নাম বাদ পড়ে থাকলে তা তদন্ত করে দেখতে বলেছি। ব্লক অফিসের কর্মীরা ব্যাঙ্কে গিয়েছেন।” ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুরের পর থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। |
|
|
|
|
|