|
|
|
|
গয়ায় ধৃত মাওবাদী নেতা জগদীশ যাদব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
মাওবাদী-বিরোধী অভিযানে বড়সড় সাফল্য পেল বিহার পুলিশ। কাল রাতে গয়ার গুরারু থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি বেসরকারি ক্লিনিক থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে প্রবীণ মাওবাদী নেতা এবং ওই সংগঠনের পলিটব্যুরো সদস্য জগদীশ যাদব ওরফে জগদীশ মাস্টারকে। গ্রেফতার করা হয়েছে জগদীশ মাস্টারের চিকিৎসক লালজি যাদবকেও। আজ ধৃত মাওবাদী নেতাকে গয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হলে তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, অতীতে ঝাড়খণ্ড-ছত্তীসগঢ়-বিহার এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ঘুরে ঘুরে মাওবাদী সংগঠনের কাজকর্ম দেখাশোনার কাজ করলেও অশীতিপর এই নেতা সম্প্রতি অসুস্থতার কারণে বিহারের গয়া জেলার ডুমরিয়া-ইমামগঞ্জ এলাকার জঙ্গল এলাকাতেই থাকতেন। সম্প্রতি হাঁপানি এবং এগ্জিমায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় গয়ার গুরারু থানা এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন জগদীশ। গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে কাল রাতে গয়ার সিনিয়র পুলিশ সুপার বিনয় কুমারের নেতৃত্বে সিআরপিএফ এবং এসটিএফের বিশাল বাহিনী ওই ক্লিনিক ঘিরে ফেলে। সেখান থেকে গ্রেফতার হন জগদীশ মাস্টার এবং তার কয়েক জন সঙ্গী। এর পরে পুলিশ গুরারু-গুরুয়া সড়কে একটি বরযাত্রীর দলকে আটকে তল্লাশি চালায়। ওই দল থেকে ধরা পড়েন চিকিৎসক লালজি যাদব-সহ ছ’জন।
রাজ্য পুলিশের ডিজি নীলমণি আজ বলেন, “১৯৬৮ সাল থেকে নকশাল এবং মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত জগদীশ মাস্টার। কিন্তু আজ পর্যন্ত কখনও পুলিশের হাতে ধরা পড়েননি। ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং বিহারে প্রচুর মামলা রয়েছে ওঁর বিরুদ্ধে। এই গ্রেফতার নিঃসন্দেহে বড়সড় সাফল্য।”
পুলিশ জানায়, ১৯৬৮ সালে নকশালপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন পেশায় স্কুলশিক্ষক জগদীশ যাদব। মাওবাদী সংগঠনেও ‘জগদীশ মাস্টার’ বলেই সমধিক পরিচিত তিনি। পরবর্তী সময়ে অবশ্য বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করার সময়ে অখিলেশজি, প্রভাতজি, ভূপেশজি, সতীশজি নাম নিয়েও কাজ করেছেন। নকশালপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরেও দশ বছর শিক্ষকতা করেছেন। তার পরে অবশ্য শিক্ষকতা ছেড়ে পুরোপুরি মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য হয়ে যান ঔরঙ্গাবাদ জেলার করমা থানার গামরিহা গ্রামের এই বাসিন্দা। ১৯৭৬ সালে বিহারের রফিগঞ্জ থানা এলাকায় একটি হত্যার ঘটনায় প্রথম জগদীশের নাম জড়িয়ে যায়। তার পর থেকে বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ় এবং অন্ধ্রপ্রদেশে একাধিক মামলা রুজু হয়েছে জগদীশের বিরুদ্ধে। নীলমণি জানান, ২০০৪ সালে মাওবাদী সংগঠন এমসিসি এবং জনযুদ্ধ গোষ্ঠীর সংযুক্তিকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন জগদীশ। ওই বছরই তিনি সিপিআই (মাওবাদী)-র পলিটব্যুরো সদস্য হন। আগে ১৯৯৬ সাল থেকে এমসিসি-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। মাওবাদী প্রচার-পুস্তিকা ‘লাল চিঙ্গারি’র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকও ছিলেন জগদীশ। |
|
|
|
|
|