সঙ্গীত সমালোচনা ১...
হিন্দি রবীন্দ্রসঙ্গীত
তিনি শিল্পী। এবং ঝুঁকি নিতে পিছপা নন। ঠিক যেমন যাযাবররা হয়। অজানা পথে হেঁটেই যাদের আনন্দ।
শিল্পীর নাম শান্তনু রায়চৌধুরী। আর তাঁর নতুন অ্যালবামের নাম ‘মুসাফির’। কবির সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে ১০টি রবীন্দ্রগানের অ্যালবাম।
তাতে নতুন কী? নতুন এটাই যে গানগুলো সব ক’টাই হিন্দিতে। কিন্তু সেটাও কি কম ঝুঁকি?
অতীতে অনেকেই হিন্দিতে রবীন্দ্রগান গেয়েছেন। খুব যে সাফল্যের মুখ দেখেছে সেই কাজ, তা বলা যায় না। শান্তনু সেটা জানেন। কিন্তু জেনে-বুঝেও পাঁচ বছর শ্রম ঢেলেছেন সেই একই রকম একটা কাজে? “এ দেশের লোক রবীন্দ্রনাথের গানকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করেন। গাইতে পারেন না ভাষার প্রতিবন্ধকতার জন্য। এই জায়গাটা আমি ভাঙতে চেয়েছি। এত অসাধারণ এই গানের কথা, সুরের বাঁধুনি। কেন এই সম্পদ বাংলার মধ্যে আটকে থাকবে?” বলছেন শান্তনু।
তাঁর অ্যালবামে নতুনত্বটাও অন্য জায়গায়। কারণ আক্ষরিক অনুবাদের থেকে শান্তনু দূরে থেকেছেন শতহস্ত। সেই প্রেক্ষিতেও অতীতের অসাফল্য থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। “আগের সব অনুবাদের কাজ এতটাই দুর্বল, মামুলি এবং অগভীর ছিল যে শ্রোতা সেটা শুধুমাত্র আরেকটি বাংলা গান হিসেবে শুনেছেন। ফলে এই কাজে আক্ষরিক অনুবাদের দিকে যাই-ই নি। রবীন্দ্র গানের যথার্থ অনুবাদ সম্ভব নয়,” বলছেন তিনি।
আক্ষরিক অনুবাদ যদি নাও হয়, রবীন্দ্রগানের একটি মূল জায়গা গানের বাণী। তাঁর অবশ্য দাবি, এই গানগুলি শুনলে মনে হবে না যে, তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতের মূল ভাবনা থেকে সরে এসেছেন। একটা বড় কারণ রবীন্দ্রগানের ভাবানুবাদ। শান্তনু জোর দিয়েছেন ঠিক সেখানেই। বললেন, “যেটা করতে গেলে সঙ্গীতের একটা সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে। আর যিনি করবেন তাঁরও থাকতে হবে। ভারতীয় শাস্ত্রীয়সঙ্গীত তো বটেই, সংস্কৃত, হিন্দি, উর্দুও জানতে হবে। তা না হলে অনুবাদের সঠিক রসটা পাওয়া যাবে না। সেখান থেকে এই গানগুলিকে কখনওই গিমিক মনে হবে না,” বলছেন শান্তনু।
তাই এই প্রচেষ্টাকে সরাসরি রবীন্দ্রসঙ্গীতের তকমা দেওয়ায় তাঁর আপত্তি। বরং ঢেলেছেন নতুন ছাঁচে।
পণ্ডিত সুবীর চক্রবর্তী এবং মনোজ মিশ্রর ভাবানুবাদের এই সঙ্কলনে আছে ‘মেঘ কহে থে অভি যাঁউ’, ‘অ্যায় নদী প্যারা লাগে জীবন তেরা’, ‘পিনাক সে আয়ে টঙ্কার’, ‘তেরি পুকার অগর কোই না সুনে’, ‘ও দিন হমে আজ ইয়াদ পড়ে’, ‘কিতনা হঁসি থা দিন ও পুরানা’, ‘আনন্দ আয়ে আনন্দ আয়ে’র মতো গান। যার প্রত্যেকটির মৌলিক গান বাংলা ভাষায় যথেষ্ট জনপ্রিয়।
খাঁটি মার্কেটিং পেশাদারের মতোই পুরো ব্যাপারটা ছকেছেন তিনি। “এখন আইপড বা মোবাইল ফোন বা অন্য ডিজিটাল আঙ্গিকের ভিড়ে, পুরনো টেপরেকর্ডার আর চলবে না। আমার টার্গেট ছিল সমসাময়িক হিন্দি বাণিজ্যিক ছবির গানের জায়গায় যদি কিছু দেওয়ার থাকে, তা হলে এটার মাধ্যমে একটা হদিশ দেওয়া যেতে পারে। এই গানগুলি নিয়ে আমি একটা স্যাম্পেল সার্ভেও করেছি। বাংলার বাইরে, মায় বিদেশেও গেয়েছি। প্রত্যেকেই খুব সাগ্রহে গ্রহণ করেছেন,” এমনই দাবি শান্তনুর। সময় বলবে তাঁর স্রোতের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা কী বয়ে আনে। সাফল্য, না প্রত্যাখ্যান?
Previous Item Patrika Next Item


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.