|
|
|
|
পৃথক জেলা চায় ইসলামপুর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
ইসলামপুরকে পৃথক জেলা ঘোষণার দাবিতে সরব হলেন রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী তথা এলাকার তৃণমূল বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী। বিধানসভা নির্বাচনের সময়েই তিনি ইসলামপুরকে জেলা ঘোষণার দাবিতে সরব হয়েছিলেন। মন্ত্রী হওয়ার পরে শুক্রবার তিনি রায়গঞ্জে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। গ্রন্থাগার মন্ত্রী বলেন, “ইসলামপুর শহর-সহ গোটা মহকুমাই উন্নয়নের বিচারে পিছিয়ে রয়েছে। ইসলামপুরকে আলাদা জেলা ঘোষণার দাবি দীর্ঘদিনের। এ বারও বিধানসভা নির্বাচনে এটাই ছিল আমার প্রচারের প্রধান বিষয়। কয়েকদিনের মধ্যেই কলকাতায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলব।” করিম চৌধুরীর প্রস্তাবিত নয়া ইসলামপুর জেলায় জেলা সদর হবে ইসলামপুর। ডালখোলা হবে মবকুমা শহর। ইটাহার, পাঞ্জিপাড়া এবং হেমতাবাদকে পুর এলাকা ঘোষণার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। |
|
প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার দফতরের
মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধরী। শুক্রবার রায়গঞ্জে ছবিটি তুলেছেন তরুণ দেবনাথ। |
এ বারের বিধানসভা অধিবেশনেই বিষয়গুলি তিনি তুলবেন বলে এদিন জানিয়েছেন। স্বাধীনতার পরে দিনাজপুর জেলার একাংশ নিয়ে পশ্চিম দিনাজপুর জেলা তৈরি করা হয়। পশ্চিম দিনাজপুরের জেলা সদর ছিল বালুরঘাট। কিন্তু বালুরঘাট থেকে জেলার অন্যান্য এলাকার দূরত্ব এবং উন্নয়নের সমস্যা বিচার ১৯৯২ সালে পশ্চিম দিনাজপুর জেলা ভেঙে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৈরি করা হয়। উত্তর দিনাজপুরের জেলা সদর হয় রায়গঞ্জ। এখনও পৃথক জেলা হিসাবে উত্তর দিনাজপুর জেলার পরিকাঠামো পুরোপুরি ভাবে গড়ে ওঠেনি। উত্তর দিনাজপুরে এখনও জেলা ডাকঘর, পূর্ণ ক্ষমতার ড্রাগ কন্ট্রোল দফতর নেই। তার চেয়ে বড় সমস্যা হল উত্তর দিনাজপুর জেলার উন্নয়নের বিচারেও পিছিয়ে রয়েছে ইসলামপুর মহকুমা। সেচ, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর পাশাপাশি শিল্পও গড়ে ওঠেনি। ইসলামপুরকে আলাদা জেলা করা হলেই কী উন্নয়ন সমস্যা মিটবে? করিম চৌধুরীর দাবি, ইসলামপুরকে জেলা ঘোষণা করা হলে উন্নয়নের সমস্যা অনেকটাই মিটবে। ইসলামপুর থেকে প্রস্তাবিত জেলার সর্বত্র নজরদারি রাখতেও সুবিধে হবে।
প্রশাসনিক বৈঠকে এদিন গ্রন্থাগার মন্ত্রী রায়গঞ্জের স্পিনিং মিল নিয়েও খোঁজখবর নেন। পানীয় জল, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাটের পাশাপাশি জেলায় কর্মসংস্থানের পরিকল্পনাও নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি। মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েই জেলার উন্নয়ন নিয়ে করিম চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের উন্নয়নের নানা প্রকল্প তৈরি করতে বলা হয়েছে। প্রতিটি ক্যবিনেট বৈঠকে এই বিষয়গুলি তোলা হবে যাতে দ্রুত কাজে নামা যায়। প্রশাসনিক কর্তাদের তৈরি রিপোর্টের প্রতিলিপি তিনি নিজেও মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেবেন বলে জানান। এদিনের বৈঠকে জেলার শান্তিশৃঙ্খলা নিয়েই প্রশাসনিক কর্তাদের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী। তিনি বলেন, “শান্তি বজায় না-থাকলে জেলায় উন্নয়ন হবে না। অথচ ইসলামপুর এবং চোপড়ায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ বাড়ছে। পুলিশকে বলা হয়েছে রাজনৈতিক রঙ না-দেখে পুলিশকে কড়া হাতে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” এই ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আজ, শনিবার ইসলামপুরে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে পুলিশকে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশ দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। জেলার বেহাল জনশিক্ষা কেন্দ্র এবং গ্রন্থাগার কমিটিগুলি ঢেলে সাজা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এদিনের বৈঠকে জেলাশাসক সুনীল দণ্ডপাট, পুলিশ সুপার মিলনকান্ত দাস, ইটাহারের বিধায়ক অমল আর্চায-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। জেলাশাসক জানান, মন্ত্রীর নির্দেশ মেনে উন্নয়ন প্রস্তাব তৈরি হচ্ছে। |
|
|
|
|
|