|
|
|
|
‘নির্দোষ’ দুই শিক্ষকের মুক্তির দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি পড়ুয়াদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বনগাঁ |
অভিযোগ প্রিয় দুই গৃহশিক্ষককে পুলিশ ‘সন্দেহে’র জেরে গ্রেফতার করেছে। যার ফলে সাত দিন ধরে বন্ধ পড়াশোনা। এর প্রতিবাদে এবং ‘নির্দোষ’ দুই শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে পথে নামল শ’খানেক স্কুলপড়ুয়া। এই উদ্দেশ্যে গণস্বাক্ষরও সংগ্রহ করে তারা। পরে মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কাছে শুক্রবার এ ব্যাপারে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমার রামচন্দ্রপুর গ্রামে।
ঘটনার সূত্রপাত হয়, রামচন্দ্রপুর গ্রামে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করতে গেলে। গত ৩ জুন সন্ধ্যায় বনগাঁ থানার পুলিশ রামচন্দ্রপুর গ্রামের এক যুবককে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার করতে গেলে গ্রামের মানুষের একাংশ পুলিশের উপরে চড়াও হয়। অভিযুক্তকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। পুলিশ তা না করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। এর পরেই গ্রামবাসীরা সুটিয়া রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। পুলিশ সেখানে গেলে তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়া হতে থাকে। এমনকী কয়েকজন পুলিশ কর্মীকে রড দিয়ে পেটানো হয়। গোটা ঘটনায় বনগাঁ থানার আই সি-সহ আটজন পুলিশ কর্মী জখম হন। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে গুরুতর অবস্থায় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর পরে রাতেই বিশাল পুলিশবাহিনী এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা অভিযুক্তদের খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি শুরু করে। বিশ্বজিৎ রায় এবং গোপাল রায় নামে দুই গৃহশিক্ষক-সহ ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও এলাকার ছাত্রছাত্রীদের দাবি ওই দুই গৃহশিক্ষক কোনওভাবেই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। দুই শিক্ষক বর্তমানে বিচারকের আদেশে উপ সংশোধনাগারে।
|
|
বনগাঁ এসডিপি-র দফতরের সামনে পড়ুয়ারা। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশঢ় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজিৎবাবু এবং গোপালবাবু পরস্পর দাদা ও ভাই। রামচন্দ্রপুর বাজারে তাঁদের কাপড়ের দোকান থাকলেও দুই ভাই-ই বহু বছর ধরে গৃহশিক্ষকতা করছেন ওই এলাকায়। এই সূত্রে তাঁদের সুপরিচিতিও রয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করার পর থেকেই তাঁরা গৃহশিক্ষকতা করতে পারছেন না। এই অবস্থায় যাঁরা তাঁদের কাছে পড়তেন তাঁরাও সমস্যায় পড়েছেন। ওই সব ছাত্রছাত্রীর দাবি এক সপ্তাহ ধরে পড়াশোনা বন্ধ। ধৃত দুই শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে শুক্রবার এলাকার বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী এসডিপিও বিমলকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে স্মারকলিপি দেন। সুদীপা মণ্ডল, শম্পা মণ্ডল, পল্লবী রায়রা বলেন, “সামনেই পরীক্ষা। এই অবস্থায় আমাদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। তবে এসডিপিও সাহেব আমাদের কথা শুনেছেন। তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।” স্থানীয় গ্রামবাসী সুনীল শোনা বলেন, “ওই দুই গৃহশিক্ষক পড়াশোনার বাইরে এলাকার নানা সাংস্কৃতিক কাজে জড়িয়ে থাকতেন। ওঁরা এমন গণ্ডগোলে জড়িয়ে থাকতে পারেন না।” বিমলবাবু বলেন, “বিষয়টি বর্তমানে বিচারাধীন। ওই দুই গৃহশিক্ষকের জামিনে মুক্তির জন্য আমি ওদের আইনজীবীদের মাধ্যমে জামিনের আবেদন করতে বলেছি।” |
|
|
|
|
|