গড়বেতার সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষের আদিবাড়ির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় ৯ বছর আগে ‘নিখোঁজ’ ৫ তৃণমূল কর্মীর বলে আগেই দাবি উঠেছে। ডিএনএ-পরীক্ষার জন্য ‘নিখোঁজ’দের পরিজনের রক্তের নমুনা সংগ্রহে উদ্যোগী হল সিআইডি। সোমবার সিআইডি তাঁদের মেদিনীপুর আদালতে নিয়ে আসে। রক্তের নমুনা দিতে চেয়ে পরিজনদের আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছে। আজ, মঙ্গলবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে রক্তের নমুনা নেওয়া হবে বলে সিআইডি সূত্রের খবর।
দিন দশেক আগে গড়বেতা-৩ ব্লকের দাসেরবাঁধে সিপিএম নেতা সুশান্তবাবুর বাড়ির কাছ থেকে ওই হাড়গোড় মেলে। তৃণমূল দাবি করে, সেগুলি ৯ বছর আগে কেশপুরের পিয়াশালায় সিপিএমের ‘হামলা’র পর থেকে ‘নিখোঁজ’ ৫ তৃণমূল কর্মীর। ‘নিখোঁজ’দের অন্যতম অজয় আচার্যের ছেলে শ্যামল ৪০ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর নামে নতুন করে কেশপুরের আনন্দপুর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় অভিযুক্ত-তালিকায় রয়েছেন সুশান্ত ঘোষ, তরুণ |
রায়, তড়িৎ খাটুয়া, এন্তাজ আলিদের মতো সিপিএমের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। সোমবার শ্যামল বলেন, “খুনিরা শাস্তি পাবে, এই আশায় আছি। তদন্ত শেষ হলেই বোঝা যাবে, সিপিএম কত কী করেছিল।”
রবিবার ফের কেশপুরেরই আনন্দপুরের পাঁউশখালি সংলগ্ন ডলঙ্গ জঙ্গলের কাছ থেকে মাটি খুঁড়ে খুলি, হাড় উদ্ধার হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, ২০০০-এর ২২ এপ্রিল দলীয় কর্মী মওদুদ হোসেনকে অপহরণ করে খুন করেছিল সিপিএমের লোকজন। কাতির্র্ক ঘোষ ও খোকন আড়ি নামে দুই সিপিএম কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই মওদুদের দেহাবশেষের সন্ধানে ডলঙ্গ জঙ্গলে তল্লাশি চালান গ্রামবাসীরা। হাড়গোড়ের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া পোশাকের অংশ দেখে মওদুদের দাদা মাকসুদ হোসেন দাবি করেন, দেহাবশেষ তাঁর ভাইয়েরই। সোমবার তিনি বলেন, “একটি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন শেষে বাড়ি ফেরার সময়ে মওদুদকে অপহরণ করে সিপিএমের লোকজন। তাঁর আর খোঁজ মেলেনি।” রবিবার রাতেই আনন্দপুর থানায় নতুন করে অভিযোগ দায়ের করেছেন মাকসুদ। অভিযুক্ত হিসেবে সিপিএমের কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক তরুণ রায়, কেশপুর জোনাল সম্পাদক আহমেদ আলি-সহ ২৩ জনের নাম রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রেও ডিএনএ-পরীক্ষা হবে। সোমবার সিআইডি-র দলও ঘটনাস্থলে যায়। গত ফেব্রুয়ারিতে শালবনির তৃণমূল কর্মী যজ্ঞেশ্বর মাহাতোর অপহরণে জড়িত সন্দেহে সিপিএমের কাশীজোড়া লোকাল কমিটির সম্পাদক নিশাকর চক্রবর্তীকে এ দিন পুলিশ গ্রেফতার করে। আদালতে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ৩ দিন নিজেদের হেফাজতেও নিয়েছে পুলিশ।
সমানে চলছে অস্ত্র-উদ্ধারও। শালবনির আমচূড়ায় মাটি খুঁড়ে ১২টি এবং চকতারিণীতে একটি স্ল্যাবের নীচ থেকে ১০টি বন্দুক উদ্ধার হয় রবিবার রাতে। এ দিন সেই চকতারিণীতেই সিপিএমের শাখা অফিসে আগুন লাগে। সেখানে তৃণমূলের মিছিলও ছিল। তৃণমূলের লোকই আগুন লাগায় বলে অভিযোগ সিপিএমের। এ দিন সকালে ঘাটাল থানার কোমরা গ্রামের পুকুর থেকে দু’টি পাইপগান উদ্ধার হয়। পুকুরে মাছ ধরার জন্য ফেলা জালেই পাইপগান দু’টি উঠে আসে। |