|
|
|
|
‘সন্ত্রাস’, নালিশ ফের সিপিএমের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
সিপিএমের জেতা তিন বিধানসভা এলাকাতেও হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল এই অভিযোগ তুলে শুক্রবার জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিলেন সিপিএমের তিন জোনাল কমিটির নেতারা। জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “আমরা ওঁদের ঘরছাড়াদের তালিকা জমা দিতে বলেছিলাম। তালিকা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।”
মুখ্যমন্ত্রী বার বারই তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকদের বলছেন, আইন হাতে তুলে না নিতে। কিন্তু সেই নির্দেশ যে যথাযথ ভাবে দলের নিচুতলার কর্মীরা পালন করছেন না, সেই অভিযোগই এ দিন করলেন সিপিএম নেতারা। সিপিএমের বর্ধমান সদর জোনাল কমিটি স্মারকলিপি দেয় অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) পূর্ণচন্দ্র শিটের কাছে। তাঁদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার তৃণমূলের লোকেরা দেওয়ানদিঘির সরাইটিকর পঞ্চায়েতে প্রধান ও কর্মীদের হেনস্থা করে। জোনাল অফিসে হামলাও চালায়।
তাঁদের আরও অভিযোগ, বর্ধমান উত্তর বিধানসভা এলাকায় তাঁদের ২১ জন কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া। তাঁদের কাছ থেকে জোর করে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। চলছে সিপিএম, সিটু-সহ বিভিন্ন সংগঠনের দফতরে তালা ঝোলানো, তৃণমূলের পতাকা ঝোলানো। গ্রামে সভা ডেকে গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সচিবদের জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে হিসাব চাওয়ার নাম করে বলপূর্বক লক্ষ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। ৮ জুন বর্ধমান উত্তরের মহকুমাশাসকের কাছে এই ঘটনার বিহিত চেয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও কোনও সুবিচার মেলেনি।
খণ্ডঘোষ ও রায়না জোনাল কমিটির নেতারা স্মারকলিপি দিয়েছেন বর্ধমানের মহকুমাশাসক (দক্ষিণ) মৃণালকান্তি রানোর কাছে। রায়না জোনাল কমিটির অভিযোগ, রায়না ১ ও ২ ব্লকের গ্রামে গ্রামে বিচারসভা বসানোর নাম করে সিপিএমের কর্মীদের সাদা কাগজে জোর করে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জরিমানা না দিতে পারলে ঘর ছাড়া করা হচ্ছে। সমবায়, স্কুল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত সদস্য ও কর্মীদের খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় ব্রাক্ষ্মণডাঙা, উচালন থেকে মাছখাণ্ডা, সেহারা, শ্যামসুন্দর ইত্যাদি জায়গায় দলের শ্রমিক সংগঠন বা গণসংগঠনের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। দলের ৪০ জন কর্মীর জরিমানা বাবদ ৭৫ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই আদায় করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁদের। স্থানীয় ৭২ জন ঘরছাড়া সিপিএম কর্মী-সমর্থকের নামের তালিকাও দিয়েছেন রায়নার নেতারা।
খণ্ডঘোষ জোনাল কমিটি পেশ করা স্মারকলিপিতে ভাঙচুর হওয়া বাড়ি, আগুন ধরিয়ে দেওয়া, জোর করে বন্ধ করে দেওয়া দলের বিভিন্ন অফিসের তালিকা দেওয়া হয়েছে। দলের সমর্থক যে সব চাষিদের চাষ করতে দেওয়া হচ্ছে না, বা ফসল জোর করে কেটে বা নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে তার তালিকাও দেওয়া হয়েছে। এ সব অভিযোগ অবশ্য মানতে চায়নি তৃণমূল। দলের বর্ধমান জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ বলেন, “আমরা পুলিশ-প্রশাসনকে বলে দিয়েছি, আমাদের দলের নাম করে কেউ যদি কোনও অন্যায় করেন, তাঁর বিরুদ্ধে যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমার মনে হয়, অভিযোগকারীরা পুলিশের কাছে যাচ্ছেন না। অকারণ মিথ্যে ঘটনা নিয়ে সাজানো অভিযোগ করছেন।” |
|
|
|
|
|