গুলি-বোমায় জখম সাত
মালদহে এলাকা দখল নিয়ে কংগ্রেস-সিপিএম সংঘর্ষ
লাকা দখলকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কালিয়াচকের বামনগ্রামের লালবাজার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কংগ্রেস ও সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দু’পক্ষের মধ্যে বোমা, গুলির সংঘর্ষে ৭ জন জখম হয়েছে। পুলিশ ও র্যাফের সামনেই দু’পক্ষের লোকেরা একে অপরকে লক্ষ্য করে যথেচ্ছ বোমা,গুলি ছুঁড়লেও পুলিশ একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ডিএসপি সৌকত ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজনৈতিক সংঘর্ষ না হলেও এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে দু’দলের আশ্রিত সমাজবিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৭ জন জখম হয়েছে। এলাকায় দু’টি পুলিশ ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও আজ ভোরে দু’দলের সমাজবিরোধীরা যেভাবে সংঘর্ষ শুরু করেছিল। তাতে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত। পুলিশ সময়মতো পৌঁছে পরিস্থিতির সামাল দিয়েছে। ফের যাতে গন্ডগোল না বাঁধে এলাকায় পুলিশ ক্যাম্পের পাশাপাশি পুলিশ টহল শুরু করা হয়েছে।”
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বামনগ্রাম-মোমিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লালবাজার ও ছাড়কাপাড়ার বিরোধ দীর্ঘদিনের। লালবাজারে এলাকা সিপিএমের দখলে। ছাড়কাপাড়া কংগ্রেসের দখলে। সুজাপুর কিংবা কালিয়াচক যেতে হলে ছাড়কাপাড়ার বাসিন্দাদের লালবাজার হয়ে যেতে হয়। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ছাড়কাপাড়ায় হামলা করে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এক কংগ্রেস নেতাকে না পেয়ে তাঁর বৌদি রাবেকা বিবিকে গুলি করে খুন করে। এরপর থেকে ছাড়কাপাড়া ও লালবাজার এলাকার মধ্যে রেষারেষি চরম পর্যায় পৌঁছায়। এরপর থেকে ছাড়কাপাড়ার কেউ  লালবাজার আসত না। আবার লালবাজারের কেউ ছাড়কাপাড়ায় ঢুকত না। পরিস্থিতি যে কোনও মূহুর্তে বিগড়ে যেতে পারে-এই আশঙ্কায় জেলা পুলিশ কংগ্রেস নেতার বৌদি খুনের পর দুই এলাকায় দু’টি পুলিশ ক্যাম্প বসিয়ে দেয়। এত দিন ছাড়কাপাড়ার কংগ্রেস সমর্থকরা লালবাজারে যাওয়ার সাহস না পেলেও রাজ্যে পরিবর্তন ঘটতেই বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় ছাড়কাপাড়ার কয়েক জন চা খেতে লালবাজার এলাকায় গিয়েছিল। ছাড়কাপাড়ার লোক থেকে লালবাজারের সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাদের বেধড়ক মারধর করে। মারধর খেয়ে গ্রামে ফিরে আসার পর ছাড়কাপাড়ার শতাধিক কংগ্রেস সমর্থক বোমা, হাঁসুয়া, লাঠি, শাবল নিয়ে লালবাজারে হামলা করে। পাল্টা লালবাজারের সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাও বোমা, গুলি ছুঁড়ে পাল্টা হামলা শুরু করে। দু’পক্ষের হামলা ও পাল্টা হামলায় লালবাজার ও ছাড়কাপাড়া নিমেষের মধ্যে রণক্ষেত্রে চেহারা নেয়। লালবাজারের হামলায় ছাড়কাপাড়ার মহম্মদ মোমিন, জিয়াউল, নুরুল শেখ ও ছাড়কাপাড়ার হামলায় লালবাজারের আবদুল আলিম, আরসাদ মোমিন, জামসেদ শেখ বোমা ও হাঁসুয়ার আঘাতে জখম হয়ে মালদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি। সিপিএম জেলা সম্পাদক জীবন মৈত্র বলেন, “ছাড়কাপাড়ার দুষ্কৃতীরা আজ সকালে দলবল নিয়ে লালবাজারে আমাদের সমর্থকদের উপর প্রথমে হামলা চালিয়েছে। ছাড়কাপাড়ায় দুষ্কৃতীরা এলাকা দখল করতে চাইছে। আর সেইজন্য লালবাজারে এলাকা ছাড়কাপাড়ার ওই দুষ্কৃতীরা আজ সকাল থেকে বোমাবাজি ও গুলি ছুঁড়তে থাকে। ছাড়কাপাড়াপাড়ার যারা আজকে হামলা চালিয়েছে তারা এলাকায় পরিচিত সমাজবিরোধী। যারা হামলা চালিয়েছে তাদের রাজনৈতিক পরিচিতির চেয়ে তারা এলাকার নামকরা দুষ্কৃতী।”
জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রিয় সাহা বলেন, “ভোটে বিপর্যস্ত হওয়ার পরেও সিপিএম তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিয়ে এলাকা দখলে রাখার চেষ্টা করছে। ছাড়কাপাড়ায় আমাদের দলের যারা এতদিন লালবাজারে যেতে ভয় পেত তারা আজকে লালবাজারে যেতেই সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় আমাদের ৪ জন সমর্থক জখম হয়েছে। পুলিশ যদি এখনও লালবাজার এলাকা থেকে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের না ধরে তবে কংগ্রেস আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।” অন্য দিকে, বুধবার রাতে বিজয় মিছিলকে কেন্দ্র করে গাজলের দেওতলায় কংগ্রেস ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। উভয় পক্ষের ১০ জন জখম হয়েছেন। জখমদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষের পরে দু’দলের নেতারা পৌঁছে গণ্ডগোল মিটমাট করে নিয়েছে বলে কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতারা জানান।
First Page Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.