|
|
|
|
সাংবাদিক হত্যায় স্কেচ প্রকাশ পুলিশের |
সংবাদসংস্থা • মুম্বই |
মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই সাংবাদিক জোতির্ময় দে হত্যাকাণ্ডে বড় ধরনের সূত্র মিলেছে বলে দাবি করল মুম্বই পুলিশ। গত কালও জে দে’র (এই নামেই সাংবাদিক মহলে পরিচিত ছিলেন জোতির্ময়) খুনের ঘটনায় কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু আজ সকাল থেকেই তদন্ত অন্য দিকে মোড় নিয়েছে বলে জানায় মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখা। সেইমতো বিকেলের দিকে এক সন্দেহভাজনের ছবিও প্রকাশ করেছে পুলিশ।
গত শনিবার দুপুরে মুম্বইয়ের শহরতলি পওয়াইয়ে নিজের বাড়ির কাছেই খুন হন জে দে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছিল দু’টি মোটরবাইকে মোট চার জন আততায়ী এসেছিল। তা হলে মাত্র এক জনের ছবি আঁকা হল কেন? পুলিশ জানাচ্ছে, ঘটনাস্থলের আশপাশে কোনও সিসিটিভি ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণের ভিত্তিতে আপাতত এক জনের চেহারাই তাদের সামনে এসেছে। এই যুবকের বয়স বাইশ থেকে পঁচিশের মধ্যে। ঘটনার দিন একটি নীল রঙের উইন্ডচিটার পরেছিল সে। |
সন্দেহভাজনের
স্কেচ।–পিটিআই |
গত কালই ঘটনার তদন্তে রাজ্য প্রশাসনের তরফে সব রকমের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ। আজ তিনি ইঙ্গিত দেন, জে দে’র হত্যার পিছনে তেল মাফিয়াদেরই হাত আছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। গত কয়েক মাস ধরে এই তেল মাফিয়াদেরই নানা অপরাধমূলক কাজকর্মের খবর জোগাড় করছিলেন জোতির্ময়। তাঁর ল্যাপটপ, হার্ডডিস্ক ও পেনড্রাইভও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, দিন দু’য়েকের মধ্যেই এই হত্যা মামলার কিনারা হয়ে যাবে।
|
|
তবে পুলিশেরই একটা অন্য সূত্র বলছে, তেল মাফিয়া নয়। পোড় খাওয়া এই সাংবাদিক হত্যার পিছনে মুম্বইয়ের অপরাধ জগতেরই একাংশের হাত রয়েছে। সম্প্রতি দাউদ গোষ্ঠীর সঙ্গে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অনিল মহাবোলের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানতে পেরেছিলেন জোতির্ময়। দক্ষিণ মুম্বইয়ের আজাদ ময়দান বিভাগের প্রধান ছিলেন তিনি। এ বিষয়ে কিছু তথ্য প্রমাণ পুলিশ কমিশনারের কাছে জমাও দেন তিনি। আর সেটাই তাঁর মৃত্যু ডেকে আনল বলে আক্ষেপ বন্ধুদের। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরে আজই অনিলকে স্থানীয় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিভাগে বদলি করা হয়েছে। সাংবাদিক হত্যার তদন্তে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলেও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি।
জে দে’র হত্যার প্রতিবাদে আজ দুপুরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন মুম্বইয়ের সাংবাদিকরা। প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে সেই মিছিল শেষ হয় রাজ্যের প্রশাসনিক দফতর মন্ত্রালয়ে। জোতির্ময়ের সাংবাদিক বন্ধুরা আজ জানান, তাঁরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ‘‘ঘটনার নৈতিক দায় নিয়ে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর আর পাটিলের পদত্যাগ করা উচিত। সেই সঙ্গে মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার অরূপ পট্টনায়ককে সাসপেন্ড করা হোক।” গোটা ঘটনার সিবিআই তদন্তেরও দাবি জানায় সংবাদমাধ্যম। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “মুম্বই পুলিশ যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। এখনই সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই।” তাঁর আরও আশ্বাস, খুব শীঘ্রই এই হত্যা রহস্যের সমাধান হবে। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে তদন্তের গতিবিধির উপর নজর রাখছেন বলেও জানান চহ্বাণ। আজ কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দলও মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করে। |
|
|
|
|
|