দফতরে বদলির খাঁড়া ঝোলালেন বনমন্ত্রী
ন দফতরের বিভিন্ন অফিসে যে সমস্ত কর্মী এবং অফিসার দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন তাঁদের বদলি করা হবে। উত্তরবঙ্গেই শুরু হবে এই বদলির প্রক্রিয়া। তার পরে গোটা রাজ্যে তা কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন।
শুক্রবার দুপুরে জলপাইগুড়িতে এবং বিকেলে শিলিগুড়িতে বনকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। জলপাইগুড়িতে বৈঠকের পরে বনমন্ত্রী বলেন, “কোনও কোনও বনকর্মী অথবা অফিসার একই জায়গায় ১০-১২ বছর ধরে রয়েছেন। তাঁরা পূর্বতন শাসক দলের কাছের লোক বলে একই জায়গায় রেখে দেওয়া হয়েছিল। এসব আর বরদাস্ত করা হবে না। শীঘ্রই বদলির নির্দেশ জারি করা হবে।” এ দিনের বৈঠকে তিনি উত্তরবঙ্গের সমস্ত বন সুরক্ষা কমিটি ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। আগামী অগস্ট মাসে সেগুলি নতুন করে তৈরি করা হবে। ভেঙে দেওয়া হবে ওয়াইল্ড লাইফ অ্যাডভাইসরি কমিটি, ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডের মতো কমিটিও, যেখানে শাসক দলের ঘনিষ্ঠদেরই বসানো হত বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ।
শুক্রবার বনমন্ত্রীর ওই ঘোষণার পরেই উত্তরবঙ্গে বন প্রশাসনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। কারা বনমন্ত্রীর ‘কোপে’ পড়তে পারেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। রেঞ্জ অফিসার, বিট অফিসার তো বটেই, ডিএফও, সিএফ স্তরেও বেশ কয়েকজন অফিসার দীর্ঘদিন ধরে বন দফতরের একই ডিভিশনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বলে বনকর্মী মহলে ক্ষোভ রয়েছে। প্রতিটি জেলায় অরণ্য সপ্তাহ কমিটির সর্বোচ্চ পদে জেলা সভাধিপতিকে বসানোর এতদিনের প্রথাও তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে
ইঙ্গিত দিয়েছেন বনমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, অরণ্য সপ্তাহ কমিটির প্রধান পদে এ বার থেকে ডিএফও’রাই বসবেন। ট্রেনে কাটা পড়ে বুনো হাতির মৃত্যু ঠেকাতে ১৮ জুন আলিপুরদুয়ারে রেল ও বনকর্তারা বৈঠক করবেন বলে তিনি জানান।
বন সুরক্ষা কমিটি, ওয়াইল্ড লাইফ অ্যাডভাইসরি কমিটি, ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডের মতো সংস্থাগুলির কমিটি ভেঙে দেওয়ায় অবশ্য নতুনত্ব কিছু দেখছেন না বনকর্মীরা। রাজ্যে নয়া সরকার আসায় ওই সমস্ত কমিটি যে ভাঙা হবে তা অনেকেই আগাম আঁচ করেছিলেন। উত্তরবঙ্গে প্রায় শ’দুয়েক বন সুরক্ষা কমিটি রয়েছে। প্রতিটি বন সুরক্ষা কমিটি এখন যথেষ্ট ক্ষমতাবান। বন দফতরের আয়ের লভ্যাংশও ওই কমিটিকে দেওয়া হয়। বাম সরকারের আমলে শাসক দলের ঘনিষ্ঠরাই ওই কমিটিতে সুযোগ পেতেন বলে অভিযোগ ছিল। বনমন্ত্রী বলেন, “একমাত্র যোগ্যতা এবং প্রয়োজনীয়তাই হবে বন সুরক্ষা কমিটি গঠনের মাপকাঠি। জেলাভিত্তিক অরণ্য সপ্তাহ কমিটিতেও এ বার থেকে শীর্ষে থাকবেন ডিএফও’রা।”
বনমন্ত্রী এ দিনের বৈঠকে জানিয়ে দেন, ব্যক্তিগত কাজে আধিকারিকেরা সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না। উত্তরবঙ্গে বন্যপ্রাণীদের জন্য হাসপাতাল, একটি চিড়িয়াখানা তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে বলে তিনি জানান। বনমন্ত্রী বলেন, “দফতরের কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে নিজস্ব বোর্ড তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করার কাজও দ্রুত শুরু করা হবে।” এ দিন সকালে শহরের সমাজপাড়ায় জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে বনমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেন দলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী। জাতীয়তাবাদী বন কর্মীদের তরফে মন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নব্যেন্দু কর বলেন, “এতদিন বনে লুঠতরাজ চলেছে। আধিকারিকেরা দীর্ঘদিন ধরে একই পদে থেকে গিয়েছেন। অনেক দুর্নীতি হয়েছে। বনমন্ত্রীকে সবই জানিয়েছি।” জলপাইগুড়ি অরণ্য ভবনে তিনি মাসে এক দিন করে বসবেন বলেও জানিয়েছেন হিতেনবাবু।
First Page Jibjagat Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.