দুর্ঘটনা এড়াতে ১১ দফা নির্দেশ মুর্শিদাবাদে
দী ও খালে দুর্ঘটনা এড়াতে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন ফেরিঘাটে নৌকা চলাচলের উপরে ১১ দফা নির্দেশিকা জারি করল জেলা প্রশাসন। ১২ এপ্রিল হরিহরপাড়ার ভাণ্ডারদহ বিলে নৌকাডুবিতে ৫ জন স্কুল ফেরত ছাত্রছাত্রীর মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপেই সেই ঘটনা ঘটেছে বলে তখন দাবি করেছিল সব মহলই। সেই সঙ্গে দাবি করা হয়, ফেরি চলাচল নিয়ে সাধারণ নিয়মরীতিরও তোয়াক্কা করা হয় না। তারপরে জেলা প্রশাসন পুরো ঘটনার সমীক্ষা করে সম্প্রতি এই নির্দেশিকা জারি করেছে।
সরকারি নথিপত্রে মুর্শিদাবাদে প্রায় ১৮২টি ফেরিঘাট রয়েছে। তবে এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি ঘাটেই এখন আর যাত্রী পারাপার হয় না। তার কয়েকটিতে সেতু তৈরি হয়ে গিয়েছে। কোথাও নতুন রাস্তা তৈরি হয়েছে। কিংবা জলাশয় বুজেই গিয়েছে। কিন্তু বাকিগুলিতে এখনও ফেরি পারাপার করা হয় বিপজ্জনক ভাবে। সরকারি নথিতে বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতিতে ১০টি ফেরিঘাটের উল্লেখ থাকলেও আপাতত সে সব ঘাটের কোনও অস্তিত্ব নেই। ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের কৃষ্ণেন্দু রায় বলেন, “প্রায় সব ফেরিঘাটই এখন বন্ধ। কারণ সেতু ও রাস্তা হয়ে গিয়েছে। তবে যে সব ফেরিঘাট এখনও চালু, সেগুলিতে নজর থাকলে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।” জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি বলেন, “ভাণ্ডারদহ বিলে নৌকাডুবির ভিত্তিতে এমন কিছু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার যাতে যাত্রীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারেন।” তিনি জানান, এই সব ফেরিঘাটগুলি নিয়ন্ত্রণ করে মূলত স্থানীয় পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ বা পুরসভা। লিজের ভিত্তিতে এই ব্যাপারে ‘বেঙ্গল ফেরি আইন’ ১৮৮৫-কে অনুসরণ করেই এগুলি চলে। জেলাশাসক বলেন, “ওই আইনে কতকগুলি বিধি নিষেধের কথা নির্দিষ্ট করে বলা রয়েছে। সেই বিধি নিষেধগুলি ঠিক ভাবে মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য মহকুমাশাসক, বিডিও ও থানার ওসি’দের ঘনঘন ফেরিঘাটগুলি পরিদর্শনের জন্য বলা হয়েছে।” জেলায় চালু ফেরিঘাটগুলির মধ্যে সব থেকে বেশি ঘাটের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে জেলা পরিষদের হাতে। মূলত বনভূমির কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব এগুলি দেখাশোনা করা। কিন্তু নুরুল ইসলামের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে নতুন কর্মাধ্যক্ষ আর কেউ হননি। আপাতত এগুলি দেখাশোনা করেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ সিংহরায়। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে জেলা পরিষদে। সোমনাথবাবু বলেন, “জেলাশাসকের নির্দেশের কপি সংশ্লিষ্ট ইজারাদার ও পঞ্চায়েতগুলিকে পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে তা মেনে চলতে। নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারদের কাছেও। কারণ তাঁরাই এই ফেরিঘাটগুলো দেখাশোনা করেন।” জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান সিপিএমের মোজাহারুল ইসলাম বলেন, “ফেরিঘাট চালানোর ক্ষেত্রে পুরসভা নজরদারি রেখেছে। তবে সরকারি তরফে কেউ পর্যবেক্ষণ করলে তা তো যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ভাল। আমাদের আপত্তির কিছু নেই।” কিন্তু জেলা প্রশাসনের জারি করা বিধিনিষেধগুলো মানতে বাধ্য করা যাবে কী করে? সে প্রশ্ন কিন্তু এখনও রয়েছে যাত্রীদের। তাঁদের অনেকেই জানাচ্ছেন, বিধি নিষেধ যে আগে ছিল না, তা তো নয়। প্রশাসনের চোখও তো ছিল। কিন্তু তারপরেও অনেক ইজারাদারই নিয়মের তোয়াক্কা করত না। জেলাপ্রশাসনের সাম্প্রতিক নিষেধও শোনা হচ্ছে না।

ফেরিঘাটের বিধিনিষেধ
• পারাপারের নৌকাকে লম্বায় ৩৫০ বর্গফুট
ও প্রস্থে ১২ ফুটের বেশি হতে হবে।
• নৌকায় ওঠানামার জন্য ভাল ব্যবস্থা রাখতে হবে।
• নৌকায় লাইফ জ্যাকেট, আলো রাখতে হবে।
যাত্রী নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত কর্মী রাখতে হবে।
First Page Murshidabad Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.